কাগজের নৌকা ভাসানো, কাদায় লুটোপুটি, বৃষ্টিতে ভিজে খেলার আনন্দ শিশুদের মধ্যে আর কই? বর্ষায় ফিরুক পুরনো দিনের শৈশব, প্রকৃতির স্পর্শে সন্তানের সঙ্গে সময় কাটান অভিভাবকরা।
আজকের শহুরে জীবনে সন্তানেরা বড় হচ্ছে কংক্রিটের চার দেওয়ালের মাঝে—না আছে খেলার মাঠ, না আছে প্রাকৃতিক ছোঁয়া। মোবাইল আর টিভির স্ক্রিনেই সীমাবদ্ধ হয়ে উঠেছে তারা। বর্ষার এই সবুজ সতেজ পরিবেশে শিশুরা কেবল জানালা দিয়েই তাকিয়ে থাকে। কাগজের নৌকা ভাসানো, কাদায় লুটোপুটি, বৃষ্টিতে ভিজে খেলার আনন্দ তাদের মধ্যে আর কই?
বৃষ্টিভেজা ছুটির দিনে নির্ভেজাল আনন্দের স্বাদ দিতে দরকার একটু সময় আর তাদের মতো করে ভাবা। এমন দিনে কী ভাবে সন্তানের সঙ্গে সময় কাটাতে পারেন?
১। বৃষ্টির জলে শিল্প
একটু কল্পনা আর কিছু রং-তুলির সাহায্যে বৃষ্টিকে করে তুলুন রঙিন শিল্পের মাধ্যম। মোটা কাগজে বা পিজবোর্ডে স্কেচপেন দিয়ে আঁকতে বলুন সন্তানকে। তার পর সেটি রাখুন বৃষ্টির ছাঁটে ভেজা বারান্দায় বা ছাদে। জলের ছিটেয় আঁকা ছবির রং ধেবড়ে বা ঘেঁটে গিয়ে অন্য রকম নকশা হবে—এই অভিজ্ঞতা শিশুদের কল্পনা শক্তি ও পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা বাড়াবে।
২। হাতেকলমে শিখুক
কাচের পাত্রে ভেজা তুলোয় বা টিস্যুতে রেখে দিন ছোলা/মটর বীজ। প্রতিদিনের পরিবর্তন লিখে রাখতে বলুন তাকে। চারা হওয়া, সেটির বেড়ে ওঠা, গাছের যত্ন ধীরে ধীরে প্রত্যক্ষ করবে সন্তান। এই খেলাই হতে পারে বিজ্ঞানের প্রথম পাঠ।
৩। কাদামাটি দিয়ে খেলা
বাড়ির ছাদ বা বারান্দায় পুরনো বাসন নিয়ে তৈরি হোক ছোট রান্নাঘর। কাদা, গাছের পাতা, ফুল—সবই হোক খেলনার উপকরণ।শিশুরা নিজেই গল্প বানাবে, মাটি দিয়ে ‘লুচি’ বানাবে, বিভিন্ন আকার দিয়ে কল্পনার জগৎ বানাবে। এর ফলে স্পর্শ, গঠন ও আকার ধারণা তৈরি হবে। খেলতে খেলতেই গাছগাছালি, ফুল, ফল, পাখি চিনবে সে।
৪। জলযান
কাগজ, পাতা, ছাল বা বোতল ক্যাপ দিয়ে বানান নৌকা। শিশুর সঙ্গে ভাসিয়ে দিন জমা জলে। বুঝিয়ে দিন কেন কিছু ভাসে, কিছু ডুবে যায়—বিজ্ঞান শেখানোর মজার উপায়।
৫। বৃষ্টির শব্দ নিয়ে খেলা
বৃষ্টির শব্দ নিয়েও খুদের সঙ্গে খেলায় নামতে পারেন। বালতিতে জল পড়লে কেমন শব্দ হয়, টিনের পাত্রে কেমন, মাটির হাঁড়িতে জল পড়ার শব্দের তফাত কোথায় খুদে বুঝবে নিজে থেকেই। জিজ্ঞেস করুন কোনটা কীসের শব্দ, কোন শব্দটা কেমন লাগছে, কীসে বেশি মজা—এতে শ্রবণ শক্তি ও মনোযোগ বৃদ্ধি পাবে।
