সংক্ষিপ্ত
- চিনের উহানে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ
- দেশের নাগরিকদের ফেরাচ্ছে ভারত সরকার
- কিন্তু উল্টো সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইমরান খান সরকার
- পাক সরকারের সিদ্ধান্তে উহানেই বন্দি পাকিস্তানিরা
চিনের উহানে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে দিশেহারা মানুষ। ইতিমধ্যেই গোটা চিনে করোনা ভাইরাস-এ আক্রান্ত হয়ে ৩০০-র বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। করোনা উপদ্রুত উহান থেকে ইতিমধ্যেই ছ'শো জনের বেশি ভারতীয়কে বিশেষ বিমানে দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করেছে ভারত সরকার।
আর ভারতীয়রা যখন দেশে ফেরার বিমান ধরছেন, তখন কার্যত চোখের জল ফেলা ছাড়া কোনও উপায় নেই উহানে বন্দি হয়ে থাকা পাক নাগরিকদের। ভারতের মতোই পাকিস্তানেরও বহু ছাত্রছাত্রী উহানে উচ্চশিক্ষার জন্য যান। উহানে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ মারণ রূপ ধারণ করার পর সেই পড়ুয়াদেরই এখন অসহায় অবস্থা। কারণ ইমরান খান সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বন্ধু রাষ্ট্র চিনের প্রতি সহমর্মিতার বার্তা দিয়েই কোনও নাগরিককেই সেখান থেকে ফেরাবে না তারা।
ইমরান সরকারের এই সিদ্ধান্তের পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন চিনে বসবাসকারী পাক নাগরিক এবং পড়ুয়ারা। কারণ তাঁদের সামনে দিয়েই দেশে ফেরার বিমানে উঠছেন ভারতীয়রা। উহানে বন্দি হয়ে পড়া পাকিস্তানি পড়ুয়াদের এখন তাই চোখের জল ফেলা ছাড়া আর কোনও গতি নেই। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের অসহয়তার কথা তুলে ধরেছেন তাঁরা। একই সঙ্গে নিজেদের দেশের সরকারের উপরেও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন পাক নাগরিকরা।
আরও পড়ুন- কেরলে দ্বিতীয় করোনা ভাইরাস আক্রান্তের খোঁজ, হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে ৭০ জন
আন্তর্জাতিক সংবাদসংস্থার দাবি অনুযায়ী, বিপদে পড়ে চিনে পাক দূতাবাসের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিলেন সেদেশের বেশ কিছু পড়ুয়া। কিন্তু গত দু' দিনে দূতাবাসের তরফেও কোনও সাড়া মেলেনি। ক্ষুব্ধ পাকিস্তানি পড়ুয়ারা প্রশ্ন তুলে বলেছেন. 'ওঁরা বলছেন আমাদের দেশে ফেরানো যাবে না। কিন্তু অন্যান্য দেশ তো তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিচ্ছে। চিন সরকারের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। কিন্তু আমাদের ভাল মন্দ দেখার দায়িত্ব তো পাকিস্তান সরকারের।'
এরকমই একটি ভিডিও-তে এক পাক পড়ুয়াকে বলতে শোনা যাচ্ছে, 'ভারত সরকার তাদের দেশের পড়ুয়াদের দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করছে। বাংলাদেশও তাই করছে। পাকিস্তান সরকার ভারতকে দেখে কিছু শিখুক।'
উহানের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সবমিলিয়ে ৮০০ পাকিস্তানি পড়ুয়া রয়েছেন। পাকিস্তানের অবশ্য দাবি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ মেনেই আপাতত চিন থেকে কাউকে ফেরাচ্ছে না তারা। পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষ সহকারী জাফর মিরজা বলেন, 'আমরা মনে করি গোটা দেশ, এই অঞ্চল এবং বিশ্বের স্বার্থেই এই মুহূর্তে চিন থেকে কাউকে ফিরিয়ে আনা হবে না। চিনে আমাদের যে প্রিয়জনরা রয়েছেন, তাঁদের স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। '
মিরজা অবশ্য স্বীকার করেছেন চিনে পড়তে যাওয়া চারজন পাকিস্তানি পড়ুয়ার দেহে করোনা ভাইরাসের খোঁজ মিলেছে। ওই পাক আধিকারিকের অবশ্য দাবি, পড়ুয়াদের না ফেরানোর অর্থ এই নয় যে পাক সরকার তাঁদের নিয়ে ভবিত নয়।
ভারত অবশ্য উহান থেকে দ্রুত দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার বন্দোবস্ত করেছে। রবিবার সকালে উহান থেকে দ্বিতীয় বিমানে ৩২৩ জন ভারতীয় দেশে ফিরেছেন। তার মধ্যে ২১১ জন পড়ুয়া, ১১০ জন বিভিন্ন পেশায় যুক্ত মনুষ এবং তিনজন শিশু ফিরেছেন।
চিনের উহানেই প্রথম থাবা বসায় করোনা ভাইরাস। সেখান থেকে তা একুশটি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। শুধুমাত্র চিনেই মৃত্যু হয়েছে তিনশোরও বেশি আক্রান্তের।