দীপাবলি হলো আমাদের আলোক উৎসব। এই আলো আমরা প্রদীপ জ্বালিয়ে এবং আতশবাজি পুড়িয়ে অন্ধকারকে চিরদিনের মত দূর করে আলোর পথে হাঁটার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হই। কিন্তু হঠাৎ বাজিতে হাত পুড়লে কিভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা করবেন জানা যাক।
দীপাবলি আলোর উৎসব। অন্ধকার ঘুচিয়ে আলোয় ফেরার যাত্রা। পুরাণ মতে, এই তিথিতে অত্যাচারী নরাকাসুরকে বধ করেন শ্রীকৃষ্ণ ও তাঁর স্ত্রী সত্যভামা। নরকাসুরের অন্ধকার থেকে জাতিকে আলোয় নিয়ে যাওয়ার উৎসব হিসেবেই এই দীপাবলি পালন। সেই সুবাদে বাড়ির বড়রা ছোটরা সকলেই অল্পবিস্তার হলেও বাজি ফোটান। কিন্তু বাড়ির খুদেরা বাজি ফোটাবে সেক্ষেত্রে প্রয়োজন অধিক সতর্কতা। হঠাৎ যদি কোন রকম অঘটন ঘটে সেক্ষেত্রে কি করবেন আগে থেকে জেনে রাখুন।
বাজির আগুনে হাত বা পা পুড়ে গেলে প্রথমেই ঠান্ডা জলে কিছুক্ষণ ধরে রাখুন বা ঠান্ডা সেঁক দিন। এরপর দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন, বিশেষ করে যদি ক্ষত গভীর হয় বা বেশি জায়গা জুড়ে হয়।
পোশাক পুড়ে গেলে তা হাত দিয়ে নেভানোর চেষ্টা না করে শরীর থেকে দ্রুত খুলে ফেলুন এবং ধোঁয়া থেকে দূরে থাকুন। জরুরি পরিস্থিতিতে ভয় না পেয়ে শান্ত থাকুন ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন।
** প্রাথমিক চিকিৎসা:
* ঠান্ডা জল: আহত স্থানকে ঠান্ডা, পরিষ্কার জলের নিচে কিছুক্ষণ ধরে রাখুন। জল না থাকলে, একটি পরিষ্কার কাপড় ঠান্ডা জলে ভিজিয়ে ক্ষতস্থানে দিন।
* বরফ নয়: সরাসরি বরফ লাগাবেন না, কারণ এটি ত্বকের ক্ষতি করতে পারে।
* পোশাক: যদি পোশাক পুড়ে যায়, তবে তাড়াতাড়ি সেটি খুলে ফেলুন। যদি পোশাক ত্বকের সাথে লেগে যায়, তবে জোর করে সেটি তোলার চেষ্টা করবেন না।
* পোড়া অংশে কিছু লাগাবেন না: পোড়া অংশে কোনো ধরনের তেল, লোশন বা মলম লাগাবেন না। এটি সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
* ক্ষতস্থান: কোনোভাবেই ক্ষতস্থান ফাটানো বা স্পর্শ করার চেষ্টা করবেন না।
* ব্যথানাশক: খুব বেশি ব্যথা হলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যথানাশক ওষুধ খেতে পারেন।
** জরুরি অবস্থা কী কী নিতে পারেন:
* গুরুতর পোড়া: যদি পোড়া গুরুতর হয়, অর্থাৎ চামড়া উঠে যায় বা ফোসকা পড়ে, তাহলে অবিলম্বে ডাক্তারের কাছে যান।
* শ্বাসকষ্ট: ধোঁয়া বা আগুনের ধোঁয়ার কারণে যদি শ্বাসকষ্ট হয়, তাহলে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
* অগ্নি নির্বাপণ: যদি আগুন লেগে যায়, তাহলে আতঙ্কিত না হয়ে দ্রুত আগুন নেভানোর চেষ্টা করুন বা ফায়ার সার্ভিসে খবর দিন।
* প্রতিরোধের উপায়:
* বাজি ফাটানোর সময় নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন।
* খোলা জায়গায় বা বড় কোনো জায়গায় বাজি ফাটান, যেখানে আগুন লাগার ঝুঁকি কম।
* অপরিচিত বা মেয়াদোত্তীর্ণ বাজি ব্যবহার করবেন না।
* বাজির প্যাকেটের নির্দেশিকাগুলো অনুসরণ করুন।
* বাজি ফাটানোর পর আশেপাশে কোনো জ্বলন্ত জিনিস আছে কিনা তা দেখে নিন।
* শিশুদের বাজি ফাটানোর সময় বড়দের তত্ত্বাবধানে রাখুন।
