সংক্ষিপ্ত
ড্রাগের নেশা থেকে কীভাবে বাঁচাবেন সন্তানদের? জেনে নিন মনোবিজ্ঞানীদের মতামত
রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে যে শিশুদের মধ্যে মাদকাসক্তির ব্যবহার বেড়েই চলেছে। সিগারেট, তামাক, মদ, মাদক ইত্যাদি নানা ধরনের মাদকদ্রব্যের ব্যবহার শিশুদের স্বাস্থ্য এবং শিক্ষার জন্য হুমকিস্বরূপ। শিশুদের মাদকাসক্তি প্রতিরোধে অভিভাবকদের ২০ টি বিষয় সম্পর্কে মনোবিজ্ঞানী জয়েশ কে জি-এর লেখা।
কলম ও বইয়ের পরিবর্তে কিশোর-কিশোরীদের হাতে ছুরি এবং মাদকদ্রব্য। পুলিশ ও আবগারি বিভাগ ধরলেই অভিভাবকরা বুঝতে পারেন। এসব কিভাবে শিশুদের হাতে এলো, তা অভিভাবক এবং সংশ্লিষ্টদের ভাবা উচিত।
ছোট বাচ্চাদের এবং কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে আক্রমণাত্মক আচরণ এবং নিষিদ্ধ মাদকদ্রব্যের ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পর অপরাধীদের সংশোধন ও পুনর্বাসনের জন্য অনেকগুলি কর্মসূচি থাকলেও, এটি প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় কোনও পরিকল্পনা এখনও পর্যন্ত গড়ে ওঠেনি।
গাছের গোড়ায় সার দেওয়ার পরিবর্তে মাথায় সার ঢালার মতো অবস্থা। সমাজে এ ধরনের অপরাধ ঘটছে জেনেও অনেকে ভয়ে অথবা তথ্য দিলেও কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ার ভয়ে চুপ থাকেন। সম্প্রতি ত্রিশূর তেক্কিনকাদুতে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ড এর সর্বশেষ উদাহরণ।
আমরা যদি এখনও চোখ বন্ধ করে থাকি, তাহলে এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গ্রাস করবে। শিশুদের এ ধরনের অপরাধের কারণে নিজের বাড়িতেও নিরাপদে ঘুমানো যাবে না। আর চোখ বন্ধ না করে শিশুদের আক্রমণাত্মক আচরণ এবং মাদকাসক্তি প্রতিরোধে সাহায্য করার জন্য ২০ টি পরামর্শ নিচে দেওয়া হল।
১) শিশুদের বয়সের চেয়ে বড়দের সাথে মেলামেশা এড়িয়ে চলুন।
২) প্রতিটি অভিভাবকেরই শিশুদের বন্ধুদের সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা থাকা উচিত।
৩) শিশুদের আচরণে কোনও পরিবর্তন দেখলে মনোবিজ্ঞানীর পরামর্শ নিন।
৪) শিশুদের পড়াশোনায় কোনও সমস্যা আছে কিনা তা খুঁজে বের করুন।
৫) শিশুদের সাথে প্রতিদিন আধঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা কথা বলুন।
৬) অভিভাবকদের মধ্যে ঝগড়া একেবারেই এড়িয়ে চলুন।
৭) শিশুরা না বলে টাকা নিচ্ছে কিনা লক্ষ্য রাখুন।
৮) মোবাইল ফোন শুধুমাত্র প্রয়োজনেই দিন।
৯) পরিবারের অসুবিধাগুলো শিশুদের জানিয়ে তাদের বড় করুন।
১০) শিশুদের যুক্তিসঙ্গত চাহিদাগুলোই পূরণ করার চেষ্টা করুন।
১১) শিশুদের ভালো অভ্যাসগুলোকে উৎসাহিত করুন এবং খারাপ অভ্যাসগুলোকে নিরুৎসাহিত করুন।
১২) শিশুদের বয়স অনুযায়ী জিনিসপত্র, বিশেষ করে যানবাহন দেওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকুন।
১৩) শিশুরা ঘুমালে মাঝে মাঝে তাদের দেখাশোনা করা জরুরি।
১৪) মাঝে মাঝে তাদের ব্যাগ এবং শোবার ঘর পরীক্ষা করুন।
১৫) টাকার মূল্য বুঝিয়ে তাদের বড় করুন।
১৬) শিশুদের উপর কখনও অন্ধভাবে বিশ্বাস করবেন না।
১৭) অনিরাপদ পরিবেশে বেড়ে ওঠা শিশুদের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া উচিত।
১৮) কোনও সামাজিক বিরোধী কার্যকলাপ দেখলে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে জানান।
১৯) স্কুল/টিউশন শিক্ষকদের সাথে কথা বলুন এবং শিশুদের পড়াশোনা এবং অন্যান্য বিষয়ে অগ্রগতি নিয়মিত মূল্যায়ন করুন।
২০) আত্মীয়স্বজন এবং প্রতিবেশীরা আপনার শিশুদের সম্পর্কে যা বলে তা গুরুত্ব সহকারে নিন এবং সে অনুযায়ী প্যারেন্টিংয়ে পরিবর্তন আনুন।
অপরাধপ্রবণ শিশুদের আগেভাগেই চিহ্নিত করার জন্য এবং তাদের অপরাধ থেকে মুক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত। মনে রাখবেন, "কেউ অপরাধী হয়ে জন্মায় না। পরিস্থিতি তাদের অপরাধী করে তোলে।" সেই পরিস্থিতিগুলোই আগে ঠিক করতে হবে, সেগুলোই আগে দূর করতে হবে।