চিত্তাকর্ষক রঙিন খাবারে লুকিয়ে থাকা কৃত্রিম রঙের ক্ষতিকর দিকগুলি সম্পর্কে জানুন। অ্যালার্জি, ক্যানসার, স্বভাবের পরিবর্তন, হজমের সমস্যা এবং কিডনির সমস্যা সহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে এই কৃত্রিম রং।

সাদা ফাঁকাসে, বা হলুদ ছাড়া খাবার হয়তো আপনিও পাতে তুলবেন না। কেক, পেস্ট্রি, ক্যান্ডি, আইস ক্রিম, নরম পানীয়, রঙিন মকটেল, রেস্টুরেন্টে রঙিন কাবাব বা ফ্লেভার ও কৃত্রিম রং মেশানো স্ন্যাক্স, খাবার যত বেশি রঙিন তত বেশি চিত্তাকর্ষক। এই ধরনের খাবারের জন্যই মাছির মতো ভনভন করে বেড়ায় আজকালকের মানুষজন। যদিও বেশিরভাগ নির্মাতাই দাবি করে থাকেন যে, এই কৃত্রিম রং সুরক্ষিত বা প্রাকৃতিক উৎস থেকেই আসে। তবে বাস্তবে চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদরা এর ক্ষতিকর দিক নিয়ে ক্রমাগত সতর্ক করে চলেছেন। কারণ অতিরিক্ত বা দীর্ঘমেয়াদে এই উপাদানগুলো শরীরে প্রবেশ করতে থাকলে, হতে পারে বিভিন্ন জটিল রোগের উৎস।

অতিরিক্ত কৃত্রিম রংযুক্ত খাবার গ্রহণে কী কী সমস্যা হতে পারে?

১) অ্যালার্জি : খাদ্যদ্রব্যের মাধ্যমে শরীরে কৃত্রিম রং প্রবেশ করলে, তা থেকে অনেক সময়েই অ্যালার্জি হতে পারে। ‘ইয়েলো ৫’ শীর্ষক একটি উপাদান অনেক সময়ে খাবারে ব্যবহার করা হয়। এই ধরনের উপাদান অ্যাজ়মা রোগীদের জন্য ক্ষতিকারক। অ্যালার্জির ক্ষেত্রে যারা অতিমাত্রায় সংবেদনশীল, তাদের সতর্ক হওয়া জরুরি। এমনকি প্যাকেটজাত খাবার কেনার সময় 'ফুড লেবেল' দেখে তবেই কেনা উচিত।

২) ক্যানসার : গবেষণায় দেখা গিয়েছে, খাবারে ব্যবহৃত একাধিক কৃত্রিম রং থেকে ক্যানসারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। যেমন পশুদের উপরে পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, ‘রেড ৩’ নামক একটি পদার্থ থেকে থাইরয়েড টিউমরের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। তাই দীর্ঘ দিন এই ধরনের গুঁড়ো রং খাবারের মাধ্যমে দেহে প্রবেশ করলে অসুস্থতা ও ক্যান্সারে ঝুঁকি অনিবার্য।

৩) স্বভাবে পরিবর্তন : চিকিৎসকদের একাংশের দাবি, কোনও কোনও ক্ষেত্রে মানুষের স্বভাবে পরিবর্তন ঘটাতে পারে খাবারের কৃত্রিম রং। এ ক্ষেত্রে শিশুদের ক্ষতির সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি বলেই তারা দাবি করেছেন। কারণ, শিশুদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তেমন জোরদার হয় না। ফলে সহজেই শিশুদের ক্ষতি হতে পারে।

৪) হজমের সমস্যা : খাবারের কৃত্রিম রং অনেক সময়েই বদহজমের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে যাদের ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোমে আক্রান্ত, তাদের ক্ষেত্রে কৃত্রিম রং থেকে সমস্যা আরও বাড়তে পারে।

৫) কিডনির সমস্যা: খাবারের কৃত্রিম রং থেকে কিডনির ক্ষতি হতে পারে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ‘রেড ৪০’ এবং ‘ইয়েলো ৫’ নামক উপাদান যা কৃত্রিম রঙে পাওয়া যায়, এগুলি কিডনির কার্যক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে।

সারাংশ

বিজ্ঞাপনের খাতিরে চিত্তাকর্ষক কৃত্রিম রঙে রঙিন করে তোলা খাবার অতিরিক্ত গ্রহণে হতে পারে শারীরিক সমস্যা। বিশেষ করে শিশু ও সংবেদনশীল ব্যক্তিদের জন্য এটি মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারে।