সংক্ষিপ্ত
আজকাল সারাক্ষণ মোবাইল স্ক্রল করে চলেছেন। জানেন কি সারাক্ষণ মোবাইল স্ক্রল করে নিজের কত বড় বিপদ ডেকে আনছেন। এই অভ্যেস থেকে শরীরে দানা বাঁধছে একাধিক রোগ।
অফিসে কাজ করতে করতে চোখ ধাঁধিয়ে যাচ্ছে। চোখের বিশ্রাম দিতে কমপিউটার স্ক্রিন থেকে চোখ সরিয়ে মোবাইলে ফেসবুক (Facebook) ঘাঁটতে শুরু করলেন। অথবা রাতে বিছায়ায় শুয়ে ঘুম না আসায় কারণ ছাড়াই অনলাইন শপিং সাইট (Shopping Sites) ঘাঁটতে শুরু করলেন। পড়ার ফাঁকে টুক করে দেখে নিলেন বন্ধুর নতুন স্ট্যাটাস। কিংবা, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডার মাঝে একবার সোশ্যাল মিডিয়া (Social Media) খুলে দেখে নিলেন কে কী আপডেটস দিয়েছে। এটা রোজকার কাহিনি। মোবাইল স্ক্রল করতে কোনও কারণ লাগে না। আজকাল সবাই, কারণ ছাড়া সারাক্ষণ মোবাইল স্ক্রল করে চলেছেন। সে ব্যস্ততার মাঝেই হোক কিংবা ফাঁকা সময়। সজ্ঞানে কিংবা নিজের অজান্তে কতক্ষণ যে মোবাইল ঘাঁটেন তা সঠিক করে কেউ বলতে পারবে না। তবে, জানেন কি সারাক্ষণ মোবাইল স্ক্রল করে নিজের কত বড় বিপদ ডেকে আনছেন।
সম্প্রতি, প্রকাশিত একটি রিপোর্টে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর একটি তথ্য। জানা গিয়েছে, সারাদিন মোবাইল ঘাঁটতে গিয়ে আমরা আন-সোশ্যাল হয়ে যাচ্ছি। সোশ্যাল মিডিয়ার প্রধান লক্ষ্য হল মানুষ এবং তথ্যের সাথে সংযোগ করা। কিন্তু, আমরা প্রায়শই আমাদের নিজের এবং আমাদের চারপাশের লোকেদের সাথে সংযোগ করতে ভুলে গিয়ে মোবাইল স্ক্রল করে চলি। তাই শুধু ভার্চুয়াল দুনিয়ায় নয়, বাস্তব দুনিয়াতেও চারপাশের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন।
আরও পড়ুন: Weight Loss- ওজন কমাতে চান, রাতে ঘুমানোর আগে এই বিষয়গুলি মেনে চলুন
সারাক্ষণ স্ক্রলিং, টেক্সটিং এবং গেমিং-এর জন্য সমস্ত আঙুলের ক্র্যাম্পিং এবং কালশিটে হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এর সঙ্গে ধরতে পারে স্পন্ডিলাইটিস। মূলত, ঘাড় নিচু করে ফোন ঘাঁটি। এতে ঘাড়ে ব্যথা হওয়া সাধারণ বিষয়। এছাড়াও, দেখা দিতে পারে ব্যাক পেইনের (Back Pain) সমস্যা। এছাড়া, চোখে সমস্যা (Eye Problem) হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে প্রতি পদক্ষেপে। ক্ষুদ্র হরফের দিকে তাকানোর জন্য চোখের চাপ, দৃষ্টি ঝাপসা হওয়া, মাথা ঘোরা এবং শুষ্ক চোখের সমস্যা হতে পারে। ঝাপসা দৃষ্টি এবং ঘাড়ের পেশীতে ব্যথাও মাথাব্যথার কারণ হতে পারে। তাই নির্দিষ্ট সময় পর সোশ্যাল মিডিয়া থেকে লগ অফ হন। বিরতি নিন মোবাইল থেকে। তা না হলে, এই সকল শারীরিক সমস্যায় ভুগতে পারেন।
অনেকের মধ্যে দেখা দেয় ফ্যান্টম পকেট ভাইব্রেশন সিন্ড্রোম। একটি গবেষণায় একজন অধ্যাপক দেখেছেন যে ক্লাস চলাকালীন ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ৮৯ শতাংশ ফ্যান্টম ভাইব্রেশন (phantom vibration syndrome) অনুভব করেছেন। যখন তাদের ফোন আসলে ভাইব্রেট করছিল না, তখন তাদের মনে হচ্ছে ফোন ভাইব্রেট হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে এই সমস্যা সকলে উপেক্ষা করলেও, পরে এটা বড় আকার নিতে পারে।
এর সঙ্গে দেখা দেয়, নোমোফোবিয়া (Nomophobia)। নো মোবাইল ফোন ফোবিয়া। যুক্তরাজ্যের ১,০০০ জন লোকের উপর করা একটি সমীক্ষা করা হয়। যেখানে দেখা যায় ৬৬ শতাংশ ফোন হারানোর ভয় পান। সেল ফোন হারিয়ে ফেলেন বা ব্যবহার করতে না পারেন, আপনার কাছে আপনার ফোন আছে কিনা তা বার বার নিশ্চিত করা এবং এটি কোথাও হারিয়ে যাওয়ার বিষয়ে ক্রমাগত উদ্বিগ্ন হওয়ার সমস্যায় ভোগেন। মজার ব্যাপার হল, সমীক্ষায় দেখা গেছে পুরুষের তুলনায় নারীরা এই ফোবিয়ায় বেশি ভোগেন।