সংক্ষিপ্ত

সারা গ্রামের মহিলারাই নগ্ন থাকেন এখানে। বছরের পর বছর ধরে এই ঐতিহ্য পালন হয়ে আসছে ভারতের এই গ্রামে। 

পৃথিবী একবিংশ শতাব্দীতে পৌঁছেছে, কিন্তু আজও এমন অনেক ঐতিহ্য রয়েছে, যা জানলে অবাক হবেন। আপনি বিশ্বাস করবেন না যে এই ঘটনা এখনও ভারতে ঘটে। দেশের প্রতিটি অঞ্চলে এখনও কিছু পুরোনো রীতি রয়েছে যা অনুসরণ করা হয়। হিমাচল প্রদেশের পার্বত্য রাজ্যের মণিকর্ণ উপত্যকার পিনি গ্রামে এখনও একটা অদ্ভুত ঐতিহ্য অনুসরণ করা হয়।

প্রতি বছর শ্রাবণ মাসে পিনি গ্রামে এই অদ্ভুত রীতি পালন করা হয়। বহু বছর ধরে এখানকার মহিলারা এই প্রথা মেনে চলেছেন। এটা বিশ্বাস করা হয় যে বিবাহিত মহিলাদের পাঁচ দিন পোশাক পরা উচিত নয়। কোনো মহিলা এই সময় পোশাক পরলে কোনো অশুভ সংবাদ শুনতে পারে এবং কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে তার বাড়িতে। গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে এই প্রথা অনুসরণ করা হয়।

তা ছাড়া এই পাঁচ দিন স্বামী-স্ত্রী একে অপরের সঙ্গে কথাও বলে না। তারা একে অপরের থেকে দূরে থাকে। মহিলারা এই গ্রামে যখন এই ঐতিহ্য অনুসরণ করে, তখন পুরুষকে মদ খেতে হয় না। এই ঐতিহ্য ১৭ আগস্ট থেকে ২১ আগস্ট পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। স্থানীয়দের বিশ্বাস, এটি করা না হলে দেবতারা ক্রুদ্ধ হবেন। তারা অভিশাপ দেবেন, যা গ্রামের জন্য খুব ক্ষতিকর হতে পারে। নেমে আসতে পারে দেবতার ক্রোধ ও রোষ।

প্রকৃতপক্ষে, কথিত আছে যে যখন দেবতা লাহুয়া ঘোন্ড পিনি গ্রামে আসেন, তখন অসুররা এখানে ত্রাস সৃষ্টি করেছিল, কিন্তু দেবতা পিনিতে আসার সাথে সাথে অসুররা ধ্বংস হয়ে যায়। সেই থেকে এই প্রথা চলে আসছে, যা এখনও সেখানকার মানুষ পালন করে আসছে। লোকে বলে যে বহু শতাব্দী আগে একটি রাক্ষস সুন্দর পোশাক পরা মহিলাদের নিয়ে যেত। এটা বিশ্বাস করা হয় যে আজও দেবতা লাহুয়া এই গ্রামে আসেন এবং খারাপের বিরুদ্ধে লড়াই করেন। তাই এই সময় মহিলারা কাপড় পরলে, রাক্ষস তাদের ধরে নিয়ে যাবে।

তবে সময়ের সাথে সাথে অনেক কিছুই বদলে গেছে। এখন নারীরা এই প্রথা মেনে পাঁচ দিন পোশাক বদলান না। এখন তাঁরা খুব পাতলা কাপড় পরে। কিন্তু আগে নারীরা পাঁচ দিন কাপড় পরতেন না। তারা কেবল পশমের তৈরি পাট্টু পরেই থাকতেন। এই দিনগুলিতে গ্রামে কেউ মাংস এবং মদও খায় না।