সংক্ষিপ্ত

মাটি খুঁড়তেই বেরিয়ে এসেছিল বিরল বুদ্ধমূর্তি

সেনা প্রত্যক্ষ মদতে ভেঙে ফেলা হল তা

ফের সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগে কাঠগড়ায় পাকিস্তান সরকার

অনেকেই বলছেন অমরানের সময়ে পাকিস্তানে যেন তালিবানি শাসন কায়েম হয়েছে

 

নির্বাচনে জেতার আগে থেকেই নয়া পাকিস্তান' গঠনের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন ইমরান খান। সেইসময়ে অনেকে মনে করেছিল, অর্থনৈতিক দিক থেকে হয়তো পাকিস্তানকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন তিনি। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে নয়া পাকিস্তানের নামে, তাঁর আমলে পাকিস্তান অনেকটাই তালিববানি শাসনের আফগানিস্তানে পরিণত হচ্ছে। সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা পাকিস্তানে বরাবরই ছিল, কিন্তু ইমরানের সময়ে তা যেন লাগামছাড়া হয়ে উঠেছে। এবার, খোদ পাক সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানেই ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল এক প্রাচীন বিরল বুদ্ধ মূর্তি। এই ঘটনা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ইমরান খান সরকারকে দারুণ বিব্রতকর অবস্থায় ফেলল বলে মনে করা হচ্ছে।

ঘটনাটি ঘটেছে পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমের খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশে। সেখানকার মর্দান শহরের তখতভাই এলাকায় সম্প্রতি এক নির্মাণকাজ চলাকালীন মাটি খুঁড়তে গিয়ে এক প্রাচীন বুদ্ধ মূর্তি মিলেছিল। জানা গিয়েছে এরকপর পাক সেনাকর্তাদের নির্দেশেই ওই ঐতিহাসিক মূর্তি ভেঙে ফেলা হয়। সেই বর্বর ধ্বংসযজ্ঞের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে এক ব্যক্তি একটি স্লেজহ্যামার দিয়ে মূর্তিটি ভাঙছেন। মূর্তিটির কিছু অংশ সেইসময়ও মাটির নিচেই আটকে ছিল।
 
এই ঐতিহাসিক গুরুত্ব সম্পন্ন প্রাচীন মূর্তিটি ধ্বংসের ঘটনা জড়িত সন্দেহে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু তারা নেহাতি চুনোপুটি, আসল পান্ডারা পাক সেনার উচ্চপদে আসীন বলে জানা যাচ্ছে। কাজেই তাদের দাড়িও ছোঁয়ার ক্ষমতা নেই ইমরান সরকারের।

তবে এই মূর্তি ধ্বংস করা শুধু যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর চরম আঘাত তাই নয়, পাকিস্তানের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের উপরও গুরুতর হামলা বলে মনে করছেন সেই দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিরাই। খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রত্নতত্ত্ব এবং যাদুঘরের ডিরেক্টর আবদুল সামাদ জানিয়েছেন মূর্তিটি ছিল গান্ধার সভ্যতার, প্রায় ১৭০০ বছরের পুরোনো। এই মূর্তিটির ধ্বংসকে তিনি বলেছেন 'অপরাধ'। সেইসঙ্গে তাঁর মতে যে 'কোনও ধর্মের অসম্মানই অসহনীয়'।

তারপরেও কর্তৃপক্ষের স্পষ্ট সমর্থনে পাকিস্তানে প্রতিনিয়ত সংখ্যালঘু নির্যাতন চলছে। হিন্দু মেয়েদের অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে, জোর করে ইসলামে ধর্মান্তরিত করিয়ে বিয়ে করা থেকে শুরু করে শিখ-খ্রীস্টান হত্যা, বৌদ্ধদের বিভিন্ন ধর্মীয়স্থান অবমাননা করা, বুদ্ধমূর্তি ও খোদাই নষ্ট - চলছেই। সম্প্রতি চরমপন্থীদের চাপে ইসলামাবাদে একটি হিন্দু মন্দির নির্মাণ-ও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আর সংখ্যালঘুদের উপর আলেমদের ফতোয়া জারি তো রয়েইছে।