সংক্ষিপ্ত
জিনগত জটিল রোগের সম্ভাবনা থাকার কারণে বিয়ের আগেই প্রত্যেকটি মানুষের থ্যালাসেমিয়া রোগ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকা প্রয়োজন। আর তা না হলেই, গর্ভস্থ সন্তানের থাকে জীবনহানির আশঙ্কা।
থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রক্তস্বল্পতাজনিত দুরারোগ্য ব্যাধি। অনেকেই রোগটি সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানেন না। এমনকি এ রোগের লক্ষণ সম্পর্কেও অনেকেরই কোনও ধারণা নেই। এই কারণে বেশিরভাগ রোগীই থ্যালাসেমিয়ার মতো জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার পরও এর সঠিক লক্ষণ না জানার কারণে, ঠিক সময়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন না।
বিয়ের মাধ্যমে এ রোগটি বিস্তার লাভ করে। যেমন ধরুন, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে একজন অথবা উভয়ই থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক হলে জিনগত কারণে সে দম্পতির সন্তান থ্যালাসেমিয়া রোগী হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
চিকিৎসকরা বলছেন, প্রাপ্তবয়স্ক মানুষরা এই রোগের জিনবাহক কি না, সেটা শারীরিক মিলনের আগেই জেনে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। কারণ, নারী-পুরুষের মধ্যে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের আগে থ্যালাসেমিয়া রোগটি সম্পর্কে ধারণা না থাকলে গর্ভস্থ সন্তানের জীবনহানির আশঙ্কা থাকে ।
থ্যালাসেমিয়া একটি অটোজোমাল মিউট্যান্ট প্রচ্ছন্ন জিনঘটিত বংশগত রক্তের রোগ। এই রোগে রক্তে অক্সিজেন পরিবহনকারী হিমোগ্লোবিন কণার উৎপাদনে ত্রুটি থাকে। যে কারণে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত মানুষ রক্তে অক্সিজেনস্বল্পতা বা অ্যানিমিয়া রোগ দেখা যায়।
এই রোগে আক্রান্ত হলে শরীরে লোহিত রক্ত কণিকার বয়স ২০ দিন কমে যায়। সাধারণ শরীরে লোহিত রক্ত কণিকা ১২০ দিন টিকে থাকে। কিন্তু থ্যালাসেমিয়া রোগে ১০০ দিনেই লোহিত রক্ত কণিকার আয়ু শেষ হয়। এই কারণে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমতে শুরু করে। আর হিমোগ্লোবিন কম মানেই শরীরে রক্ত কমে যাওয়া।
শরীরে রক্ত কম থাকার কারণে অক্রিজেন লেভেল কমতে শুরু করে। অল্পতেই রোগী ক্লান্ত ও দুর্বল হয়ে পড়ে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। পেট ফুলে যাওয়া, ত্বক হলুদ হয়ে যাওয়া, মুখের হাড়ের পরিবর্তনও হতে দেখা যায় থ্যালাসেমিয়া রোগীর। তাই, শারীরিক মিলনের আগেই চিকিৎসকের পরামর্শ এবং পরীক্ষানিরীক্ষা করা প্রয়োজন, সন্তানধারণের আগে উপযুক্ত চিকিৎসার মধ্যে দিয়ে গিয়েই সন্তানের জন্ম দেওয়া উচিত।