সংক্ষিপ্ত

  • স্বামীর মঙ্গল কামনায় হিন্দু বিবাহিত মহিলারা পালন করে থাকেন করবা  চৌথ 
  • উত্তর ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে পালন করা হয় করবা চৌথ
  • করবা  চৌথ শুরু হওয়ার পেছনে রয়েছে নানা ইতিহাস
  • জেনে নিন সেইসব কাহিনি সমূহ 

স্বামীর মঙ্গল কামনায় সূর্যোদয় থেকে নির্জলা উপবাস শুরু হয়, সূর্যাস্তে শেষ হয় সেই উপবাস। উত্তর ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে যেমন, হরিয়ানা, পঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, ও হিমাচল প্রদেশ-এ বেশ নিষ্ঠা সহযোগে পালন করা হয় করবা  চৌথ। হিন্দুদের রীতিগুলির মধ্যে অন্যতম হল করবা চৌথ। হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, প্রতি বছর কোজাগরী লক্ষী পুজোর পূর্ণিমার চারদিন পর এই রীতিটি পালন করা হয়ে হয়ে থাকে। কারওয়া চৌথ শুরু হওয়ার পেছনে রয়েছে নানা রকমের বহুল প্রচলিত ইতিহাস। মনে করা হয় মহাভারত-এর সময় থেকেই প্রচলন রয়েছে করবা  চৌথ-এর। মহাভারত ছাড়াও রয়েছে আরও কাহিনি। চলুন দেখে নিই সেই সমস্ত কাহিনি। 

মহাভারতের গল্প
করবা  চৌথ-এর প্রচলন ছিল মহাভারতের যুগ থেকেই। মনে করা হয় দ্রৌপদী তাঁর স্বামীদের মঙ্গল কামনার জন্য পালন করতেন করবা চৌথ। একবার অর্জুন কোনও কাজে নীলগিরির উদ্দেশ্যে গিয়েছিলেন। তখন অর্জুন-কে ছাড়া বাকি পান্ডবরা নানা সমস্যার মধ্যে পড়েছিলেন। দ্রৌপদী তখন ভগবান কৃষ্ণের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। সেসময় কৃষ্ণ পার্বতীর কথা বলেন দ্রৌপদী-কে। মাতা পার্বতীও শিবের জন্য উপবাস রেখেছিলেন ও সমস্যার থেকে মুক্তিলাভ করেছিলেন। সেই অনুযায়ী দ্রৌপদীও অর্জুনের জন্য উপবাস রাখেন ও সমস্যার থেকে মুক্ত হন এবং পান্ডবদের জটও কেটে যায়। 

রানী বীরাবতির গল্প
এছাড়া সর্বাধিক জনপ্রিয় যে কাহিনিটি রয়েছে তা হল রানী বীরাবতির গল্প। সুন্দরী রানী তাঁর সাত ভাই-এর একমাত্র বোন ছিলেন। তিনি বাপের বাড়িতে থাকাকালীন একবার করবা  চৌথ-এর প্রথা পালন করেন। কিন্তু সন্ধ্যে পর্যন্ত তিনি ক্ষিদে, তেষ্টা নিয়ে থাকতে পারেননা। রানী বীরাবতির কষ্ট দেখে তাঁর ভাইরা বলেন উপবাস ভঙ্গ করতে বলেন, তবে রানি তাতে সম্মত হননা। এরপর বোনের কষ্ট দেখে ভাই-এরা পিপল গাছের আয়না দিয়ে নকল চাঁদ তৈরি করে, এবং তাঁদের বোন-কে উপবাস ভঙ্গ করতে বলেন। সেটিকে দেখে চাঁদ মনে করে উপবাস ভঙ্গ করেন বীরাবতি। কিন্তু তিনি খাবার মুখে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মৃত্যু হয় তাঁর স্বামীর।

করবা-র গল্প
করবা  নামক এক মহিলা-কে ঘিরেও রয়েছে গল্প। তিনি একনিষ্ঠ হিন্দু স্ত্রী ছিলেন। একবার করবা -র স্বামী নদীতে স্নান করতে গিয়েছিলেন। নদীতে তিনি কুমীরের মুখে পড়েন। তাঁর স্ত্রী তাঁকে বাঁচানোর জন্য কুমীরটিকে সুতো দিয়ে বেঁধে রাখেন। এরপর কারওয়া যমরাজ-কে বলেন কুমীরটি-কে নরকে পাঠানোর জন্য বলেন। তবে যমরাজ প্রত্যাখ্যান করলে কারওয়া বলেন তিনি অভিশাপ দেবেন যমরাজ-কে। যমরাজ ভয় পেয়ে গিয়ে কুমীরটি-কে নরকে পাঠান। এরপর করবা ও তাঁর স্বামী একসঙ্গে শান্তিতে বসবাস করেন। 

এইরকম ভাবেই বহু যুগ ধরেই চলে আসছে করবা চৌথ-এর রীতি। আজও অমলিন সেই প্রথা।