শুধুমাত্র চৌধুরী রাজবাড়ির পুজো নয়, বিগত ৪০০ বছর ধরে বাঁকুড়ার দামোদরবাটি গ্রামের জনসাধারণের কাছে মহা ধুমধামে পূজিত হয়ে আসছেন মা মৃন্ময়ী।

পশ্চিমবঙ্গের একেকটা জেলায় নানা গল্প নিয়ে ছড়িয়ে আছে বিভিন্ন রাজবাড়ির কাহিনী। এর বাঁকুড়া জেলার নানা প্রান্তে ছড়িয়ে আছে বহু প্রাচীন কাহিনি, রাজপরিবারের ইতিহাস এবং ধর্মীয় ঐতিহ্য। বাঁকুড়া জেলার ওন্দার দামোদরবাটি গ্রামের পশ্চিমের জঙ্গলে প্রায় ৪০০ বছর আগে বসতি গড়ে তুলে ছিলেন প্রতাপ আদিত্যের বংশধরেরা।

প্রাচীন কাহিনী

প্রতাপ আদিত্যর বংশধরেরা প্রায় ৪০০ বছর আগে বাংলাদেশের যশোর থেকে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেয় অবিভক্ত পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার ওন্দার দামোদরবাটি গ্রামের পশ্চিম দিকের জঙ্গলে। বারো ভূঁইয়ার অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে প্রতাপ আদিত্যের বংশধরেরা চলে আসেন এখানে।

দেবীর রাজবাড়িতে প্রতিষ্ঠা

রাজা প্রতাপ আদিতের বংশধরেরা যেখানে থাকতেন তার পাশেই ছিল একটি নদী, সেখানেই প্রতাপ আদিত্যের বংশধরেরা উদ্ধার করেছিলেন নিম কাঠের মা মৃন্ময়ী দেবী মূর্তি। এই সময় বিষ্ণুপুরের রাজা দামোদরবাটি গ্রামের ওপর দিয়ে যাচ্ছিলেন অম্বিকানগর। তার দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বিষ্ণুপুরে নিয়ে যেতে চান মায়ের মূর্তি, কিন্তু প্রতাপ আদিত্যের বংশধরেরা রাজি হননি।

এরপরেই বিষ্ণুপুরের রাজা প্রতাপ আদিত্যের বংশধরদের মোট ১৪ টি মৌজা দান করেন এবং তাদের উপাধি দেন চৌধুরী। তখন থেকেই তৈরী হয় চৌধুরী রাজবাড়ি এবং এখানেই মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত হয় মা মৃন্ময়ী দেবীর মূর্তি। তখন থেকে শুরু করে এখন প্রায় ৪০০ বছর, আজও নিম কাঠের মূর্তিতেই মহা ধুমধামে পূজিত হন মা মৃন্ময়ী।

কীভাবে যাবেন ভাবছেন?

কলকাতা থেকে বাঁকুড়ার দূরত্ব প্রায় ২২০ কিলোমিটারের কাছাকাছি। হাওড়া থেকে ট্রেন ধরে যাওয়াটাই সবচেয়ে শ্রেয়। হাওড়া থেকে ট্রেন ধরে ওন্দা পৌঁছতে হবে আগে, সময় লাগতে পারে প্রায় ৪ ঘন্টা। স্টেশন থেকে অটো বা গাড়ি করে পৌঁছতে পারবেন দামোদরবাটি গ্রাম। অটো সময় নেয় ২০-২৫ মিনিট মতো।

আবার সড়কপথে যেতে চাইলে, প্রথমে NH2 রোড ধরে বাঁকুড়া-পূর্ব মেদিনীপুর রোড হয়ে ওন্দা হয়ে দামোদরবাটি গ্রাম। এক্ষেত্রে সময় একটু বেশি লাগবে, প্রায় ৫ থেকে ৫.৫ ঘন্টা মতো।