সংক্ষিপ্ত
প্রায় সাড়ে তিন দশকের রীতি ভেঙে উত্তরপ্রদেশে টানা দ্বিতীয়বারের জন্য সরকার গঠন করতে চলেছে বিজেপি। গতবারের তুলনায় এই রাজ্যে বিজেপির আসন সংখ্যা অনেকটা কমলেও কোনও কড়া চ্যালেঞ্জ ছাড়াই এই রাজ্য নিজেদের দখলে রাখতে সক্ষম হয়েছে গেরুয়া শিবির।
উত্তরপ্রদেশ-সহ (Uttar Pradesh Assembly Election 2022) পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের (Assembly Polls 2022) ফলাফল প্রকাশ হয়েছে বৃহস্পতিবার। আর সেখানে পাঁচ রাজ্যের মধ্যে চার রাজ্যই জয় করে নিয়েছে বিজেপি (BJP)। তবে ভোটের ফল যাই হোক না কেন বিজেপি বিরোধী জোট গঠনের কাজ থমকে থাকবে না। শুক্রবার এমনই বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাঁর কথায়, বিরোধী শক্তি হিসেবে কংগ্রেস (Congress) অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গিয়েছে। তাই সব আঞ্চলিক দলগুলিকে নিয়ে জোট গঠনের কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সেরকম হলে অন্য কেউ সব রাজনৈতিক দলগুলিকে এক ছাতার তলায় নিয়ে আসার কাজ শুরু করুক। তৃণমূল নেত্রী হিসেবে যেটুকু সমর্থন করার তা তিনি করবেন।
প্রায় সাড়ে তিন দশকের রীতি ভেঙে উত্তরপ্রদেশে টানা দ্বিতীয়বারের জন্য সরকার গঠন করতে চলেছে বিজেপি। গতবারের তুলনায় এই রাজ্যে বিজেপির আসন সংখ্যা অনেকটা কমলেও কোনও কড়া চ্যালেঞ্জ ছাড়াই এই রাজ্য নিজেদের দখলে রাখতে সক্ষম হয়েছে গেরুয়া শিবির। এই জয় নিয়ে এবার মুখ খুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মতে, এই ফলাফল আগামী লোকসভায় (LOk Sabha) প্রতিফলিত হবে না। উল্লেখ্য, ভারতীয় রাজনীতিতে (Indian Politics) প্রচলিত একটি কথা রয়েছে, দিল্লি দখলের পথ উত্তরপ্রদেশ হয়ে যায়। তবে এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির উত্তরপ্রদেশ জয়কে সেই অর্থে পাত্তা দিতে নারাজ।
আরও পড়ুন- গুজরাটে বর্ণাঢ্য রোড শেষ করে মায়ের সঙ্গে একান্তে মোদী, খাওয়া-দাওয়া সারলেন বাড়িতেই
মমতার অভিযোগ, "এই রায় মানুষের রায় নয়। উত্তরপ্রদেশ-সহ চার রাজ্যে কারচুপি করে ভোটে জিতেছে বিজেপি। উত্তরপ্রদেশে ইভিএম লুঠের মত ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরেও কেন ফরেনসিক পরীক্ষা করা হল না আমার জানা নেই। অখিলেশকে ওখানে জোর করে হারানো হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনের ফলাফল মানুষের রায় নয়। কারচুপির পক্ষে রায় দিয়েছে।" উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে কোনও প্রার্থী না দিলেও সমাজবাদী পার্টিকে সমর্থন করেছিলেন মমতা। এমনকী, অখিলেশের হয়ে প্রচার করতেও দেখা গিয়েছিল তাঁকে। বেশ কয়েকবার উত্তরপ্রদেশে গিয়েছিলেন তিনি। অবশ্য এই পরিস্থিতিতে অখিলেশের ভোট বেড়েছে বলে জানিয়েছেন মমতা। তিনি বলেন, "অখিলেশ যাদবের দুঃখ পাওয়া উচিত না। আগেরবার অখিলেশের ভোটের হার ২০ শতাংশ ছিল। তা এবার বেড়ে ৩৭ শতাংশ হয়েছে।"
প্রকাশ্যে সুর চড়ালেও দিল্লি থেকে এই মুহূর্তে বিজেপিকে উৎখাত করা সম্ভব নয়, এটা বোঝার পরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের পর থেকে দুটি কাজ শুরু করেছেন। একটি, ভিন রাজ্যে তৃণমূলের শক্তি বৃদ্ধি আর দুই, বিজেপি বিরোধী শক্তিকে একজোট করা। আর তার জন্যই উত্তরপ্রদেশের সমাজবাদী পার্টি, মহারাষ্ট্রের ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি এবং তামিলনাড়ুর ডিএমকের সঙ্গে হাত মেলান তিনি। কিন্তু, এই সব দলেরই নিজের রাজ্য ছাড়া ভিন রাজ্যে জমি একেবারেই নড়বড়ে। তাই মমতা চাইছেন আরও বেশি সংখ্যায় বিজেপি বিরোধী শক্তিকে জোটের আওতায় নিয়ে আসার। তিনি কংগ্রেসকেও জোটে নিতে আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বিষয় নিয়েই কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব তৈরি হয়। যে কারণে কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে জোট গঠনের ডাক দিয়েছিলেন মমতা। তবে কংগ্রেসকে ছাড়া জোট খুব একটা সফল হবে না বলেই তাঁর অনুমান। তাই এখন তিনি চান, অন্য দলগুলিও বিজেপি বিরোধী জোট গঠনে অগ্রণী ভূমিকা নিক। লোকসভা ভোটে দিল্লি থেকে বিজেপিকে উৎখাত করে দেওয়ার জন্য সেই কারণে কংগ্রেসকে পাশে চান বলে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন- যোগী ঝড়ে ধরাশায়ী অখিলেশ-মায়াবতী, উত্তরপ্রদেশে সর্ব বৃহৎ দল হিসাবে ফের আত্মপ্রকাশ বিজেপির
এ প্রসঙ্গে মমতা বলেন, "কংগ্রেস চাইলে আমরা সবাই একসঙ্গে লড়তে পারি (২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন)। আপাতত আক্রমনাত্মক হবেন না, ইতিবাচক হোন। এই জয় (৪টি রাজ্যে বিধানসভা ভোট) বিজেপির জন্য বড় ক্ষতি হবে। এটি (২০২২ নির্বাচনের ফলাফল ২০২৪ সালের নির্বাচনের ভাগ্য নির্ধারণ করবে) অবাস্তব।"