দুর্গাপুজোর সময় বিভিন্ন জায়গায় দেবী মায়ের বিশাল মূর্তি স্থাপন করা হয়। কিন্তু খুব কম মানুষই জানেন যে এই মূর্তিগুলি তৈরি করতে যৌনকর্মীদের উঠোনের মাটিও ব্যবহার করা হয়। এই প্রথার সঙ্গে জড়িত আকর্ষণীয় বিশ্বাসও রয়েছে।

নবরাত্রির প্রথা: প্রতি বছর আশ্বিন মাসে শারদীয়া নবরাত্রির উৎসব পালিত হয়। এই সময় সর্বজনীন স্থানে দেবীর বিশাল মূর্তি স্থাপন করে ৯ দিন ধরে তার পূজা করা হয়। খুব কম মানুষই জানেন যে দুর্গা মায়ের মূর্তি তৈরি করতে যৌনকর্মীদের উঠোনের মাটিও ব্যবহার করা হয়। কলকাতা সহ বাংলার বিভিন্ন জেলায় এটি একটি প্রথা। এই প্রথা কীভাবে শুরু হলো এবং এর সঙ্গে কী কী বিশ্বাস জড়িত, তা নিচে জানুন…

যৌনকর্মীদের থেকে অনুমতি নিয়ে মাটি আনা হয়

দেশে মায়ের মূর্তি তৈরির বেশিরভাগ শিল্পীই বাংলার। তাদের একটি প্রথা আছে যে, যখনই তারা মায়ের মূর্তি তৈরির কাজ শুরু করেন, প্রথমে যৌনকর্মীদের উঠোন থেকে মাটি নিয়ে আসেন, এর জন্য তারা তাদের অনুমতিও নেন। এই মাটি অন্য মাটির সঙ্গে মিশিয়েই দেবী মায়ের মূর্তি তৈরির কাজ শুরু করা হয়।

কীভাবে এই প্রথা শুরু হলো?

প্রচলিত কাহিনী অনুসারে, একবার কিছু যৌনকর্মী গঙ্গায় স্নান করতে যাচ্ছিলেন। ঘাটে এক কুষ্ঠরোগী বসেছিলেন, যিনি পথচারীদের কাছে গঙ্গাস্নানে সাহায্য চাইছিলেন। কেউ তার কথায় কান দেয়নি, কিন্তু যৌনকর্মীরা সেই কুষ্ঠরোগীকে গঙ্গাস্নান করিয়ে দেন। সেই কুষ্ঠরোগী আর কেউ নন, স্বয়ং মহাদেব ছিলেন। নিজের আসল রূপে এসে মহাদেব যৌনকর্মীদের বর চাইতে বলেন। তখন যৌনকর্মীরা বলেন যে, 'আমাদের উঠোনের মাটি ছাড়া যেন দেবীর মূর্তি তৈরি না হয়।' মহাদেব তাদের এই বর দেন। তখন থেকেই এই প্রথা চলে আসছে, যা আজও প্রচলিত।

এই প্রথার আরও একটি কারণ

প্রচলিত কাহিনীর পাশাপাশি এই প্রথার আরও একটি কারণ রয়েছে। সেই অনুসারে, যখন কোনো ব্যক্তি যৌনকর্মীর বাড়িতে প্রবেশ করে, তখন সে তার সমস্ত ভালো কাজের ফল বাইরে রেখে যায়। এই পুণ্য কর্মের কারণেই যৌনকর্মীর উঠোনের মাটি অত্যন্ত পবিত্র বলে মনে করা হয়। এই কারণেও দেবীর মূর্তি তৈরির জন্য যৌনকর্মীদের উঠোনের মাটি বিশেষভাবে ব্যবহার করা হয়।


Disclaimer
এই আর্টিকেলে যে তথ্য দেওয়া হয়েছে, তা ধর্মগ্রন্থ, বিশেষজ্ঞ এবং জ্যোতিষীদের থেকে নেওয়া হয়েছে। আমরা কেবল এই তথ্য আপনার কাছে পৌঁছে দেওয়ার একটি মাধ্যম। ব্যবহারকারীরা এই তথ্যগুলিকে কেবল তথ্য হিসেবেই গ্রহণ করুন।