সংক্ষিপ্ত
- ব্রেকফাস্ট করুন রাজার মতো
- লাঞ্চ করুন মধ্য়বিত্তের মতো
- ডিনার করুন নিঃস্ব ভিখিরির মতো
- ওজন কমবেই কমবে
ওজন কমানো কিন্তু খুব কঠিন কিছু কাজ নয়। ইচ্ছে যদি থাকে তাহলেই বাড়তি মেদ ঝরান যায় সহজে। আর তার জন্য জিমখানায় দৌড়তে হয় না। একেবারে খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে দিতেও হয় না। শুধু কতগুলো নিয়ম মেনে চলতে হয়, এই আর কী।
কেমন সেই নিয়ম
ব্রেকফাস্ট করুন রাজার মতো, লাঞ্চ করুন মধ্যবিত্তের মতো আর ডিনার করুন নিঃস্ব ভিখিরির মতো।
কীরকম
সকালে উঠে ভুলেও ব্রেকফাস্ট স্কিপ করবেন না। বরং একটু বেশি করেই খাবেন। অবশ্য ওজন কমাতে তার আগে একটা কাজ আপনাকে করে ফেলতে হবে। তা হল ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে ঈষদষ্ণু গরমজলে একটা লেবু কেটে তার রস ফেলে দিয়ে একচামচ মধু দিয়ে তা খেয়ে নিতে হবে। দেখবেন ম্যাজিকের মতো ওজন কমবে। যাইহোক, এরপর পেটভরে ব্রেকফাস্ট করুন। ব্রেকফাস্টের সঙ্গে একটি কলা খান। ব্রেকফাস্টে রুটি সবজি, চিঁড়ের পোলাও, ডালিয়া, যা খুশি হয় খান বেশি করে। তবে ভাজাভুজি বেশি খাবেন না। দুধ খেতে পারেন, তবে তা যদি আপনার পেটে সয় তবেই।
ব্রেকফাস্টের পর চাইলে অফিসে বেরতে পারেন। তারপর দু-ঘণ্টা অন্তর না-পারলেও অন্তত তিনঘণ্টা অন্তর কিছু একটা খান। ধরুন একটা বিস্কুট আর চা। তবে চা বা কফি কিন্তু অবশ্যই চিনি ছাড়া খাবেন। চিনি বাদ না-দিলে ওজন জীবনে কমবে না। চাইলে সুগার ফ্রি ব্যবহার করতে পারেন। তবে কৃত্রিম সুগার ফ্রি বেশি না-খাওয়াই ভাল। চাইলে স্টিভিয়া ব্যবহার করে দেখতে পারেন। যাইহোক, এরপর দুপুরে লাঞ্চ করুন ভাল করে। তবে তা যেন পরিমাণে ব্রেকফাস্টের চেয়ে কম হয়। বিকেলের দিকে একটু মুড়ি বা কাঠখোলায় ভাজা চিঁড়ে খান। চাইলে কড়া করে সেঁকে দু-পিস টোস্টও খেতে পারেন।
মনে রাখবেন, ওজন কমাতে গেলে আপনাকে যেমন জিমে যেতে হবে না, ভোরবেলায় ঘুম থেকে উঠে মর্নিং ওয়াকে যেতে হবে না, তেমনি দিনের মধ্যে আধঘণ্টা অন্তত হাঁটতে হবে যেভাবে হোক। যদি সন্ধেবেলায় বা একটু রাতের দিকে সম্ভব হয় তাতেও কোনও অসুবিধে নেই। নইলে অন্য সময়ে। একান্তই সম্ভব না হলে একটা উপায় বার করা যায়। আপনি অফিসের দু-তিনটে স্টপেজ আগে নামবেন বাসে করে আর ফেরার সময়েও তাই করবেন। তাহলে অন্তত দিনে আধঘণ্টা হাঁটা হবে আপনার।
রাতে খান তাড়াতাড়ি। পারলে আটটার মধ্যে। যদি বাড়ি ফিরতে দশটা হয়, তাহলে অফিসেই খাওয়ার ব্যবস্থা করুন। দেরি করে খেলে কোনওদিন ওজন কমবে না। ডিনারে চলতে পারে দুটো রুটি কী একটু ভাত। নইলে দুটো টোস্ট। তবে দিনে বেশি পাউরুটি যাতে খাওয়া না-হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। রাত দশটা নাগাদ একটু খিদে পাবেই। তখন চাইলে দুধ খেতে। নইলে মুড়ি-চিঁড়েও খেতে পারেন। তবে ভারী কিছু খাবেন না। মনে রাখবেন আপনার কিন্তু ডিনার হয়ে গিয়েছে।
খাবার মধ্যে কমবেশি সবই খাবেন, তবে মিষ্টি একেবারে বাদ। অন্তত প্রথম দু-তিনমাস। কিছুদিন পরে অবশ্য এক-আধটা চলতে পারে মাঝেমধ্যে। বাদ দিন কোলাজাতীয় পানীয়, আইসক্রিম, দোকান থেকে কেনা মিষ্টি দই, চকোলেট। এর বদলে যোগ করুন বাড়িতে পাতা টক দই। বাড়িতে পাততে না-পারলে দুধের দোকান থেকে প্যাকেটের টইদইও কিনে এতে খেতে পারেন। এই টকদই মেদ ঝরাতে দারুণ কাজ করে। সেইসঙ্গে এর প্রোবায়োটিক পেটের সমস্যায় দারুণ কাজে দেয়।
আর মনে রাখবেন, বাইরের ভাজা যত কম খাওয়া যায় ততই ভাল। তবে মাঝেমধ্যে খেতে পারেন।যদিও মনে রাখবেন, বাড়ির তৈরি খাবারই সবচেয়ে ভাল। তাই জাঙ্কফুড বাদ দিন। আর হ্যাঁ, দেখবেন রাতে ঘুম যেন ভাল হয়। নইলে সামগ্রিকভাবে শরীর ভাল থাকবে না।
ব্যস। এই কয়েকটা নিয়ম একটু মেনে চলুন। কিছুদিনের মধ্যেই হাতেনাতে ফল পাবেন। খুব কি কঠিন? ওজন কমানোর জন্য কার্বোহাইড্রেট পুরোপুরি বাদ দিয়ে প্রোটিনের গুঁড়ো খেয়ে থাকার চেয়ে অনেকে প্রাণবন্ত নয় কি এই ফর্মুলা?