বর্তমান সমাজে যেখানে সম্পর্কের স্থায়িত্ব দিন দিন সংকটের মুখে, সেখানে চাণক্যের মতাদর্শ আধুনিক যুগেও দাম্পত্য জীবনের জন্য একান্ত প্রয়োজনীয়।

কথায় আছে 'জন্ম মৃত্যু বিয়ে তিন বিধাতা নিয়ে' - কখন কী হয় তা কেউই বলতে পারেনা, তবে বর্তমান সময়েবিয়ের আগে নিজের জীবনসঙ্গী কেমন হবে তা দেখে নেওয়া অত্যন্ত জরুরী। বিবাহ শুধুমাত্র সামাজিক কোনো প্রথা বা আচার-অনুষ্ঠান নয়, এটি দুটি পরিবার এবং সবথেকে বড় কথা দুটি ব্যক্তির মানসিক, চারিত্রিক ও সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের একটি অধ্যায়। প্রাচীন ভারতের জ্ঞানী পণ্ডিত ও কূটনীতিবিদ আচার্য চাণক্য শুধু রাষ্ট্রনীতি বা রাজনীতি নিয়েই নয়, ব্যক্তিজীবনের নৈতিকতা ও সম্পর্ক নিয়েও বিশদে বক্তব্য রেখেছেন তিনি। তিনি আদর্শ জীবনসঙ্গীর গুণাবলী সম্পর্কে যে মতামত প্রকাশ করে গেছেন, তা আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।

সুন্দর চেহারার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো মানসিক সৌন্দর্য। একজন মানুষ বাইরে থেকে যতই আকর্ষণীয় হোক না কেন, মন মানসিকতা ভালো না হলে সম্পর্কে স্থায়িত্ব হওয়া চাপের হয়ে ওঠে।

চাণক্যের মত অনুযায়ী আদর্শ জীবনসঙ্গী কেমন হওয়া উচিত?

১। ধৈর্যশীল

চাণক্যের মতে, যেসব মানুষের মধ্যে ধৈর্য ও সহনশীলতা রয়েছে, তারা জীবনের কঠিনতম পরিস্থিতিকেও জয় করতে সক্ষম হন। একইভাবে, দাম্পত্য জীবনে ধৈর্যশীল জীবনসঙ্গী দ্বন্দ্ব এড়িয়ে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

২। সংস্কৃতিবান ও মূল্যবোধ সম্পন্ন ব্যক্তি

চাণক্য বিশেষভাবে জোর দিয়েছেন, একজন সংস্কৃতিবান ও মূল্যবোধ সম্পন্ন জীবনসঙ্গীই পারে আপনাকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করতে। যদি কোনও ব্যক্তির মধ্যে প্রাথমিক মানবিক মূল্যবোধের অভাব থাকে—যেমন সহানুভূতি, সততা, ভদ্রতা, তবে সে তার সঙ্গীর সাথে কখনোই স্বাভাবিক মানসিক বন্ধন গড়ে তুলতে পারে না।

৩। কঠোর স্বভাব

চাণক্যের মতামত অনুযায়ী, ব্যক্তি যদি কঠোর বা তার মধ্যে রাগের মাত্রা অত্যাধিক থাকে তাহলে সেই ব্যক্তিকে ভুলেও জীবনসঙ্গী করার কথা ভাববেন না। এতে ভবিষ্যতে দাম্পত্য জীবনে কলহ, অবিশ্বাস, মানুষের নির্যাতনের মত সমস্যা লেগেই থাকবে।

বাস্তববাদী চাণক্য কখনোই বলেন নি যে, একজন আদর্শ জীবনসঙ্গী নিখুঁত হবেন। তবে উপরে আলোচিত চরিত্র বৈশিষ্ট্যগুলি আসলেই বর্তমান সময়ও একজন আদর্শ জীবন সঙ্গীর মধ্যে থাকা জরুরি।