সংক্ষিপ্ত
- ড্রাই আই হল চোখের একটি রোগ
- এই রোগের উপসর্গ হল ঝাপসা দেখা
- চোখ কড়কড় করে এই রোগে, লাল হয়
- দিনে ২ থেকে ৩ বার পরিষ্কার জলে চোখ ধুতে হবে
চোখের জলও কিন্তু শুকিয়ে যায়। যাকে ডাক্তারি পরিভাষায় বলা হয় ড্রাই আই। বলা হয়, এটি একটি অসুখ নয়, বরং একটি সিম্পটম কমপ্লেক্স যা কিনা টিয়ার ফ্লিমের নানান সমস্যায় দেখা দেয়।
তাহলে এই টিয়ার ফিল্ম ব্য়াপারটা কী, তা একবার জেনে নেওয়া যাক। আমাদের কর্নিয়াকে ভেজা রাখতে হয় সব সময়ে, নইলে তা আর কাজ করতে পারে না। তাই কর্নিয়ার ওপর একটা জলীয় স্তর থাকে। এই স্তরকেই বলা হয় প্রি-কর্নিয়াল ফিল্ম বা টিয়ার ফ্লিম। এর তিনটে স্তর থাকে, মিউসিন লেয়ার, অ্য়াকোয়াস লেয়ার, লিপিড বা তৈলাক্ত লেয়ার। এই তিনটে স্তরের যে কোনও একটা বিগড়ে বসলেই ড্রাই আইয়ের সমস্য়া হয়।
বলে রাখা ভাল, এই টিয়ার ফিল্ম কর্নিয়া বা কনজাংটাইভাকে ভেজা রাখে। কর্নিয়াকে অক্সিজেন জোগায়। এমনকি ধুলোময়লা থেকেও কর্নিয়াকে বাঁচায়। চোখের পাতা যাতে চোখের ওপর সুন্দরভাবে নড়াচড়া করতে পারে, তাতে সাহায্য় করে এই টিয়ার ফিল্ম।
নানা কারণে ড্রাই আই হতে পারে। যেমন অ্য়াকোয়াস টিয়ার ডেফিসিয়েন্সি। যাকে কেরাটো কনজাংটিভাইটিস সিক্কা বা জেগরেনস সিনড্রোম বলা হয়। ভিটামিন-এ-র অভাবে যখন গবলেট সেল যখন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন দেখা দিতে পারে এই ড্রাই আই। এছাড়া স্টিভেনস জনসন সিনড্রোম, ট্র্য়াকোমা, অকুলার পেমফিগয়েড, চোখে অ্য়াসিড বা ক্ষার ঢুকে যাওয়ার সমস্য়াতেও দেখা দিতে পারে এই সমস্যা।
সহজ করে বলতে গেলে বিশেষ কিছু কারণে ড্রাই আই বেশি করে হতে পারে। যেমন আগেই বলা হয়েছে, স্টিভেন জনসন সিনড্রোম। এরসঙ্গে রয়েছে, কমপিউটার ভিশন সিনড্রোম। এই রোগের উপসর্গ হল, চোখে ক্লান্তিভাব, ঝাপসা দেখা, বিশেষ করে বই পড়া, টিভি দেখা বা গাড়ি চালানোর সময়ে। মাথা বা চোখ ব্যথা। চোখ শুকিয়ে গিয়েছে বলে মনে হওয়া, চোখ কড়কড় করা, অস্বস্তি বা লাল হওয়া। একটানা সারাদিন কম্পিউটারে কাজ করার পর হঠাৎ করে বিকেলের দিকে, সেভাবে কোনও কারণ ছাড়াই রেগে যাওয়াও ড্রাই আইয়ের উপসর্গ হতে পারে।
চিকিৎসা বলতে প্রথমেই দিনে তিন থেকে চারবার পরিষ্কার জল দিয়ে চোখ ধোওয়ার কথা বলতে হয়। প্রচুর পরিমাণে জল খেতে হয়। ধুলো-ধোঁয়া , দূষণ বা আল্টা ভায়োলেট রশ্মির হাত থেকে চোখকে বাঁচিয়ে রাখলে, এই সমস্য়া থেকে দূরে থাকা সম্ভব। বলাই বাহুল্য, সমস্য়া বাড়তে থাকলে ডাক্তারের কাছে গিয়ে চোখ পরীক্ষা করানো দরকার।