সংক্ষিপ্ত

  • নিজের ছেলের সঙ্গে পাশের বাড়ির মেয়ের সম্পর্ক ছিল
  • যা মেনে নিতে পারেনি বাগনানের সুশ্মিতা মণ্ডল
  • তাই প্রতিবেশী মেয়েকে বাড়িতে ডেকে এনে খুন করে মহিলা
  • বৃহস্পতিবার বিচারক ওই মহিলাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন

পাশের বাড়ির কিশোরীর প্রেমে পড়েছে নাবালক ছেলে মা সুস্মিতা মণ্ডল তা  মেনে নিতে পারেনি তাই ওই কিশোরীকে ভুলিয়ে ভালিয়ে বাড়িতে ডেকে এনে খুন করতেও পিছ-পা হয়নি সে দু-বছর পর সেই মামলার রায় বেরলোমহিলাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিলেন উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক রতন কুমার দাস

বছরদুয়েক আগে বাগনানের বুকে সেই খুন রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছিলঅভিযুক্ত সুস্মিতার ফাঁসির দাবিতে সরব হয়েছিলেন স্থানীয়রা ঘটনার পরই ছেলেকে নিয়ে স্বামী মহীতোষ মণ্ডলের কাছে এলাহাবাদে চলে যায় সুস্মিতা। এরপর মহীতোষ ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে চেন্নাইতে গিয়ে গা-ঢাকা দেয়।  পরে পুলিশ চেন্নাই থেকেই গ্রেফতার করে স্বামী, স্ত্রী ও নাবালক ছেলেকে

কী ঘটেছিল?

নিহত ঈশিতার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল সুশ্মিতার ছেলেরদুজনেই নাবালকএই সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি সুস্মিতাযদিও এমন কোনও সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেছেন নিহতের মা মিঠু  ২০১৮ সালের ২৫ জুলাই বিকেলে ঈশিতাকে তাদের বাড়িতে ডেকে আনে সুস্মিতা।  সেই সময়ে ঈশিতার টিউশন পড়তে যাওয়ার কথা ছিলএদিকে সন্ধের পরেও মেয়ে ফিরে আসছে না দেখে ঈশিতার বাড়ির লোক খোঁজখবর করতে বেরোনজানা যায়, সুস্মিতার সঙ্গেই ঈশিতাকে শেষবার দেখা গিয়েছিল।  স্থানীয়দের কাছে এই খবর পেয়ে সুস্মিতার বাড়িতে ছুটে যান ঈশিতার মাকিন্তু দেখা যায় বাইরে থেকে দরজায় তালাবন্ধতখন থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন মিঠুদেবীএদিকে পরের দিন সুস্মিতার তালাবন্ধ বাড়ি থেকেই উঁকি মারে একটি মেয়ের পাতাই দেখে পাড়ার লোকেরা পুলিশে খবর দেনপুলিশ এসে ঈশিতার বস্তাবন্দি দেহ উদ্ধার করে।  ওই সময়ে ঈশিতার মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিলবস্তা দিয়ে ওর মুখ ঢাকা ছিল আর নাইলনের দড়ি দিয়ে বাঁধা ছিল পাপুলিশ চার্জশিটে জানায়, সম্পর্কের মধ্য়ে টানাপোড়েনের কারণেই এই খুন

এদিকে পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে চেন্নাই থেকে গ্রেফতার করে সুস্মিতা, তার স্বামী মহীতোষ ও তাদের নাবালক ছেলেকে ওই নাবালকের বিচার চলে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে আর সুস্মিতা ও তার স্বামীর বিচার চলে মহকুমা আদালতে বলতে গেলে, দেড়বছরের মাথায় বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হয়মোট ১৭ জনের সাক্ষ্য় নেওয়া হয় মহকুমা আদালতের বিচারক দুজনকে দোষী সাব্য়স্ত করেন বৃহস্পতিবার সাজা ঘোষণা করেন প্রমাণ লোপাটের জন্য় মহীতোষকে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয় আর সুস্মিতার হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

যদিও রায়ে খুশি হতে পারেননি ঈশিতার মা মিঠুদেবী রায় শোনার পর ঝরঝর করে কেঁদে ফেলেন তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, "আমরা কিন্তু ফাঁসি চেয়েছিলাম"