সংক্ষিপ্ত

মাথায় লাঠি মারার ক্রিয়াকে কপাল ক্রিয়া বলে। এই প্রক্রিয়ায় মৃতদেহ অর্ধেক পুড়ে গেলে লাঠি দিয়ে আঘাত করে মাথার খুলি ভেঙে ফেলা হয়।

মৃত ব্যক্তির ইহ জগত থেকে পরিত্রাণের জন্য শেষকৃত্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বলে বিবেচিত হয়েছে। এর সাথে সম্পর্কিত কিছু আচার-অনুষ্ঠান আছে, যা অনুসরণ করলেই শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। মৃতদেহ পোড়ানোর সময় লাঠি দিয়ে মৃত ব্যক্তির মাথায় আঘাত করার প্রথা রয়েছে। মূলত হিন্দুদের দেহ সৎকারের সময় এই ধরণের প্রথার প্রচলন রয়েছে। আসুন জেনে নেই এর পেছনের কারণ।

জেনে রাখা ভালো মাথায় লাঠি মারার ক্রিয়াকে কপাল ক্রিয়া বলে। এই প্রক্রিয়ায় মৃতদেহ অর্ধেক পুড়ে গেলে লাঠি দিয়ে আঘাত করে মাথার খুলি ভেঙে ফেলা হয়। এই ক্রিয়াটি করলে মৃত ব্যক্তির মাথায় একটি গর্ত তৈরি হয়। এই গর্তে ঘি ঢালা হয়। যাতে আগুন এই অংশটিকে পুরোপুরি পুড়িয়ে ফেলতে পারে। ঘি ঢালার পর মৃতের মাথার খুলি আগুনে জ্বলতে থাকে।

কপাল ক্রিয়া করার পিছনে তিনটি কারণ

কপাল ক্রিয়া করার পিছনে তিনটি কারণ রয়েছে। প্রথম কারণ হল যে কোনও দেহের মাথা শক্ত। মুখাগ্নির পর শরীরের অন্যান্য অংশ পুড়ে গেলেও মাথা পুড়ে যায় না। সারা শরীর পোড়ানো ছাড়া শেষকৃত্য অসম্পূর্ণ বলে মনে করা হয়। এজন্য লাঠি দিয়ে আঘাত করে মাথার অংশ পুড়িয়ে ঘি ভর্তি করার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

দ্বিতীয় কারণ হল, হিন্দু ধর্মগ্রন্থ ও শাস্ত্রে মাথার খুলিকে মোক্ষের পথ হিসেবে ধরা হয়েছে। পরিত্রাণ পেতে, মাথার খুলি খুলতে হবে। কপালক্রিয়ার মাধ্যমে মোক্ষের দ্বার খুলে যায়।

তৃতীয় কারণ হল, মাথার খুলি অক্ষত থাকলে তা তান্ত্রিক আচার-অনুষ্ঠানে অপব্যবহার করা হয়। তান্ত্রিকরা তাদের আচারের জন্য মৃত ব্যক্তির মাথা বহন করে। মৃতরা পরিত্রাণ পায় না। এ কারণে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করার রীতি রয়েছে। মৃতদেহ সম্পূর্ণ পুড়ে গেলেই স্বজনরা বাড়ি ফেরেন।