পাপমোচনী একাদশীর দিনে এই নিয়মগুলি পালন করলে, জীবনের বহু সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন

পাপমোচনী একাদশী উপবাস পালিত হবে ১৮ মার্চ, ২০২৩, শনিবার। বছরে ২৪টি একাদশী থাকলেও মলমাস এলে তাদের সংখ্যা বেড়ে হয় ২৬টি। নারদ পুরাণে, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং এই পাপমোচনী একাদশী অর্জুনকে বর্ণনা করেছেন। হিন্দু ধর্মীয় শাস্ত্রে বলা হয়েছে যে, পৃথিবীতে এমন কোনও ব্যক্তি নেই যিনি জেনে-বুঝে কোনও ভুল করেননি এবং সেই ভুলের জন্য অনুতপ্ত হলে পাপমোচনী একাদশীর উপবাস করতে হবে। এই উপবাসে সমস্ত পাপ থেকে মুক্তি মেলে।

একাদশীর উপবাসে শ্রী নারায়ণের আরাধনা করে তার জন্য কিছু ব্যবস্থা করলে বিশেষ উপকার পাবেন। আপনি ব্যবসায় লাভ পাবেন, আপনি আপনার আটকে থাকা টাকা শীঘ্রই ফিরে পাবেন। এর সঙ্গে, আপনার আর্থিক অবস্থা শক্তিশালী হবে এবং আপনি চাকরিতে পদোন্নতি পাবেন। আপনার বিবাহিত জীবনে চলমান সমস্যাগুলি দূর হয়ে যাবে এবং আপনার সম্পর্কের মধ্যে আবার মধুরতা বাড়তে শুরু করবে।

পপমোচনী একাদশীতে এই বিশেষ নিয়মগুলি অবশ্যই পালন করুন-

১) একাদশীর দিন সন্ধ্যায় ভগবান নারায়ণের সামনে ঘির প্রদীপ জ্বালান। এর সঙ্গে, ঈশ্বরকে বেসনের লাড্ডু নিবেদন করুন এবং সেই লাড্ডুগুলি নিবেদনের কিছুক্ষণ পরে, সেই লাড্ডুগুলি প্রসাদ আকারে সকলের মধ্যে বিতরণ করুন। তারপর নিজে একটু প্রসাদ নিন। একাদশীর দিনে এটি করলে কখনোই অর্থের অভাব হবে না এবং ঘরের মজুদ সর্বদা পূর্ণ থাকবে।

২) পপমোচনী একাদশীর দিন একটি গোমতী চক্র নিন এবং সন্ধ্যার সময় অন্ধকার হয়ে গেলে নির্জন স্থানে বা বাড়ির বাইরে একটি খালি জায়গায় গিয়ে একটি গর্ত খনন করুন। এর পরে, শ্রী নারায়ণর নাম নিয়ে সেই গর্তে গোমতী চক্রে আঙ্গুলের চাপ দিন এবং ভগবানের কাছে প্রার্থনা করুন যে সেই ব্যক্তি আপনার অর্থ ফেরত দেন।

৩) আপনার জীবন সঙ্গীর উন্নতির জন্য একাদশীর দিন ৫ জন বিবাহিত মহিলাকে সম্মানের সঙ্গে বাড়িতে নিমন্ত্রণ করুন এবং তাদের কিছু মিষ্টি খাবার দিন। বাড়িতে কোনও ব্যবস্থা না থাকলে ৫ জন বিবাহিত মহিলার জন্য খাবার বের করে তাদের বাড়িতে গিয়ে নিয়ে আসুন।

৪) পপমোচনী একাদশীর দিন ভগবান নারায়ণর পূজার সময় চন্দন পিষে একটি পাত্রে রাখুন এবং পূজা শেষ হলে উভয় হাতে ভগবানকে ফুল অর্পণের পর সেই পাত্র থেকে চন্দন নিয়ে তিলক লাগান। আপনার সন্তানের মাথায়। চন্দন ঘষার সময়, মনে রাখবেন যে একবারে চন্দন এতটাই ঘষুন যে এটি পরবর্তী ১৫ দিন, অর্থাৎ পরবর্তী একাদশী পর্যন্ত স্থায়ী হয় এবং আপনার পরবর্তী একাদশী পর্যন্ত তিলক লাগানোর এই প্রক্রিয়াটি চালিয়ে যেতে হবে। পরের একাদশী এলে আপনি একই প্রক্রিয়ার পুনরাবৃত্তি করতে পারেন। এটা করলে ভবিষ্যতে আপনার সন্তানের উন্নতি নিশ্চিত হবে।

৫) আপনি যদি আপনার বিবাহিত জীবনকে সুখী করতে চান, তাহলে একাদশীর দিন একটি পাত্রে জল ঢেলে তাতে সামান্য হলুদ মিশিয়ে তাতে একটি মুদ্রা রাখুন এবং নিজের উপর সাতবার নিক্ষেপ করুন এবং এটি প্রবাহিত হতে দিন। প্রবাহিত জল

৬) আপনি যদি নতুন কোনও কাজ শুরু করতে যাচ্ছেন, তাহলে শুরু করার আগে গমের আটার রুটিতে গুড় রেখে গরুকে খাওয়ান। পাপমোচনি একাদশীর দিনে এটি করা আপনার কাজের একটি ভাল সূচনা করবে এবং আগামী সময়ে এর অগ্রগতিও নিশ্চিত করবে।

৭) আপনার এবং আপনার পরিবারের সুস্বাস্থ্যের জন্য, পাপমোচনি একাদশীর দিন, সন্ধ্যায় তুলসী গাছের নীচে ঘিয়ের একটি প্রদীপ জ্বালান এবং ভগবান নারায়ণর ধ্যান করার সময় তুলসি গাছের সাতবার পরিক্রমা করুন।

৮) ভিড়ে নিজের আলাদা পরিচয় প্রতিষ্ঠা করতে এবং সমাজে নিজের মর্যাদা বাড়াতে পাপমোচনি একাদশীর দিন মন্দিরে যান এবং শ্রী নারায়ণকে সুগন্ধযুক্ত সুগন্ধি অর্পণ করুন। নৈবেদ্য দেওয়ার পরে, ঈশ্বরের চরণ স্পর্শ করুন এবং একই সুগন্ধি কিছুটা নিজের কাছে লাগান।

৯) আপনি যদি নিজের মধ্যে ইতিবাচক চিন্তা জাগিয়ে তুলতে চান, তাহলে পাপমোচনি একাদশীর দিন ভগবান নারায়ণকে জাফরান মিশ্রিত দুধ নিবেদন করুন এবং সন্ধ্যায় মন্দিরে ঘি এর প্রদীপ জ্বালিয়ে শ্রী নারায়ণর আরতি করুন।

১০) পাপমোচনি একাদশীর দিন, ভগবান নারায়ণর পূজার সময়, পূজার স্থানে হলুদের মাখা রাখুন এবং পরের দিন যখনই আপনি সেই কাজটি করতে বাড়ি থেকে বের হবেন, সেই হলুদের পিণ্ডটি একটি হলুদ কাপড়ে মুড়িয়ে রাখুন। এবং এটি আপনার কাছে রাখুন।

১১) আপনার বাড়ির সুখ-শান্তির জন্য এবং জীবনে উন্নতির জন্য, পাপমোচনী একাদশীর দিন, রাতে ভগবান নারায়ণর ধ্যান করার সময় ভজন-কীর্তন করুন। কথিত আছে একাদশীর রাতে জেগে ভগবানের ধ্যান করলে হাজার বছরের তপস্যার ফল পাওয়া যায়।