জৈষ্ঠ্য মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে পালিত জামাই ষষ্ঠী একটি গুরুত্বপূর্ণ বাঙালি উৎসব। এই উৎসবের পেছনে রয়েছে এক পৌরাণিক কাহিনী। জেনে নিন। জেনে নিন কীভাবে শুরু হয়েছিল জামাইষষ্ঠী পালন?
বাঙালির ১২ মাসে ১৩ পার্বণ। এই সকল উৎসবের মধ্যে এক অন্যতম উৎসব হল জামাইষষ্ঠী। প্রতি বছর জৈষ্ঠ্য মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে পালিত হয় জামাই ষষ্ঠী। এবছর তিনি অনুসারে ১ জুন পড়েছে জামাই ষষ্ঠী। অনেক জায়গায় জামাই ষষ্ঠীকে অরণ্য ষষ্ঠীও বলে।
জামাই ষষ্ঠীর দিন প্রতি বছর পালিত হয় বিভিন্ন আচার নিয়ম। জামাইকে ধান ও দুর্বা দিয়ে আশীর্বাদ করা হয়। তেমনই শাশুড়িরা বিভিন্ন রকম পদ রেঁধে জামাইকে খাইয়ে থাকেন। সঙ্গে দেওয়া হয় বিবিন্ন রকমের ফল। দেওয়া হয় উপহার। আবার জামাইরাও এই দিন শাশুড়ির জন্য উপহার নিয়ে যাব।
এই জামাই ষষ্ঠী ঘিরে রয়েছে এক পৌরাণিক কাহিনি। জানা যায়, এক মহিলা প্রতিদিন তার বাড়িতে যা রান্না হত তা লুকিয়ে আগে খেয়ে নিতেন। আর বিড়ালের নামে মিথ্যা অপবাদ দিতেন। বিড়ালের ওপর মিথ্যা অপবাদ দেওয়ায় মা ষষ্ঠী ক্রুদ্ধ হন। মা ষষ্ঠীর অভিশাপে ওই মহিলার যত সন্তান হয়, সবাই একে একে জন্মের পর মারা যায়।
নিজের ভুল বুঝতে পেরে ওই মহিলা মা ষষ্ঠীর কাছে প্রার্থনা করেন ও নিয়ম নিষ্ঠার সঙ্গে মায়ের পুজো করেন। এরপর মা ষষ্ঠীর কৃপায় তিনি তাঁর মৃত সন্তানদের জীবন ফেরত পান। কিন্তু, এই মহিলার শাশুড়ি সব জানতে পারায় তাঁর বাপের বাড়ি যাওয়া বন্ধ করে দেয়। এদিকে তাঁর বাবা-মা তাঁকে অনেকদিন দেখতে না পেয়ে অস্থির হয়ে ওঠে। তারা জৈষ্ঠ শুক্লপক্ষের ষষ্ঠীর তিথিতে তাঁর মেয়ে জামাইকে বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়ে ভোজনের ব্যবস্থা করেন। এতে মেয়েকে দেখার শখ তাঁদের পূরণ হয়। সেই থেকেই জামাইষষ্ঠী পালিত হয়ে আসছে।
এবছর জামাই ষষ্ঠী পড়েছে ১ জুন। ৩১ মে রাত ১২টা ৩৪ মিনিটে পড়ছে ষষ্ঠী এবং চলবে ১ জুন রাত ১২টা ৮ মিনিট পর্যন্ত। প্রতি বছরই এমন সময় পালিত হয় এই উৎসব। বাঙালির ঘরে ঘরে জামাই আগমন উপলক্ষে নিয়ে খাওয়া দাওয়ার বিরাট আয়োজন করা হয়ে থাকে।