সংক্ষিপ্ত
- আগমনীর পথে মা দুর্গা
- দেবীর দশ হাতে থাকে দশটি অস্ত্র
- এই দশটি অস্ত্রই আলাদা অর্থ বহন করে
- এই সবকটি অস্ত্রের সাহায্যেই অসুর নিধন করেছিলেন মা দুর্গা
মা দুর্গা আগমনীর পথে। বছর ঘুরে আবার নিজের বাপের বাড়ি ফিরছে মা। তাই আনন্দে মাতোহারা সকলেই। কাশ ও শিউলি ফুলে সেজে উঠেছে চারিদিক। উঠবে ঢাক ও কাঁসর ধ্বনির রব। প্রান প্রতিষ্ঠা হবে মা দুর্গার দেহে, মৃন্ময়ী মা ধীরে ধীরে চিন্ময়ী রূপ ধারন করবেন। আর মায়ের দশ হাত শোভা পাবে দশটি অস্ত্র। শঙ্খ, সাপ তীর-ধনুক, ত্রিশূলে সজ্জিত মা দুর্গার হাত। শোনা যায় এই সবকটি অস্ত্রের সাহায্যেই নাকি অসুর নিধন করেছিলেন মা দুর্গা। তবে শুধু তাই নয়, মায়ের দশ হাতের দশটি অস্ত্রই আলাদা আলাদা অর্থ বহন করে। জানেন কোন অস্ত্র ঠিক কি অর্থ বহন করে? কেনই বা এই অস্ত্রগুলি থাকে মায়ের হাতে? তবে আসুন তা জেনে নেওয়া যাক।
শঙ্খ-
শঙ্খ হল সৃষ্টির প্রতীক। পুরাণ মতে শঙ্খ থেকে উৎপন্ন শব্দেই প্রাণের সৃষ্টি হয়েছে আমাদের এই জীব জগতে। আর দেবী তো মা। তাই তিনিই সমস্ত পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা। সেজন্যই মা দুর্গার হাতে শঙ্খ থাকে।
চক্র-
চক্র অর্থাৎ আবর্তন। দেবী দুর্গার হাতে চক্র থাকার অর্থ হল সমস্ত সৃষ্টির কেন্দ্রে রয়েছেন মা। তাই তাঁকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়ে চলেছে সমস্ত বিশ্ব।
পদ্ম-
দেবীর হাতের পদ্ম অসাধারন বার্তা দেয় সমাজকে। পাঁকের মধ্যে জন্মানো সত্ত্বেও পদ্মের রূপ মুগ্ধ করে সকলকে। তাই মায়ের হাতে পদ্ম থাকার অর্থ হল, মায়ের আশীর্বাদে যেন অসুরকূলও তাঁদের ভিতরের অন্ধকার থেকে মুক্ত হয়।
তলোয়ার বা খড়্গ -
খড়্গ বা তলোয়ারের ধার আসলে মানুষের মগজাস্ত্রের বুদ্ধির ধার। আর এই ধার দিয়েই যাতে সমাজের সমস্ত বৈষম্য ও অশুভকে মানুষ জয় করতে পারে। সেই বার্তাই বহন করেন মা দুর্গার হাতের খড়্গ বা তলোয়ার।
তীর-ধনুক-
মনুষ্য শরীরের ভিতরে যে অন্তর্নিহিত শক্তি রয়েছে তারই প্রকাশ ঘটে ধনুর টঙ্কারে। আর এই ধনু টঙ্কারের সঙ্গে জুড়ে থাকে তীর যা এই ধনুর টঙ্কারে প্রকাশিত শক্তির ভারকে বহন করে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত হানে। মানব দেহে সেই শক্তির সঞ্চার করতেই মা দুর্গা নিজের হাতে তীর-ধনুক বহন করেন।
ত্রিশূল-
ত্রিশূলের তিনটি তীক্ষ্ণ ফলার তিনটি ফলার তিনটি আলাদা আলাদা অর্থ রয়েছে। মানুষ তিনটি গুনের সমন্বয়ে তৈরি। যেগুলি হল- তমঃ, রজঃ, এবং সত্ত্ব। এই তিনটি গুণকেই নির্দেশ করে ত্রিশূলের তিনটি ফলা।
দণ্ড বা গদা-
দণ্ড হল আনুগত্য, ভালোবাসা, এবং ভক্তির প্রতীক।
বজ্র বা অশনি-
মা দুর্গার হাতের অশনি দৃঢ়তা এবং সংহতির প্রতীক। এই দুই গুণের মাধ্যমেই জীবনে নিজের লক্ষ্যে পৌঁছতে সক্ষম হন মানুষ।
সাপ- চেতনার নিম্ন স্তর থেকে উচ্চ স্তরে প্রবেশ এবং বিশুদ্ধ চেতনার চিহ্ন এই সাপ।
অগ্নি- দেবীর এক হাতে থাকে অগ্নি। এই অগ্নি জ্ঞান এবং বিদ্যার প্রতীক।