পাইলসের রোগীদের কাছে রিঠার ব্যবহার অনেক গুরুত্বপূর্ণ তবে রিঠা আরো অন্যান্য দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এবং এর উপকারিতা অনেক।
৭ দিনে রিঠা ফল দিয়ে পাইলস সম্পূর্ণরূপে নিরাময় করা যায় না, এটি একটি ভুল ধারণা। পাইলস একটি নিরাময়যোগ্য অবস্থা, তবে এর জন্য সাধারণত জীবনযাত্রার পরিবর্তন এবং চিকিৎসার প্রয়োজন হয়, যেমন বেশি ফাইবারযুক্ত খাবার গ্রহণ, প্রচুর জল পান করা, এবং নিয়মিত উষ্ণ জলে স্নান করা।
কোনও ঘরোয়া প্রতিকার বা দ্রুত নিরাময়ের পদ্ধতির উপর নির্ভর না করে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
* পাইলস চিকিৎসার জন্য সাধারণ পরামর্শ:
১)ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার: বেশি পরিমাণে ফাইবারযুক্ত খাবার, যেমন ফল, সবজি এবং শস্য, গ্রহণ করুন।
২)প্রচুর জল পান: শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন এবং এটি মলকে নরম রাখতে সাহায্য করে।
৩) শারীরিক পরিশ্রম: নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
৪)উষ্ণ জলে স্নান: দিনে দুই থেকে তিনবার ১০-১৫ মিনিটের জন্য উষ্ণ জলে বসে স্নান করলে আরাম পাওয়া যায়।
৫) কোষ্ঠকাঠিন্য এড়িয়ে চলুন: কোষ্ঠকাঠিন্য এবং মলত্যাগের সময় চাপ দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।
যে বিষয়গুলো আরো এড়িয়ে চলা উচিত:
চা, কফি, এবং মশলাদার খাবার।
টক এবং ভিনেগার জাতীয় খাবার।
অ্যালকোহল এবং ধূমপান না করা।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
পাইলস একটি প্রচলিত রোগ, যা প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত হলে নিরাময় করা সহজ।
গুরুতর ক্ষেত্রে, যেমন থ্রম্বোসিস বা অন্যান্য জটিলতা সৃষ্টি হলে, দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যাবশ্যক।
যেকোনো চিকিৎসার আগে একজন চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত, যাতে সঠিক রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা পদ্ধতি বেছে নেওয়া যায়।
এছাড়া আর রিঠার অন্যান্য উপকারিতা গুলি হল:
* বাত: রিঠা পেস্ট লাগালে বাতের ব্যথা উপশমে উপকার পাওয়া যায়।
* ফোঁড়া: মাথার ফোঁড়ায় রিঠা পেস্ট লাগালে ফোঁড়া এবং ব্যথা সেরে যায়।
* দাদ: ৫০ গ্রাম সাবান বাদামের ছাল, একটি পচা খোসা, একটি নারকেল, একটি পচা সুপারি এবং ১০০ মিলি তিলের তেল ৪০০ মিলি জলের সাথে মিশিয়ে কম আঁচে ফুটতে দিন। যখন জল বাষ্পীভূত হয়ে যায় এবং কেবল তেলটি অবশিষ্ট থাকে, তখন এটি ছেঁকে নিন। এই তেল প্রয়োগ করলে একজিমা, দাদ, চুলকানি, ফুসকুড়ি, ফোঁড়া এবং ব্রণ সহ সমস্ত ত্বকের রোগ নিরাময় করা যায়।
* গুল্যা বায়ু হিস্টিরিয়া: ৪ বা ৫টি রিঠা পিষে ১ কাপ জলে ভালো করে চটকে নিন, তারপর ফেনা বেরোনো একটি পরিষ্কার কাপড়ে ভিজিয়ে রোগীকে গন্ধ দিন, এতে হিস্টিরিয়ার অজ্ঞানতা দূর হবে।
* জন্ডিস: ১৫ গ্রাম বাদামের খোসা এবং ১০ গ্রাম কাউ ডাল ২৫০ মিলি জলে সারারাত ভিজিয়ে রাখুন। বাকি জল সকালে পান করুন। ৭ দিন ধরে এই জল পান করলে তীব্র জন্ডিস নিরাময় হতে পারে।
* সাবান বাদামের খোসা পিষে সারারাত জলে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে, জন্ডিসের চিকিৎসায় সাহায্য করার জন্য দিনে তিনবার এই জলের ২ ফোঁটা নাকে দিন।
* কুষ্ঠরোগ: সাবান বাদাম পিষে কুষ্ঠরোগীর ক্ষতস্থানে লাগালে ক্ষত দ্রুত নিরাময়ে সাহায্য করে।
* চুলকানি: চুলকানি এবং চুলকানির ক্ষেত্রে, রিঠা পেস্ট লাগালে উপকার পাওয়া যায়।
* মাথাব্যথা: মাইরোবালানের ছাল দীর্ঘক্ষণ জলে দিয়ে ঘষুন এবং যখন ফেনা দেখা দেয়, তখন একই জল গরম করে ঠান্ডা থাকা অবস্থায় নাকে ২-৩ ফোঁটা দিন, এতে মাথাব্যথা উপশম হবে।মাইরোবালানের খোসা জলে পিষে নাকে ২ ফোঁটা দিলে মাথাব্যথা উপশম হয়।
* শিশুদের বিভিন্ন রোগ: সাবান বাদামের খোসা পিষে গুঁড়ো করে নিন। এই গুঁড়োটি প্রায় আধা গ্রাম মধুতে মিশিয়ে শিশুকে দিন। এতে ডায়রিয়ার সাথে সাথে কফ বের হয়ে যাবে এবং ডাব্বা রোগ (পাঁজরের নড়াচড়া) সেরে যাবে। দুধে পরিমাণ মতো মুগ ডাল মিশিয়ে শিশুকে পান করতে দিন। এতে কফ, ঠান্ডা লাগা, দুধ না খাওয়া, মাড়ি শক্ত হওয়া ইত্যাদি রোগ সেরে যাবে। এতে পাঁজরের ব্যথাও সেরে যাবে। সরিষার তেল, হিং এবং রসুন দিয়ে পাঁজরে ম্যাসাজ করুন। তবে বুকে ম্যাসাজ করবেন না।
* টাক: যদি মাথায় টাক পড়ে (কোন জায়গা থেকে চুল পড়ে গেছে), তাহলে মিরোবালান পাতা দিয়ে মাথা ধুয়ে ক্যাস্টর অয়েল, লেবুর রস এবং তেতো আপেল বীজের তেলের মিশ্রণ লাগালে উপকার পাওয়া যায়।


