শীতে ঠান্ডা লেগে নাক বন্ধ হওয়ার প্রবণতা থাকে অনেকেরই। নাসাপথে জমে থাকে মিউকাস, শ্লেষ্মা এবং শক্ত হয়ে যাওয়া সর্দি। সহজ উপায়ে নাকের পথ খুলে নিন
শীতের মরসুমে ঘন ঘন ঠান্ডা লাগা আর সর্দি হওয়ার প্রবণতা বাড়ে। নাকের পথে জমে যায় মিউকাস, শ্লেষ্মা এবং শক্ত হয়ে যাওয়া সর্দি। বন্ধ নাক খোলার জন্য অনেকেই নাক খুঁটতে থাকেন অথবা নাক ঝা়ড়তে থাকেন। তাতে উল্টে নাসাপথ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ঠান্ডা লাগলে নাক বন্ধ হয়ে গেলে স্টিম নেওয়া, নুন-গরম জল দিয়ে নাসাল ইরিগেশন, পর্যাপ্ত জল পান, গরম পানীয়, এবং উষ্ণ সেঁক (warm compress) খুবই কার্যকর ঘরোয়া টোটকা। যা বন্ধ নাক দ্রুত খুলতে সাহায্য করে। এটি শ্লেষ্মা পাতলা করে ও নাসাপথ পরিষ্কার রাখে।তবে অত্যাধিক নাকের ড্রপ ব্যবহার এড়িয়ে যাওয়া উচিত এবং সমস্যা বেশি হলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
বদ্ধ নাসাপথ খোলার ঘরোয়া টোটকা:
১. স্টিম ইনহেলেশন (বাষ্প নেওয়া):
• একটি পাত্রে গরম জল নিয়ে তার ওপর ঝুঁকে তোয়ালে দিয়ে মাথা ঢেকে বাষ্প টানুন। এটি শ্লেষ্মা নরম করে ও বেরিয়ে আসতে সাহায্য করে। ফুটন্ত জলে কয়েক ফোঁটা পেপারমিন্ট বা ইউক্যালিপটাস তেলও দিতে পারেন।
২. নাসাল ইরিগেশন (নাক ধোয়া):
• দু'কাপ ফোটানো ও ঠান্ডা করা জলে ১ চামচ নন-আয়োডাইজড লবণ মিশিয়ে স্যালাইন সলিউশন তৈরি করুন। একটি নেটি পট (Neti Pot) বা সিরিঞ্জ (ড্রপার ছাড়া) দিয়ে এক নাক দিয়ে ঢুকিয়ে অন্য নাক দিয়ে বের করুন। এটি নাক পরিষ্কার রাখতে দারুণ কাজ দেয়।
৩. পর্যাপ্ত জল পান ও তরল খাবার:
• প্রচুর পরিমাণে জল, গরম স্যুপ, ভেষজ চা পান করুন। এটি শ্লেষ্মা পাতলা রাখতে ও শরীরকে আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে। অ্যালকোহল ও ক্যাফেইন এড়িয়ে চলুন।
৪. গরম পানীয় ও মধু-লেবু:
• গরম জল বা চায়ের সঙ্গে মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে খেলে গলার আরাম হয় ও নাক বন্ধ ভাব কমে।
৫. গরম সেঁক (Warm Compress):
• গরম জলে ভেজানো তোয়ালে বা কাপড় নাকের ওপর ও কপালে কিছুক্ষণ ধরে রাখুন। এতে প্রদাহ কমে ও শ্বাস নেওয়া সহজ হয়।
৬. হিউমিডিফায়ার (Humidifier) ব্যবহার:
• ঘরের বাতাসে আর্দ্রতা বাড়ালে নাক শুকিয়ে যাওয়া কমে ও নাক বন্ধ ভাব দূর হয়।
৭. রসুন ও গোলমরিচ:
• রসুন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। হাতে সামান্য গোলমরিচ গুঁড়ো ও সরিষার তেল মেখে নাকের কাছে ধরলে হাঁচি হয়ে নাক খুলে যেতে পারে।
৮. বিশ্রাম:
• পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম শরীরকে দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করে।
কখন ডাক্তার দেখাবেন: যদি ঘরোয়া টোটকা সত্ত্বেও নাক বন্ধ ভাব না কমে, শ্বাসকষ্ট হয় বা অন্যান্য গুরুতর লক্ষণ দেখা দেয়, তবে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন, বিশেষত যদি বাচ্চার নাক বন্ধ থাকে।
