ইরেটেবল বাওয়েল সিনড্রোম বা সংক্ষেপে আইবিএস একটি পেটের রোগ এই রোগ প্রাণঘাতী না-হলেও জীবনভর বড় ভোগায়, কাজে ক্ষতি করে সারাক্ষণ গ্য়াস-অম্বল আর পেটভার এই রোগীদের নিত্য়সঙ্গী হয়ে দাঁড়ায় কাউর কোষ্ঠকাঠিন্য় হয় তো কাউর-বা বারেবারে বাথরুমে যেতে হয় আইবিএসে

শোনা যায় পশ্চিমবঙ্গের দোর্দণ্ডপ্রতাপ মুখ্য়মন্ত্রীকে ইরেটেবল বাওয়েল সিনড়্রোমে ভুগো রাজ্যপাট ত্য়াগ করতে হয়েছিলসত্য়ি মিথ্যে জানি না, তবে রোগটি এমনই নাছোড় যে তা প্রাণে না-মেরে ফেললেও কাজে বেজায় ক্ষতি করে

খুলে বলা যাক ধরুন আপনি দীর্ঘদিন ধরে পেটের নানারকম সমস্য়ায় ভুগছেনগ্য়াস-অম্বল আপনার নিত্য়সঙ্গী। হাজার ওষুধ খেয়েও কিছু হচ্ছে নাএদিকে একের-পর-এক টেস্ট করিয়ে যাচ্ছেন তাতেও কিছু পাওয়া যাচ্ছে না শেষে দেখা গেল আপনার ইরেটেবল বাওয়েল সিনড্রোম হয়েছে

এটি একটি অদ্ভুত ধরনের রোগ কাউর এই রোগে প্রচণ্ড কোষ্ঠকাঠিন্য় হয় কাউর-বা সারাক্ষণ বাথরুমে বসে থাকতে হয়দেখা গেল আপনি একদিন বিরিয়ানি খেয়ে এলেন, অথচ পেটের কোনও অসুবিধে হল না এদিকে বাড়িতে সেদ্ধভাত খেয়েও হঠাৎ গ্য়াস-অম্বল হয়ে গেল এমনই আনপ্রেডিক্টেবল রোগ এই ইরেটেবল বাওয়েল সিনড্রোম

এই রোগে কেউ মারা যায় না ঠিকই কিন্তু কাজের বেজায় ক্ষতি করে এই রোগ অনেকেরই যখন-তখন যেখানে-সেখানে বড় বাথরুম পেয়ে যায় ইরেটেবল বাওয়েল সিনড্রোমেসত্য়ি বড় ভোগায় এই রোগপেট ব্য়থা বা পেটভার এই রোগীদের নিত্য়সঙ্গীহয়ে যায়স্বাভাবিকভাবেই কাজে মনোনিবেশ করা কঠিন হয় এর ফলে

কী করা যেতে পারে এর হাত থেকে নিস্তার পেতে, দেখা যাক

ইরেটেবল বাওয়েল ধরা পড়লে কতগুলো জিনিস মেনে চলতে হয়প্রথমেই আসি স্ট্রেসের প্রসঙ্গে স্ট্রেস না-কমাতে পারলে কিছুতেই এর হাত থেকে রেহাই পাওয়া যাবে নাতাই প্রয়োজনে মনোবিদের পরামর্শ নিনসেইসঙ্গে খাওয়াদাওয়ার প্রতি একটু নজর দিন দুধ একেবারেই বন্ধ করে দিন এমনকি মিষ্টিও খাবেন না বেশিএমনিতেই ওজন বাড়ায় এই মিষ্টি তারওপর পেটে গিয়ে সমস্য়াও করে চাইলে বাড়িতে তৈরি করে ছানা খেতে পারেন যদি সহ্য় হয় তো আর হ্যাঁ, টকদই খান নিয়ম করেবাড়়িতে পাতুন বা দুধের দোকান থেকে প্য়াকেটের টকদই কিনে আনুন জেনে রাখবেন, দই হল পেটের সমস্য়ায় মহৌষধিঅনেকের ধারণা দই শুধু ওজন কমায় কিন্তু তা নয় ওজন তো কমায়, সেইসঙ্গে এতে থাকা প্রোবায়োটিক পেটের খুব উপকার করে জানবেন, যাদের ইরেটেবল বাওয়েল সিনড্রোম হয়, তাদের পেটে কিন্তু প্রোবায়োটিক নামের এই উপকারী জীবাণুর সংখ্য়া কমে আসে তখন বাইরে থেকে এর দরকার হয় তাই দই খান নিয়ম করেএই রোগে ডাক্তাররা অনেকসময়ে প্রোবায়োটিক ক্য়াপসুলও দেন তাতে করে রোগী খুব ভাল থাকে সেইসঙ্গে বাওয়েল মুভভেন্ট ঠিক করার জন্য় ওষুধ দেনকারণ ডিসেন্ডিং কোলন স্টিফ হয়ে যায় এই রোগে। এই ওষুধপত্রের সঙ্গে লক্ষ রাখতে হয়, তেল-ঝাল-মশলা যাতে খাওয়ার তালিকায় যাতে না-থাকে। বিশেষ করে শুকনো লঙ্কা আর বাইরের ভাজাভুজি একেবারেই বাদ দিতে হয়। প্রতিদিন যাতে ঘুম ভাল হয় সেদিকে নজর রাখতে হয়। মেডিটেশন খুব উপকারী। কারণ তাতে করে মন শান্ত থাকে। যতটা সম্ভব দুশ্চিন্তামুক্ত রাখতে হয় নিজেকে।