শিশুর অবাধ্যতা ও রুক্ষ আচরণে চিন্তিত? সন্তানের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য স্নেহের পাশাপাশি প্রয়োজন সীমা ও শৃঙ্খলা। কিছু দৃঢ় পদক্ষেপে সমাধান জেনে নিন।
নানারকম পরিস্থিতিগত কারণে আজকের দিনে শিশুদের আচরণে নানা পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। অনেক সময় সন্তানরা বাবা-মায়ের মুখের উপর কথা বলে, রুক্ষ ভাষায় উত্তর দেয়, কিংবা যুক্তি দিয়ে তর্ক জুড়ে দেয়। শিশুদের নিজের মন এবং অনুভূতি প্রকাশ করা উচিত ঠিকই, তবে অসংযত ও অবাধ্য আচরণ শিশুর ভবিষ্যতের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।
সন্তানের সঠিক মানসিক বিকাশের জন্য যতটা প্রয়োজন স্নেহ, ঠিক ততটাই প্রয়োজন সীমা ও শৃঙ্খলা। তাই এমন পরিস্থিতিতে বাবা-মায়ের উচিত সন্তানের ভালর জন্য কিছু দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
তবে পরিস্থিতি সামলাতে করণীয় কী?
১। মাথা ঠান্ডা রাখুন
সন্তান যদি তর্কে লিপ্ত হয়, রাগের মাথায় শাস্তি দেওয়ার আগে ঠান্ডা মাথায় ভাবুন। চিৎকার বা মারধর করলে তার আত্মবিশ্বাস ভেঙে যেতে পারে, আবার সে আরও বিদ্রোহী হয়ে উঠতে পারে।
বরং শান্তভাবে চোখে চোখ রেখে বলুন, তাকে বোঝান এইভাবে কথা বললে আপনি কষ্ট পান, শান্তভাবে কথা বললে সবাই তার কথা শুনবে।
২। নিয়ম ও সীমারেখা তৈরি করুন
শিশুরা যখন জানে না কী আচরণ গ্রহণযোগ্য, তখন তারা নিজের মতো আচরণ করে। তাই ঘরে একটা স্পষ্ট নিয়ম ঠিক করুন—বড়দের সঙ্গে কেমন কথা বলতে হয়, কেমন আচরণ গ্রহণযোগ্য নয় এসব। পরিবারের সবার উপস্থিতিতে এই নিয়মগুলো ব্যাখ্যা করুন, যেন বিষয়টি গুরুত্ব পায় সবার মাঝে।
৩। ছোটদের কথা গুরুত্ব দিয়ে শুনুন
অনেক সময় সন্তানদের কথা গুরুত্ব না দিলে, তারা প্রতিবাদী হয়ে পড়ে। আপনার সন্তান কেন জোর গলায় কথা বলছে, তার পেছনে কোনও চাপ বা কষ্ট আছে কি না, তা বোঝার চেষ্টা করুন।
জিজ্ঞেস করুন, কী সমস্যা হচ্ছে বাচ্চার, কী কারণে এমন আচরণ করছে তারা। আপনার সাথে খোলাখুলি কথা বললে, ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠবে। নিজেকে নিরাপদ ভাববে এবং ধীরে ধীরে রেগে না গিয়ে বলার অভ্যাস গড়ে তুলবে।
৪। ভালো আচরণের জন্য প্রশংসা করুন
যখন সন্তান সঠিকভাবে কথা বলে বা ধৈর্য রাখে, তখন তাকে শুধু প্রশংসা নয়, প্রয়োজন হলে সামান্য উপহার দিন। এতে ভালো আচরণের প্রতি তারা উৎসাহ পাবে। কৃতজ্ঞতা জানানো শিশুকে মানসিকভাবে শান্ত ও ভালো করে তুলবে, বিষয়টি আরও গুরুত্বের সাথে দেখবে।
৫। নিয়মানুবর্তিতা
একবার বুঝিয়ে কাজ না হলে, ধৈর্য ধরে বারবার বুঝিয়ে যেতে হবে। আচরণ পরিবর্তনের জন্য সময় দিন।
তবুও আচরণে উন্নতি না হলে, তবে চাইল্ড কাউন্সেলর বা মনোবিদের সাহায্য নিন। কারণ সমস্যার পেছনে থাকতে পারে অবসাদ, উদ্বেগ, আত্মমর্যাদার সংকট বা পারিবারিক চাপ।
সারাংশ সবার মুখের ওপর রুক্ষভাবে কথা বলছে শিশু, ভালোবেসে বা বকাবকি করেও সামলানো যাচ্ছে না, বুঝতে চাইছেনা সন্তান। ভবিষ্যতে চলার পথে ক্ষতির আশঙ্কায় চিন্তায় মা-বাবা। স্বভাবে পরিবর্তন আনতে অভিভাবকদের জন্য রইলো কিছু পরামর্শ।


