Reasons of Anemia: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে, সারা বিশ্বের প্রায় ২০০ কোটি মানুষ রক্তাল্পতায় ভুগছেন। সারা বিশ্বের মানুষ যে রোগগুলিতে সবচেয়ে বেশি ভোগেন, সেগুলির অন্যতম হল রক্তাল্পতা।
Cause, symptoms and treatment of Anemia: রক্তাল্পতা এমন একটি শারীরিক অবস্থা, যেখানে রক্তে হিমোগ্লোবিন বা লোহিত রক্তকণিকার ঘাটতি দেখা যায়। হিমোগ্লোবিনের মূল কাজ হল ফুসফুস থেকে শরীরের প্রতিটি কোষে অক্সিজেন পৌঁছে দেওয়া। ফলে অ্যানিমিয়ায় আক্রান্ত হলে শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ কমে যায় এবং দেখা দেয় দুর্বলতা, ক্লান্তি, মাথা ঘোরা বা শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা। এই লক্ষণগুলি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মহিলাদের মধ্যে দেখা যায়। গাধাড়া কমিউনিটি সেন্টারের প্রধান নার্স জানিয়েছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে, সারা বিশ্বের প্রায় ২০০ কোটি মানুষ রক্তাল্পতায় ভুগছেন। যা এটিকে সবচেয়ে সাধারণ পুষ্টিজনিত ব্যাধিতে পরিণত করেছে। শরীরে আয়রন, ফোলেট এবং ভিটামিন বি-১২-এর অভাবের কারণে লোহিত রক্তকণিকার পরিমাণের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায়। যা রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়ার কারণ হয়ে ওঠে।
রক্তাল্পতা অনেক ধরনের হতে পারে। তার মধ্যে প্রধান কয়েকটি হল-
- আয়রনের ঘাটতিজনিত অ্যানিমিয়া - শরীরে আয়রনের ঘাটতির কারণে ঘটে
- ভিটামিন-সংকটজনিত অ্যানিমিয়া - বিশেষ করে ভিটামিন বি-১২ বা ফোলেটের ঘাটতির জন্য
- অ্যাপ্লাস্টিক অ্যানিমিয়া - হাড়ের মজ্জা পর্যাপ্ত রক্তকণিকা তৈরি না করলে
- সিকেল সেল অ্যানিমিয়া - জিনগত কারণে লোহিত রক্তকণিকার আকার পরিবর্তিত হয়
রক্তাল্পতার উপসর্গসমূহ
- অতিরিক্ত ক্লান্তি বা দুর্বলতা
- শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া
- মাথা ঘোরা বা মাথাব্যথা
- হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া
- ত্বক ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া
- ঠান্ডা হাত ও পা
- মনোযোগ কমে যাওয়া
অ্যানিমিয়া রোগের চিকিৎসা কীভাবে করা হয়?
রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়ার চিকিৎসা এই রোগের কারণের উপর নির্ভর করে। তার ওপর ভিত্তি করেই নির্ণয় করা হয় কী ধরনের অ্যানিমিয়া হয়েছে। এছাড়াও একজন ডাক্তার রোগীর পারিবারিক ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখেন। সেই সঙ্গে বেশ কিছু শারীরিক পরীক্ষা করারও পরামর্শ দেন। যেমন- সিবিসি পরীক্ষা। এই পরীক্ষার মাধ্যমে রক্তের মধ্যে থাকা লোহিত রক্তকণিকা, হেমাটোক্রিট এবং হিমোগ্লোবিনের মাত্রা নির্ণয় করা হয়। পুরুষদের ক্ষেত্রে গড় হেমাটোক্রিটের মান ৪০ শতাংশ থেকে ৫২ শতাংশের মধ্যে এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে এর মান ৩৫ শতাংশ থেকে ৪৭ শতাংশের মধ্যে। সুতরাং পুরুষ বা মহিলার ক্ষেত্রে এই মান কম হয়ে যাওয়া অ্যানিমিয়ার লক্ষণ। এছাড়াও লোহিত রক্ত কণিকার আকার এবং আকৃতি পরীক্ষা করে দেখা হয়। অ্যানিমিয়ার কারণ হিসেবে যদি দেখা যায় দেহে আয়রনের অভাব, তাহলে ডাক্তাররা ওই রোগীকে আয়রন এবং ভিটামিন-সি সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার পরামর্শ দেন। সেই সঙ্গে এমন প্রাকৃতিক খাদ্য গ্রহণ করার কথা বলেন, যা থেকে দেহে ভিটামিন সরবরাহ হয়। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় অ্যানিমিয়ায় রক্তক্ষরণ হয় রোগীর। এক্ষেত্রে রক্তক্ষরণের উৎস খুঁজে বার করে তা বন্ধ করা দরকার। অস্ত্রোপচারেরও প্রয়োজন হতে পারে। অ্যানিমিয়ার কারণ হিসেবে রোগীর মধ্যে ভিটামিনের অভাবজনিত রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়া থাকে। তাহলে তাঁদের ভিটামিন বি১২ এবং ফলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার বা সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার পরামর্শ দেন ডাক্তাররা। যদি ভিটামিন বি১২ শোষণের সমস্যার কারণে এই রোগ দেখা দেয়, তাহলে ভিটামিন বি১২ ইঞ্জেকশন দিতে হয়।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।


