বিশ্বের সবচেয়ে সস্তা ফল কলা। সস্তা, সহজলভ্য বলে অন্যান্য দামী বিলাসী ফলের সাথে তুলনা করে হেয় করবেন না। ভারতের অর্থনীতি, ধর্মীয় শাস্ত্র ও পুষ্টির সম্ভার হিসেবে কলার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অসংখ্য ফল উৎপাদিত হয়, সব ফল তাদের সহজলভ্যতা দাম ও পুষ্টিগুণের কারণে বিশেষ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তাদের মধ্যে কলা এমনই একটি ফল, যা পৃথিবীর প্রায় সব অঞ্চলে চাষ হয় এবং অত্যন্ত সস্তায় পাওয়া যায়। শিশু থেকে বৃদ্ধ, গরিব বা বড়লোক সকলেই কিনে খেতে পারেন সাধ্যের মধ্যে। এমনকি যেকোনো সমযয়ে, যেকোনো ভাবেই খাওয়া যায়। এটি শুধু খাদ্য নয়, বরং পুষ্টি, স্বাস্থ্য, ধর্মীয় কার্যকলাপ ও অর্থনৈতিক দিক থেকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

কলা এমন একটি ফল যা খুব অল্প খরচে এবং কম পরিশ্রমে চাষ করা যায়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এটি সহজে পাওয়া গেলেও, ভারতে এর উৎপাদন সবচেয়ে বেশি হয়। বিশেষ করে বিহার, অন্ধ্রপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক এবং উত্তরপ্রদেশে কলার চাষ ব্যাপকভাবে হয়। বর্তমানে ভারতে প্রায় ৯২৪.১৪ হেক্টর জমিতে কলা চাষ হয়, যার ফলন প্রায় ৩৩,৬১০০০ টন।

পুষ্টিগুণ

পুষ্টিগুণের সমৃদ্ধ কলা খাওয়ার অসংখ্য উপকারিতা রয়েছে। এটি শক্তির আধার। এতে ভিটামিন A, B6, C, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন এবং ডায়েটারি ফাইবার রয়েছে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে দুটি কলা খেলে হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং রক্তচাপ স্থিতিশীল হয়। এটি হার্টের জন্য উপকারী এবং ওজন বৃদ্ধিতেও সহায়ক। খুচরো খিদে বা বার বার খাওয়ার অভ্যাস থাকলে স্ন্যাক্স হিসেবে কলা খেতে পারেন। অস্বাস্থ্যকর ওজন বৃদ্ধি হবে না। বসা বা শোয়া থেকে উঠে দাঁড়ালে মাথা ঘোরার সমস্যা থাকলে, নিয়মিত কলা খেলে তা কমে যায়।

জ্যোতিষশাস্ত্রীয় তাৎপর্য

জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, কলাকে সম্পদের প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। ভারতীয় সংস্কৃতিতে কলা গাছ ও ফল উভয়ই পবিত্র বিবেচিত। যে কোনও শুভ কাজ বা পূজায় কলা অপরিহার্য। বিশেষত, হলুদ কলা ঈশ্বরকে নৈবেদ্য হিসেবে নিবেদন করা হয়। অনেক সময় কলা গাছকে পূজাস্থলের পাশে, বিয়ের মণ্ডপে, দ্বার ঘটের সাথে পুজোর ঘরের দরজায় কলা গাছ রাখা হয়, কারণ এটি শান্তি ও সমৃদ্ধির প্রতীক।