সংক্ষিপ্ত

দীপাবলির আনন্দের পরেও কিছু ভুল মা লক্ষ্মীকে রুষ্ট করতে পারে। জেনে নিন, দীপাবলির পরের দিন কোন কোন বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি, যাতে ঘরে বজায় থাকে সুখ-সমৃদ্ধি।

গতকাল অর্থাৎ ৩১শে অক্টোবর সারা দেশে দীপাবলি উৎসব পালিত হয়েছে। এই উৎসবে মা লক্ষ্মীর পূজা এবং তাঁর আদর-সম্মান করা হয়। দীপাবলির এই বিশেষ দিনে ধন-সম্পদের দেবী মা লক্ষ্মীর কৃপা লাভের জন্য বিভিন্ন ধরণের বাস্তু টিপস, পূজা এবং টোটকা করা হয়। দীপাবলির পূজায় ঘরবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে সাজানো হয়, সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্বলন এবং লক্ষ্মী পূজা করা হয়। পূজার পর আতশবাজি পোড়ানো হয় এবং মিষ্টি বিতরণ করে আনন্দ উৎসব পালন করা হয়। কিন্তু অনেকেই অজান্তেই দীপাবলির পূজার পর কিছু ভুল করে বসেন, যার ফলে মা লক্ষ্মী রুষ্ট হন। আজকের এই লেখায় আমরা আপনাদের বাস্তু সম্পর্কিত কিছু ভুল সম্পর্কে বলব, যেগুলো আপনাদের এড়িয়ে চলা উচিত।

দীপাবলি পূজার পর করবেন না এই ভুল, রুষ্ট হবেন মা লক্ষ্মী

১. পূজাস্থল পরিষ্কারে অসাবধানতা

দীপাবলি পূজার পরের দিন পূজাস্থল পরিষ্কার করার সময় পূজার সামগ্রী সম্পূর্ণভাবে সরিয়ে ফেলবেন না। মা লক্ষ্মীর কৃপা বজায় রাখতে পরের দিনও প্রদীপ জ্বালিয়ে কিছু প্রসাদ নিবেদন করুন এবং পূজাস্থল সাজিয়ে রাখুন। অনেকে দীপাবলির পরের দিনই পূজাস্থল পরিষ্কার করে মূর্তি এবং সাজসজ্জা সরিয়ে ফেলেন, কিন্তু তা করা উচিত নয়। দীপাবলি পূজার প্রতিষ্ঠিত মূর্তি এবং ফুলের মালা ভাই ফোঁটার সন্ধ্যায় সরান।

২. প্রদীপ নিভিয়ে ফেলা বা না জ্বালানো

দীপাবলির রাতে জ্বালানো প্রদীপ পরের দিন সকালেও জ্বলন্ত রাখা শুভ বলে মনে করা হয়। এটি নিজে নিজেই নিভে যেতে দিন অথবা পরের দিন নতুন প্রদীপ জ্বালান। প্রদীপ জ্বলন্ত থাকা মা লক্ষ্মীর আহ্বান বলে মনে করা হয়, তাই এ ব্যাপারে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখুন।

৩. ঝাড়ুর ব্যবহার এবং এদিক-ওদিক রাখা

বাস্তু অনুযায়ী, দীপাবলির পরের দিন ঝাড়ুর অতিরিক্ত ব্যবহার করবেন না এবং বিশেষ করে পূজাস্থল বা প্রধান দরজার কাছে রাখবেন না। এটি মা লক্ষ্মীকে ঘর থেকে বের করে দেওয়ার ইঙ্গিত বলে মনে করা হয়। ঝাড়ু একটি নিরাপদ স্থানে রাখুন এবং ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।

৪. ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা জিনিসপত্র না রাখা

দীপাবলি পূজার পর ফুল, পাতা এবং অন্যান্য জিনিসপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখবেন না। এটি নেতিবাচক শক্তি বৃদ্ধি করতে পারে এবং মা লক্ষ্মীকে রুষ্ট করতে পারে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে বিশেষ নজর রাখুন এবং জিনিসপত্রগুলো ভালো করে একত্র করে কোন পাত্রে, পলিথিন অথবা ডিব্বায় রাখুন।

৫. বিছানার চাদর এবং কাপড় না বদলানো

দীপাবলির পরের দিন ঘরের চাদর, পর্দা, অথবা বিছানার কাপড় তাড়াতাড়ি বদলাবেন না। বাস্তু অনুযায়ী, এই পরিবর্তন মা লক্ষ্মীর কৃপাকে প্রভাবিত করতে পারে। দীপাবলির দিনই এই কাপড়গুলো বদলে ফেলুন এবং পরের দিন এগুলো একইভাবে রেখে দিন।

৬. নেতিবাচক কথা এবং ঝগড়া এড়িয়ে চলা

দীপাবলির পরের দিন ঘরে কোন নেতিবাচক কথা, বিতর্ক বা ঝগড়া করবেন না। এই দিন মন এবং কথাকে শান্ত এবং সংযত রাখুন যাতে মা লক্ষ্মীর বাস ঘরে বজায় থাকে। ইতিবাচক পরিবেশ বজায় রাখুন এবং পরিবারের সাথে ভালোবাসার সাথে থাকুন।

৭. অবশিষ্ট প্রদীপ এবং পূজার সামগ্রীর অসম্মান না করা

দীপাবলির রাতে অবশিষ্ট প্রদীপ এবং পূজার সামগ্রীর অসম্মান করবেন না। এগুলোর সঠিকভাবে নিষ্পত্তি করুন। পূজার সামগ্রী কোন পবিত্র স্থানে বিসর্জন করে দিন এবং প্রদীপ জ্বলতে দিন অথবা পানিতে ভাসিয়ে দিন।

৮. অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এদিক-ওদিক না রাখা

দীপাবলির পরের দিন ঘরে অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এদিক-ওদিক রাখা বা অতিরিক্ত জিনিসপত্র জমা করা বাস্তুদোষ বাড়াতে পারে। দীপাবলির পর ঘরবাড়ি পরিপাটি এবং সুন্দর করে সাজিয়ে রাখুন, যাতে ঘরে ইতিবাচক শক্তি বজায় থাকে।

৯. অর্থের অসম্মান না করা

দীপাবলির পরের দিন কোনওভাবেই অর্থের অসম্মান করবেন না। টাকা-পয়সা সযত্নে রাখুন, অপ্রয়োজনীয় খরচ এড়িয়ে চলুন এবং টাকা-পয়সার যথাযথ যত্ন নিন। এই বিশ্বাস আছে যে, অর্থের প্রতি সম্মান মা লক্ষ্মীর কৃপা বৃদ্ধি করে।

১০. দরজা বন্ধ না রাখা

বাস্তু অনুযায়ী, দীপাবলির পরের দিন প্রধান দরজা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রাখবেন না। কিছু সময়ের জন্য এটি খোলা রাখুন যাতে ঘরে ইতিবাচক শক্তি এবং মা লক্ষ্মীর আশীর্বাদ প্রবেশ করতে পারে। দরজা সাজানোর জন্য রাঙোলি করুন এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন।