সংক্ষিপ্ত
৩৩ কোটি জন দেবদেবীর অস্তিত্ব রয়েছে এই ধর্মে। তবে হিন্দু শাস্ত্রে কোটি শব্দটির প্রকৃত অর্থ জানলেই আপনার ভ্রান্তি দূর হবে। এই ৩৩ কোটি অর্থে ৩৩,০০,০০০,০০ নয়।
হিন্দু ধর্মে ৩৩ কোটি দেব-দেবীর উল্লেখ রয়েছে। যাঁদের সঠিক তথ্য জানা নেই, তাঁরা ভাবেন ৩৩ কোটি জন দেবদেবীর অস্তিত্ব রয়েছে এই ধর্মে। তবে হিন্দু শাস্ত্রে কোটি শব্দটির প্রকৃত অর্থ জানলেই আপনার ভ্রান্তি দূর হবে। এই ৩৩ কোটি অর্থে ৩৩,০০,০০০,০০ নয়। আমরা সাধারণত এই কোটি শব্দটিকে সংখ্যার নিরিখে (Crore) বিচার করে ফেলি। কিন্তু, শাস্ত্রে এই কোটি শব্দের অর্থ আলাদা।
বিভিন্ন ধর্মীয় শাস্ত্র মতে ৩৩ কোটি শব্দের অর্থ শ্রেণী বা প্রকার। আসলে ৩৩ কোটি দেবতা বলতে ৩৩ জন উচ্চকোটি সম্পন্ন অর্থাৎ শ্রেষ্ঠ দেব-দেবীদের বোঝানো হয়। সেই সূত্র ধরেই হিন্দু শাস্ত্রে ৩৩ জন দেবতার উল্লেখ পাওয়া যায়। যেহেতু বেশির ভাগ সকলেই কোটি শব্দটিকে সংখ্যা হিসেবে বিচার করে থাকেন, তাই তারা এতদিন ভুল করে এসেছেন।
তাঁরা হলেন
৮ বসু,
১১ রুদ্র,
১২ আদিত্য,
ও ইন্দ্র ও প্রজাপতি। অনেকে আবার ইন্দ্র ও প্রজাপতির স্থানে ২ অশ্বিনীকুমারকে গণ্য করেন।
বসু কারা ?
বসু বলতে যাঁরা জীবের আত্মাকে স্থায়ী করেন ও জীবের যাঁদের মধ্যে বাস করেন – তাঁদের বোঝায়। এই অষ্ট বসু হলেন – পৃথিবী, জল, অগ্নি, বায়ু, আকাশ, চন্দ্র, সূর্য ও নক্ষত্র। এই ৮টি বসু প্রজার ধারণ ও পালন করে থাকেন।
রুদ্র বলতে কাদের বোঝায় ?
রুদ্র মূলত শরীরেই অব্যয়। শরীর থেকে এক এক করে রুদ্র নামক এই অব্যয় বেড়িয়ে গেলে ব্যক্তিকে মৃত ধরে নেওয়া হয়। এই রুদ্ররা হলেন – প্রাণ, অপান, ব্যান, সমান, উদান, নাগ, কুর্ম, কিরকল, দেবদত্ত ও ধনঞ্জয়।
আদিত্য কারা ?
পৌরাণিক কাহিনী থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে জানা যায় মহামুনি কাশ্যপের দ্বিতীয় স্ত্রী অদিতির ১২ পুত্রই হলেন ১২ আদিত্য। এই ১২ আদিত্য হলেন – অংশুমান, অর্যমান, ইন্দ্র, ত্বষ্টা, ধাতু, পর্জন্য, পূষা, ভগ, মিত্র, বরুণ, বিবস্বান ও বিষ্ণু। এঁদের ওপর ভিত্তি করেই বছরের ১২টি মাস নিযুক্ত। তবে পুরাণে এঁদের কয়েকজনের নাম সামান্য আলাদা। পুরাণে ধাতা, মিত্র, অর্যমা, শুক্র, বরুণ, অংশ, ভগ, বিবস্বান, পুষা, সবিতা, ত্বষ্টা এবং বিষ্ণু-র নামের উল্লেখ পাওয়া যায়।
এই ৩৩ জন দেবতার মধ্যে ৩২তম দেবতা হলেন ইন্দ্র অর্থাৎ তিনি বিদ্যুৎ বা শক্তি এবং ৩৩ তম দেবতা হলেন যজ্জ অর্থাৎ প্রজাপতি। জানা যায়, তাঁর মাধ্যমে আমাদের বায়ু, দৃষ্টি, জল ও শিল্প শাস্ত্র উন্নত হয়, ঔষধী সৃষ্টি হয়।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।