সংক্ষিপ্ত

চুল দান বা হেয়ার ডোনেশন করলে কারোর জীবন হয়তো বাঁচানো যাবে না, কিন্তু তাজা করা যাবে সেই মরণাপন্ন রোগীর মনকে, বেঁচে থাকার যে কটা দিন হাতে থাকে, সেকটা দিন আরও একটু সতেজ থাকার অক্সিজেন মেলে।

ক্যানসার আক্রান্ত রোগীদের অন্যতম প্রধান চিকিৎসা কেমোথেরাপি। এই কেমোথেরাপি নেওয়ার জন্য রোগীদের চুল হারাতে হয়। ফলে মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন অনেকেই। হঠাৎ করে মাথার চুল পড়তে দেখে, আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন। অন্যদিকে, ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য বিপুল খরচ যোগানোর পর, পরচুলা অর্থাৎ হেয়ার উইগ কেনার সামর্থ্য অনেকেরই থাকে না। সেই সময় কাজে আসে হেয়ার ডোনেশন বা চুল দান।

হেয়ার ডোনেশন এক ধরণের পরিষেবা। মরাণপন্ন রোগীদের মুখে হাসি ফোটাতে এই হেয়ার ডোনেশন যেন আশীর্বাদ। এর থেকে অনেক ধরনের অনুদান পাওয়া যায়। অনেকেই হয়ত জানেন না আপনার কাটা চুল আপনিও দান করতে পারেন। যাই হোক, এটিরও একটি উপায় আছে। যার মতে চুল দান করে আপনি ক্যান্সার রোগীর জীবনে আশার আলো জাগাতে পারেন। মুম্বইতে, মিকি আমোঘ ফাউন্ডেশন এবং ডিপ ড্রিম চ্যারিটেবল ট্রাস্টের মত দেশের অসংখ্য সংস্থা চুল দান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। যেখানে চুল দানের শর্ত সহ বিনামূল্যে চুল কাটার অফার থাকে।

এটি ক্যান্সার আক্রান্তদের জন্য উপকারী হবে

আপনি যদি এই বা এই জাতীয় কোনও চুল দান শিবিরে চুল দান করেন তবে এটি ক্যান্সার আক্রান্তদের জীবনকে উন্নত করতে পারে। ক্যান্সার রোগীদের জন্য এই চুল থেকে বিশেষ উইগ তৈরি করা হয়। বেশিরভাগ লোকই জানেন যে ক্যান্সারের চিকিত্সার ফলে আক্রান্তদের চুল পড়ে যায়। অনেক ক্যান্সার রোগীও তাদের চেহারা দেখে বিষণ্ণ থাকেন। এই ধরনের মানুষকে বিষণ্ণতা থেকে বাঁচাতে চুল দান করা হয়। বেশিরভাগ সংস্থা ক্যান্সার রোগীদের বিনামূল্যে এই চুলের তৈরি উইগ সরবরাহ করে।

কিভাবে চুল দান করবেন?

এই মহৎ উদ্দেশ্যে চুল দান করার কিছু শর্তও রয়েছে। যারা চুল দান করতে চান, তাদের দান করা চুলের দৈর্ঘ্য কমপক্ষে দশ ইঞ্চি হতে হবে।

চুল এমন হওয়া উচিত যাতে এর উপর কোন কঠোর রাসায়নিক চিকিত্সা করা না হয়। এছাড়াও দান করা চুলে যেন bleach না করা হয়ে থাকে। এমনকি অতিরিক্ত ধূসর চুলের লোকেরাও চুল দান করতে পারে না।

কোনও প্রতিষ্ঠানে কুরিয়ার করে চুল পাঠাতে চাইলে এয়ার টাইট পলিথিনে পাঠান। রাবার লাগানোর পর ধারালো কাঁচি দিয়ে কেটে নিতে হবে। আলগা বা বিক্ষিপ্ত চুল বা টুফ্ট দান করা যাবে না। এই শর্ত বা নিয়মগুলো মানলেই দান করা যাবে নিজের চুল। চুল দান বা হেয়ার ডোনেশন করলে কারোর জীবন হয়তো বাঁচানো যাবে না, কিন্তু তাজা করা যাবে সেই মরণাপন্ন রোগীর মনকে, বেঁচে থাকার যে কটা দিন হাতে থাকে, সেকটা দিন আরও একটু সতেজ থাকার অক্সিজেন মেলে। তাই রক্ত দানের মত হেয়ার ডোনেশন বা চুল দানও মহৎ দান।