Diwali Green Crackers: এই দিওয়ালিতে অনেক রাজ্যে শুধুমাত্র গ্রিন ক্র্যাকার ফাটানোর অনুমতি আছে। তাই দিওয়ালির জন্য বাজি কেনার আগে জেনে নিন গ্রিন ক্র্যাকার কী এবং কীভাবে সহজেই আসল বাজি চিনবেন।
How to Identify Real Green Crackers: প্রতি বছর দিওয়ালি এলেই পুরো আকাশ আলোয় ঝলমল করে ওঠে। রঙিন আতশবাজি মনকে আনন্দ দিলেও, কিছুক্ষণ পরেই সেই আনন্দ ধোঁয়া আর দূষণে পরিণত হয়। বাজি থেকে ওঠা ধোঁয়া আর তীব্র শব্দ শুধু বাতাসকেই দূষিত করে না, মানুষের স্বাস্থ্যের ওপরও খারাপ প্রভাব ফেলে। এই কারণে অনেক রাজ্যে বাজি নিষিদ্ধ। তবে, কিছু রাজ্যে সরকার একটি সমাধান বের করেছে - গ্রিন ক্র্যাকার, যা কম দূষণ ছড়ায় এবং পরিবেশের জন্য নিরাপদ বলে মনে করা হয়। এই বছর সুপ্রিম কোর্ট দিল্লিতে নির্দিষ্ট নিয়মের অধীনে গ্রিন ক্র্যাকার জ্বালানোর অনুমতি দিয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো, এই গ্রিন ক্র্যাকার আসলে কী এবং কীভাবে চিনবেন? জেনে নিন।
গ্রিন ক্র্যাকার কী?
সহজ কথায় বলতে গেলে, গ্রিন ক্র্যাকার সাধারণ বাজির তুলনায় অনেক কম ধোঁয়া ও শব্দ করে। এটি সিএসআইআর-নিরি (CSIR-NEERI - National Environmental Engineering Research Institute) তৈরি করেছে। এই বাজিতে এমন কোনও রাসায়নিক থাকে না যা বাতাসে বিষাক্ত গ্যাস ছাড়ে। যেখানে সাধারণ বাজি ১৬০ ডেসিবেল পর্যন্ত শব্দ করে, সেখানে গ্রিন ক্র্যাকারের শব্দ মাত্র ১১০ থেকে ১২৫ ডেসিবেলের মধ্যে থাকে। অর্থাৎ, কানের ওপরও কম প্রভাব পড়ে এবং পরিবেশের ওপরও। এই বাজিতে ডাস্ট রিপেলেন্টও থাকে, যা জ্বলার পর আশেপাশের ধুলো টেনে নেয়। মানে, এটি শুধু কম শব্দই করে না, বাতাসে ছড়ানো ধোঁয়াও কমায়।
গ্রিন ক্র্যাকার কত ধরনের হয়?
গ্রিন ক্র্যাকার তিন ধরনের হয়-
SWAS (স্বাস): জ্বলার সময় এটি খুব সূক্ষ্ম জলের ফোঁটা ছাড়ে, যা বাতাসে থাকা ধুলো শুষে নেয়।
SAFAL (সাফল): এতে অ্যালুমিনিয়ামের পরিমাণ নিয়ন্ত্রিত রাখা হয় যাতে শব্দ কম এবং প্রভাব ভালো হয়।
STAR (স্টার): এতে সালফার বা পটাশিয়াম নাইট্রেট থাকে না, তাই ধোঁয়া খুব কম বের হয়।
আসল গ্রিন ক্র্যাকার কীভাবে চিনবেন?
দিওয়ালির সময় বাজারে নকল গ্রিন ক্র্যাকারের রমরমা থাকে। তাই কেনার সময় কিছু বিষয় অবশ্যই দেখে নিন–
CSIR-NEERI লোগো দেখুন: প্রতিটি আসল গ্রিন ক্র্যাকারের প্যাকেটে সবুজ রঙের CSIR-NEERI লোগো ছাপা থাকে। যদি এই লোগো না দেখেন, তাহলে বুঝবেন বাজিটি আসল নয়।
QR কোড স্ক্যান করুন: গ্রিন ক্র্যাকারের প্যাকেটে একটি কিউআর কোড থাকে। আপনি মোবাইলের ক্যামেরা বা ‘CSIR-NEERI Green Cracker Verification App’ দিয়ে এটি স্ক্যান করতে পারেন। স্ক্যান করলে সেই বাজি সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য দেখা যাবে, যেমন এতে কোন রাসায়নিক আছে এবং কতটা দূষণ হবে। যদি কোড স্ক্যান না হয় বা নকল মনে হয়, তবে সেই প্যাকেট থেকে দূরে থাকুন।
প্যাকেজিংয়ের দিকে নজর দিন: আসল গ্রিন ক্র্যাকারের প্যাকিং মজবুত ও পরিষ্কার হয়। তাতে পরিষ্কারভাবে লেখা থাকে Green Cracker বা NEERI Approved, সঙ্গে কোম্পানির নাম এবং ওজনও উল্লেখ করা থাকে।
বিল নিতে ভুলবেন না: সঠিক দোকানদার সবসময় বিল দেবেন। এতে আপনি প্রয়োজনে অভিযোগও করতে পারবেন।
আসল গ্রিন ক্র্যাকারের পরিচয় জানা কেন জরুরি?
দিল্লি-এনসিআর-এ সুপ্রিম কোর্ট শুধুমাত্র ১৮ থেকে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত গ্রিন ক্র্যাকার জ্বালানোর অনুমতি দিয়েছে। ভুল বা নকল বাজি শুধু নিয়ম লঙ্ঘনই করে না, বাতাসে দূষণও বাড়ায়। এতে বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক এবং হাঁপানির রোগীদের সমস্যা হয়।
ভুল বাজি বিক্রি বা ফাটানোর শাস্তি কী?
- নন-গ্রিন বাজি বিক্রি বা মজুত করলে - ৫০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা ৩ বছর পর্যন্ত জেল।
- ভুল বাজি ফাটালে: ২০০ টাকা জরিমানা বা ৬ মাসের জেল।
- বারবার ভুল করলে প্রতিদিন ৫০০০ টাকা অতিরিক্ত জরিমানাও হতে পারে।
- পুলিশ এবং পরিবেশ দফতর এই সময়ে কঠোরভাবে চেকিং করছে, তাই সাবধানতাই সবচেয়ে বড় বুদ্ধিমত্তার পরিচয়।


