সংক্ষিপ্ত
হিন্দু ধর্মে বাস্তুশাস্ত্রের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে, অনেকেই তাদের প্রতিটি কাজ বাস্তু অনুযায়ী করেন। আজ আমরা আপনাদের সাথে এমন কিছু সহজ বাস্তু টিপস নিয়ে আলোচনা করব যা আপনার জীবনে সুখ, সমৃদ্ধি বজায় রাখতে সাহায্য করবে।
দৈনন্দিন জীবনে এই বাস্তু টিপসগুলি অনুসরণ করুন
১. সকাল শুরু করুন সূর্যের আলো দিয়ে
প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ঘরের সব দরজা-জানালা খুলে দিন যাতে প্রাকৃতিক আলো এবং তাজা বাতাস ঘরে প্রবেশ করে। এতে ইতিবাচক শক্তির প্রবাহ বৃদ্ধি পায়।
২. পরিচ্ছন্নতার দিকে মনোযোগ দিন
ঘরের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে মনোযোগ দিন। পরিষ্কার ঘর কেবল সুন্দর দেখায় না, এটি ইতিবাচক শক্তিকেও আকর্ষণ করে। বিশেষ করে পূজার স্থান এবং রান্নাঘর সবসময় পরিষ্কার রাখুন। রাতে ঘুমানোর আগে রান্নাঘরের সিঙ্কে নোংরা বাসন রেখে ঘুমাবেন না। এছাড়া একটি ছোট পাত্রে জল রেখে ঢেকে রাখুন এবং পরের দিন জলটি তুলসী গাছে ঢেলে দিন। এই টিপসগুলি প্রতিদিন অনুসরণ করলে খরচ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৩. পূজার স্থান সঠিক জায়গায় রাখুন
পূজার স্থান সবসময় ঘরের পূর্ব বা উত্তর দিকে রাখুন। সকাল-সন্ধ্যা নিয়মিত পূজা এবং ধূপ-ধুনো করলে ঘরে ইতিবাচকতা বজায় থাকে। পূজার স্থানে ফুল-বেলপাত্র এবং অন্যান্য অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র জমা করবেন না।
৪. ঘরের প্রবেশদ্বারের দিকে মনোযোগ দিন
ঘরের প্রধান দরজা পরিষ্কার রাখুন এবং এটি সবসময় খোলা রাখুন। দরজায় কোনও বাধা থাকা উচিত নয়, কারণ এটি ঘরে সুখ-সমৃদ্ধির প্রতীক। এছাড়াও সম্ভব হলে প্রতিদিন প্রধান দরজার দুপাশে আটা দিয়ে রঙ্গোলি করুন এবং একটি পাত্রে জল ভরে তাতে ফুল দিয়ে রাখুন। এতে লক্ষ্মী প্রসন্ন হন এবং এটি শুভ প্রতীক।
৫. গাছ লাগান
ঘরে সবুজ গাছ লাগান। এগুলি কেবল ঘরের সৌন্দর্যই বাড়ায় না, শক্তির স্তরও উঁচু রাখে। তুলসী গাছ বিশেষ করে শুভ বলে বিবেচিত হয়। তুলসী, অপরাজিতা, মানি প্ল্যান্ট, কলা এবং শমি সহ অন্যান্য শুভ গাছ লাগান।
৬. রাতে ঘুমানোর সময় দিকের দিকে মনোযোগ দিন
ঘুমানোর সময় মাথা পূর্ব দিকে রাখুন। এটি কেবল স্বাস্থ্যের জন্যই উপকারী নয়, মানসিক শান্তিও প্রদান করে। কখনও দক্ষিণ দিকে পা রেখে ঘুমাবেন না, এটি স্বাস্থ্য এবং আয়ুর জন্য ভালো নয়।
৭. ভালো খাবার খান
প্রতিদিন তাজা এবং পরিষ্কার খাবার খান। ঘরে রান্না করার সময় ইতিবাচক চিন্তাভাবনা রাখুন, কারণ ভালো চিন্তাভাবনা খাবারকে আরও সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর করে তোলে। ঘরে যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুই রান্না করুন, বেশি খাবার রান্না করে নষ্ট করলে অন্নপূর্ণা দেবী রুষ্ট হন।
৮. জায়গায় জায়গায় ছড়িয়ে থাকা জিনিসপত্র সুবিন্যস্ত করুন
ঘরের প্রতিটি জায়গায় জিনিসপত্র সুবিন্যস্ত রাখুন। ছড়িয়ে থাকা জিনিসপত্র থেকে নেতিবাচক শক্তি উৎপন্ন হয়। প্রতিটি জিনিস তার নির্দিষ্ট স্থানে রাখলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়। প্রতিদিন ঘরে ঝাড়ু-পোঁছা করুন। এছাড়াও জাল এবং ধুলোও পরিষ্কার করে মুছে ফেলুন।
৯. ইতিবাচক কথা বলুন
ঘরের সদস্যদের সাথে ইতিবাচক কথা বলুন। একে অপরের মনোবল বাড়ান এবং ঘরে আনন্দের পরিবেশ তৈরি করুন। এতে সম্পর্কের মধ্যে দৃঢ়তা আসে। অযথা ঝগড়া, বিবাদ বা মারামারি করবেন না, সেই সাথে ঘরের মহিলারা সবসময় হাসিখুশি থাকুন, এতে ঘরে সুখ-সমৃদ্ধি বজায় থাকে।
১০. সময়মত বিছানা গুছিয়ে রাখুন
সকালে বিছানা গুছিয়ে রাখুন এবং এটি সুবিন্যস্ত রাখুন। এতে ঘরে শান্তি এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পরিবেশ বজায় থাকে। বিছানা গুছিয়ে না রাখলে লক্ষ্মী রুষ্ট হন এবং বাস্তুদোষ বৃদ্ধি পায়।