সংক্ষিপ্ত
কৌশিকী কথার অপর অর্থ আদ্য়াশক্তি। পুরাণ অনুযায়ী দেবী দুর্গা কৌশিকী রূপ ধারন করেই অসুর শুম্ভ আর নিশুম্ভকে বধ করেছিলেন।
বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ১৪ সেপ্টেম্বর কৌশিকী আমাবস্যা। ভোর ৫টা ৩১ মিনিট থেকে শুরু অমাবস্যা তিথি। শেষ হবে পরের দিন ১৫ সেপ্টেম্বর ভোরবেলা। সাধকরা মনে করে সাধনার জন্য এই অমাবস্য তিথি খুবই গুরুত্ব। বীরভূম জেলার রামপুরহাটের তারাপীঠের মন্দির ও মন্দির সংলগ্ন শ্মশানে কৌশিকী অমাবস্যা উপলক্ষ্যে তারাপীঠের মন্দিরে বিশেষ পুজো হয়। এই এলাকা সিদ্ধপীঠ হিসেবে পরিচিত। কথিত রয়েছে এই অমাবস্যায় সিদ্ধিলাভ করেছিলেন স্বয়ং সাধাক ব্যামাক্ষ্যাপা। তিনি শ্মশানের শ্বেত-শিমুলতলায় সাধানা করেছিলেন।
কৌশিকী কথার অপর অর্থ আদ্য়াশক্তি। পুরাণ অনুযায়ী দেবী দুর্গা কৌশিকী রূপ ধারন করেই অসুর শুম্ভ আর নিশুম্ভকে বধ করেছিলেন। দেবতাদের সাধ্য ছিল না এই দুই অসুরকে বধ করার। কারণ ব্রহ্মাদেবের আশীর্বাদ ছিল- কোনও পুরুষ শুম্ভ আর নিশুম্ভকে বদ করতে পারবে না। সেই কারণেই আদিশক্তি দূর্গার বেশে আসেন। ভগবান শিবের সঙ্গে তাঁর বিবাহ হয়। তারপরই কৌশিকী রূপ ধারন করে দুই অসুর বধ করেন তিনি।
তবে শুধু হিন্দু ধর্ম নয়, বৌধ্য ধর্মেও কৌশিকী আমাবস্যার বিশেষ মাহাত্ম রয়েছে। দুই ধর্মেই তন্ত্রসাধাকদের কাছে এই দিনটি বিশেষ। দুই ধর্মের তন্ত্রসাধকদের মতে কৌশিকী অমাবস্যায় কঠিন ও গুপ্ত তন্ত্র সাধনা করলে তার দুর্দান্ত ফল পাওয়া যায়। তন্ত্র সাধকরা এই অমাবস্যার রাতকে তারা- রাত্রি বলে থাকেন। এই তিথিতে মূলত দেবী আদিশক্তির পূজো হয়। ভাদ্র মাসে এই অমাবস্যা তাদের কাছে বিশেষ যারা তন্ত্র সাধনায় সাফল্য অর্জন করতে চান। তন্ত্র সাধকদের কথায় এই অমাবস্যা তিথির একটি বিশেষ সময় স্বর্গ ও নরক দুইয়ের দ্বার খুলে যায়। তাই সাধকরা নিজেদের ইচ্ছে মত ধনাত্মক ও ঋণাত্মক শক্তি আত্মস্থ করে সিদ্ধালাভ করতে পারেন।
তবে শুধুমাত্র সাধক নয় গৃহস্থের কাছেও কৌশিকী অমাবস্যার গুরুত্ব অনেক। এই দিনে কতগুলি নিয়ম মেনে চললে বাধা দূর হয়ঃ
১. কৌশিকী অমাবস্যার দিনে বাড়ি পরিষ্কার রাখুন।
২. এঁঠো বাসন ঘরে রাখবেন না।
৩. এই দিন নিরামিশ খাবার চেষ্টা করুন।
৪. কৌশিকী অমাবস্যার সন্ধ্যায় বাড়ির মূল দরজার সামনে দুটি তিলের তেলের প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখুন।
৫. সন্ধ্যেবেলা দেবী তারার নাম জপ করতে কাজে কেটে যায়।