সংক্ষিপ্ত
সন্তানের মঙ্গল কামনার্থে অনেকেই দেবী ষষ্ঠীর পুজো করে থাকেন। কিন্তু জানেন কী, ষষ্ঠীদেবীর পুজো করার কিছু নির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে, যা মেনে চললে মা ষষ্ঠীর কৃপা লাভ করতে পারবেন। দেখে নিন কোন পদ্ধতিতে পুজো করলে ষষ্ঠীদেবীর আশীর্বাদপ্রাপ্ত হবেন।
মা ষষ্ঠীর ব্রত পালন করা হয় সন্তান প্রাপ্তি ও তাদের মঙ্গল কামনায়। যদিও শাস্ত্র মতে, অনেকগুলি ষষ্ঠী ব্রত পালন করতে দেখা যায়। মূলা ষষ্ঠী, অশোকা ষষ্ঠী, লুন্ঠন ষষ্ঠী, পাটাই ষষ্ঠী, দুর্গা ষষ্ঠী, চাপড়া ষষ্ঠী ইত্যাদি। আর জ্যৈষ্ঠ মাসের জামাইষষ্ঠী এগুলির মধ্যে একটি। মূলত সন্তানের দীর্ঘায়ু, রোগ-শোক হীন জীবন প্রাপ্তির আশায় মায়েরা এই ব্রত করেন।
এই দেবীর নির্দিষ্ট অবয়ব নেই। মঙ্গল ঘটে আঁকা মূর্তি, শিল, পিটুলি দিয়ে তৈরি মূর্তি, ঘটে পোঁতা বটগাছের ডাল ইত্যাদিতে ষষ্ঠীদেবীর প্রতিমা কল্পনা করা হয়। দেবীর বাহন কালো বিড়াল। স্বামী নির্মলানন্দ তার 'দেব-দেবী ও তাদের বাহন'গ্রন্থে লিখেছেন যে বিড়াল হলো প্রজনন শক্তির প্রতীক।আর বিড়ালির দুগ্ধ নাকি স্ত্রীরোগের আরোগ্যলাভের অন্যতম মেডিসিন। এমন প্রাচীন লোকবিশ্বাসের সূত্র ধরেই নাকি ষষ্ঠীর বাহন বিড়াল।
সন্তানের মঙ্গল কামনার্থে অনেকেই দেবী ষষ্ঠীর পুজো করে থাকেন। কিন্তু জানেন কী, ষষ্ঠীদেবীর পুজো করার কিছু নির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে, যা মেনে চললে মা ষষ্ঠীর কৃপা লাভ করতে পারবেন। দেখে নিন কোন পদ্ধতিতে পুজো করলে ষষ্ঠীদেবীর আশীর্বাদপ্রাপ্ত হবেন।
ষষ্ঠী পুজোর প্রণাম মন্ত্র -
জয় দেবি জগন্মাতর্জ্জগদানন্দকারিণি।
প্রসীদ মম কল্যাণি নমস্তে ষষ্ঠী দেবিকে।।
অনেকে মনে করেন জষ্ঠিমাসের কৃষ্ণপক্ষের সাবিত্রী চতুর্দশী তিথিতে স্ত্রীরা স্বামীদের দীর্ঘজীবন কামনা করে যমের আরাধনা করতেন। এই লোকাোচারটির সূত্র ধরেই কলকাতার বাবু সংস্কৃতিতে নাকি জামাই ষষ্ঠীর অনুপ্রবেশ।বাল্যবিবাহ--সতীদাহ ইত্যাদি ঘটনার অনুষঙ্গ ধরেই হয়তো এক সময় খুব স্বাভাবিক ভাবেই শাশুড়িমাতা জামাইবাবাজীবনের দীর্ঘজীবন কামনা করতেন।
আরও পড়ুন- মেয়ে-জামাই ও সন্তানের মঙ্গলের জন্য মায়েরা এই ব্রত রাখেন, জেনে নিন এই বছরের জামাইষষ্ঠীর দিনক্ষণ
ষষ্ঠী পুজোর উপকরণ-
সিন্দুর, পঞ্চগুঁড়ি, পঞ্চগব্য, পঞ্চশস্য, আম্রশাখা, ঘট, বটের ডাল, তিল, হরিতকী, পুষ্প, দূর্ব্বা, তুলসী, বিল্বপত্র, ধূপ, দীপ, ধুনা, আসনাঙ্গুরীয়ক, মধুপর্কের বাটী, দধি, মধু, চিনি, নৈবেদ্য, কুচা নৈবেদ্য, ষষ্ঠীর শাটী, মার্কণ্ডেয়ের ধুতি, মন্থনদন্ড, তীর, ধনু, পিটুলি অঙ্কিত হাঁড়ি, পিটুলি অঙ্কিত পুত্তলিকা, শ্বেতসর্ষপ, মাষতলাই, বটের পাতা, পাখা, হরির দ্বাদশ নাম লিখিবার জন্য শুভ্র (শ্বেত) বর্ণের নূতন বস্ত্রখণ্ড, কাঁচাহলুদ, ঘৃতপ্রদীপ, আঁতমরা ফল, লোহা, ঘুনসি, তালপত্র, গোমুন্ডের পূজা, ব্রাহ্মনের পদধূলি, মিষ্টান্ন, পুরোহিতের দক্ষিণা-সহযোগে দেবী ষষ্ঠীর পুজো করলে তিনি খুশি হন।
ষষ্ঠী পুজোর ধ্যান মন্ত্র-
ওঁ গৌরাভাং দ্বিভুজাং ষষ্ঠীং নানালঙ্কার-ভুষিতাম্। সর্ব্বলক্ষণ-সম্পন্নাং পীনোন্নতপয়োধরাম্।। দিব্যবস্ত্রপরীধানাং বামক্রোড়ে সপুত্রিকাম্। প্রসন্নবদনাং ধ্যায়েজ্জগদ্ধাত্রীং সুখপ্রদাম্।।