সংক্ষিপ্ত

জীবনযাত্রার পরিবর্তনের ফলে মানুষের শরীরে দানা বাঁধছে একাধিক কঠিন রোগ। এর মধ্যে একটি হল ক্যারোটিড আর্টারি ডিজিজ (carotid artery disease)। জেনে নিন এই রোগের লক্ষণ কী কী। রোগের চিকিৎসাই বা করা হয় কীভাবে।  

আধুনিকতার দৌড়ে বদল ঘটেছে আমাদের জীবনযাত্রায়। বদল ঘটেছে খাদ্যভ্যাসে। কাজের চাপে শরীরচর্চা সময় পান না অনেকেই। ফলে দিন কাটে কমপিউটারে মুখ গুঁজে। আর এই সবের ফলস্বরূপ শরীরে দানা বাঁধছে একের পর এক কঠিন রোগ। এখন রোগের কোনও বয়স নেই। কোন বয়সে যে কে কোন রোগ আক্রান্ত হবে, তা বোঝা মুশকিল। এমনই কঠিন রোগের মধ্যে একটি হল ক্যারোটিড আর্টারি ডিজিজ (carotid artery disease)। জেনে নিন এই রোগের লক্ষণ কী কী। রোগের চিকিৎসাই বা করা হয় কীভাবে। 


ক্যারোটিড আর্টারি ডিজিজের লক্ষণ- 
হঠাৎ করে আপনার শরীরের একপাশে কিংবা হাত, পা বা মুখের দুর্বলতা বা অসাড়তা দেখা দিলে সতর্ক হন। কখনও যদি দেখেন দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পাচ্ছে বা এক চোখে ঝাপসা দেখছেন তৎক্ষণাত ডাক্তারি পরামর্শ নেবেন। মাথা ঘোরা, বিভ্রান্ত লাগা, অজ্ঞান হওয়ার সমস্যা দেখা দিসে উপেক্ষা করবেন না। এই লক্ষণগুলি ক্যারোটিড আর্টারি ডিজিজের) লক্ষণ হিসেবে চিহ্নিত। তাই অসুবিধা বুঝলেই ডাক্তারি পরামর্শ নিন। 

আরও পড়ুন: Fashion Tips: পারফিউম লাগাতেই তা উবে যাচ্ছে, বেশিক্ষণ সুগন্ধ ধরে রাখতে এবার এই টিপস কাজে লাগান

ক্যারোটিড ধমনী রোগ সন্দেহ হলে এই দুই পরীক্ষা করা যেতে পারে। জেনে নিন কোন দুই পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ চিহ্নিত করা হয়। 
ক্যারোটিড ধমনী আল্ট্রাসাউন্ড: এই পরীক্ষাটি শব্দ তরঙ্গ ব্যবহার করে করা হয়। এটি টিভি স্ক্রিনে ক্যারোটিড ধমনীর একটি চিত্র তৈরি করে এবং ক্যারোটিড ধমনীতে কী কী সমস্যা আছে তা সনাক্ত করতে সহায়ক হতে পারে। এই পরীক্ষাটি ব্যথাহীন। এতে সূঁচ বা এক্স-রে ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না।
এনজিওগ্রাফি: একটি এনজিওগ্রাম করতে আপনার ক্যারোটিড ধমনীর ছবি তোলার জন্য এক্স-রে ব্যবহার করে। এক্স-রের সাহায্যে আপনার ধমনীর সমস্যা চিহ্নিত করে।  এক্ষেত্রে ছোট টিউব শরীরে প্রবেশ করানো হয়। এই পদ্ধতিটি ধমনীর ঠিক কোথায় সংকীর্ণতা রয়েছে তা নির্ধারণ করে। 

আরও পড়ুন: Weight Loss- ওজন কমাতে চান, রাতে ঘুমানোর আগে এই বিষয়গুলি মেনে চলুন

ক্যারোটিড আর্টারি ডিজিজের চিকিৎসা-
•    ক্যারোটিড এন্ডার্টারেক্টমি (Carotid endarterectomy )- ক্যারোটিড এন্ডার্টারেক্টমি একটি অস্ত্রোপচার পদ্ধতি যা আপনার ক্যারোটিড ধমনীর ভিতর থেকে প্লেক অপসারণ করে। একজন সার্জন আপনার ঘাড়ে একটি ছেদ তৈরি করবেন, আক্রান্ত ধমনীতে প্রবেশ করবেন, এটি খুলবেন এবং প্লেক তৈরি করে ফেলবেন। সার্জন তারপর সেলাই ব্যবহার করে ধমনী এবং ছেদ বন্ধ করবেন।

•    ট্রান্সক্যারোটিড আর্টারি রিভাসকুলারাইজেশন (TCAR)- ক্যারোটিড ধমনী রোগে ভুগছেন এমন রোগীদের জন্য যারা ওপেন সার্জারি করাতে পারে না, তাদের TCAR নামক এই সার্জারি করানো হয়। এতে আপনার ক্ল্যাভিকলের উপরে একটি ছোট ছিদ্রের মাধ্যমে একজন সার্জন আপনার ক্যারোটিড ধমনীতে একটি টিউব রাখে এবং এটিকে এমন একটি সিস্টেমের সাথে সংযুক্ত করে যা অস্থায়ীভাবে আপনার মস্তিষ্ক থেকে রক্ত প্রবাহকে নির্দেশ করে। এতে একটি ক্যারোটিড স্টেন্ট লাগানো হয়। যা ভবিষ্যতে স্ট্রোক প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। 

•    ট্রান্সফেমোরাল ক্যারোটিড ধমনী স্টেন্টিং (Transfemoral carotid artery stenting)- এক্ষেত্রে একটি ছোট, ছাতার মতো ফিল্টারটি ক্যারোটিড ধমনীর রোগাক্রান্ত অঞ্চলের বাইরে স্থাপন করা হয়। চিকিৎসার পর একটি পাতলা, ধাতব টিউব ধমনীতে ঢোকানো হয়। যাকে স্টেন্ট বলা হয়। যা আপনার ক্যারোটিড ধমনীকে প্রসারিত করে মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ বাড়ায় এবং প্লেককে স্থিতিশীল করে। 
 

YouTube video player