মনোবিদরা বলছেন, আবহাওয়া যেমন প্রকৃতির ওপর প্রভাব ফেলে, তেমনই ফেলে মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যেও। তাই বর্ষায় দীর্ঘদিন ভীষণ মুড সুইং-এর সমস্যায় ভুগলে সচেতন হোন, পরামর্শ নিন বিশেষজ্ঞের।
বর্ষাকাল অনেকের কাছে বৃষ্টি ভেজা রোমান্টিক, আবার অনেকের কাছে বিষণ্নতায় ডুবে থাকা এক দীর্ঘ ঋতু। একটানা বৃষ্টি, স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া, বাইরে বেরনোর অনিচ্ছা—সব মিলিয়ে অনেকেই এই সময়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বোধ করেন। মনোবিদদের মতে, আবহাওয়ার উপর নির্ভর করে মানসিক স্বাস্থ্য। তাই বর্ষায় নিজেকে বিষণ্ন ও একা মনে হলে খেয়াল রাখুন নিজের মনের। এই অবস্থা দীর্ঘস্থায়ী হলে মুশকিল, প্রয়োজন সচেতনতা ও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ।
আগে জেনে নিন, যে কারণগুলিতে সাধারণত মন খারাপ ছেয়ে ধরে-
১। ঘুম ও ক্লান্তি
বর্ষায় ঘুম বেশি আসে, শরীর ভারী লাগে। কিন্তু সারাদিন ঘুমিয়ে কাটানো সম্ভব নয়। এই ঘুমের ঘাটতি ও ক্লান্তি থেকে তৈরি হয় খিটখিটে মেজাজ ও মানসিক চাপ।
২। নস্ট্যালজিক অনুভূতি
ভিজে মাটির গন্ধ, বৃষ্টির শব্দ অনেকের মনে পুরনো স্মৃতি ফিরিয়ে আনে। যা অনেক সময় আবেগ ও বিষণ্নতা অনুভব করায়।
৩। একাকীত্ব
বিশেষ করে শহরে বর্ষাকালে যোগাযোগ কমে যায়। মানুষ কেউ কারও খোঁজ রাখেন না, নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। রাস্তায় বেরনোর ইচ্ছা থাকে না। ফলে বন্ধুবান্ধব বা আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা কম হয়। এতে বাড়ে একাকীত্ব ও বিচ্ছিন্নতা।
বর্ষায় মুড স্যুইং রুখতে কিছু কার্যকর পরামর্শ
* আলোয় ভরিয়ে তুলুন ঘর
দিনের বেলা দরজা-জানালা খুলে দিন। প্রাকৃতিক আলো বাতাস ঘরে আসুক, অন্ধকার ঘর মানসিক চাপ বাড়ায়।
* সুযোগ পেলেই বাইরে বেরোন
বৃষ্টি থামলে ছাতা নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন। কাছাকাছি কোথাও থেকে হেঁটে আসুন। প্রকৃতির সংস্পর্শে থাকলে মুড ভাল থাকে।
* নির্দিষ্ট রুটিন তৈরি করুন
সারাদিনের একটা সময়সূচী মেনে চলুন। অবসময় ঘুম, শুয়ে থাকা, ঝিমুনি মনও ঝিমিয়ে thake। সকালে ব্যায়াম, বই পড়া, গান শোনা বা গাওয়া -ইত্যাদির সময় রাখুন।
* শরীরচর্চা করুন
ব্যায়াম মানসিক স্বাস্থ্যের অন্যতম ওষুধ। প্রতিদিন অন্তত ৩০-৬০ মিনিট শরীরচর্চা করুন, সেরকম হলে ঘরের মধ্যেই করুন।
* সামাজিকতা বজায় রাখুন
এখন প্রযুক্তি উন্নত, ফোন আছে, ইন্টারনেট আছে। প্রিয়জনের সঙ্গে কথা বলুন, কাছে গিয়ে হোক বা ভিডিও কল। দূরত্ব বেশি বলে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকতে হবে, এমনটা নয়।
