পোষ্য বিড়াল যাঁদের বাড়িতে থাকে, তাঁরা জানেন এদের স্বভাব। আয়েসি, পরিচ্ছন্ন আবার ঘুমকাতুরেও। সময়মতো খাওয়া, একটু পায়ে পায়ে ঘোরা। তার পর শুধুই ঘুম। কেউ একটু কম ঘুমোয়, কেউ বেশি। তবে ঘুমকাতুরের তালিকাটাই লম্বা।

বিড়াল বেশি ঘুমায় কারণ তারা শিকারি প্রাণী। তাদের শক্তি সঞ্চয় করতে হয়, বিড়ালছানা বা বয়স্ক বিড়ালের বেশি ঘুমের প্রয়োজন হয়, একঘেয়েমি বা মানসিক উদ্দীপনার অভাব এবং শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা ও নিরাপদ বোধ করাও এর কারণ। গড়ে এরা ১৫-২০ ঘন্টা ঘুমায়, যা তাদের শিকারের প্রস্তুতি এবং শারীরিক-মানসিক সুস্থতার জন্য জরুরি।

** বিড়ালের এত ঘুমকাতুরে হওয়ার ৫টি কারণ:

১. শিকারি প্রবৃত্তি (Predatory Instinct): বিড়াল জন্মগতভাবে শিকারি। শিকার করার জন্য প্রচুর শক্তি লাগে, তাই তারা দিনের অনেকটা সময় ঘুমিয়ে সেই শক্তি সঞ্চয় করে রাখে, যাতে শিকারের সময় পুরোপুরি মনোযোগ দিতে পারে।

২. বয়স ও জীবনচক্র: বিড়ালছানাদের দ্রুত বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য বেশি ঘুমের (প্রায় ২০ ঘণ্টা পর্যন্ত) প্রয়োজন হয়। অন্যদিকে, বয়স্ক বিড়ালদেরও বেশি বিশ্রাম দরকার হয়, যা তাদের দৈনন্দিন রুটিনের অংশ।

৩. একঘেয়েমি ও মানসিক উদ্দীপনার অভাব (Boredom & Lack of Stimulation): যদি বিড়ালের খেলাধুলা বা মানসিক উদ্দীপনার অভাব থাকে, তবে তারা একঘেয়েমি কাটাতেও ঘুমিয়ে পড়ে। এটি তাদের অলস করে তোলে এবং বিরক্ত লাগলে ঘুমানোর প্রবণতা বাড়ে।

৪. নিরাপত্তা ও আরাম (Safety & Comfort): বিড়াল নরম ও নিরাপদ জায়গায় ঘুমাতে ভালোবাসে। এটি তাদের বাহ্যিক বিপদ থেকে রক্ষা করে এবং গভীর ঘুমে যেতে সাহায্য করে। অনেক সময় মানুষের গন্ধ বা উষ্ণতা তাদের প্রিয় হওয়ায় তারা আপনার কাছাকাছি বা জামাকাপড়ের ওপর ঘুমায়।

৫. শারীরিক ও মানসিক বিশ্রাম: বিড়ালের সুস্থ থাকার জন্য পর্যাপ্ত ঘুম অপরিহার্য। এটি তাদের পেশীগুলোকে সচল রাখে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং সামগ্রিক শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়, যা তাদের খুশি ও চনমনে রাখতে সাহায্য করে।

** কখন চিন্তার কারণ? যদি আপনার বিড়াল স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি ঘুমায়, খাওয়া-দাওয়া কমে যায়, বা অন্য কোনো অস্বাভাবিক আচরণ করে, তাহলে পশুচিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত, কারণ অতিরিক্ত ঘুম কোনো অন্তর্নিহিত স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।