Historical Kali Puja: এখান থেকেই শুরু হয়েছিল বাংলার আদি কালীপুজোর। জানুন দক্ষিণা কালী পুজোর অজানা ইতিহাস। 

Historical Kali Puja: শেষবেলা উৎসবের মরশুম। দীপাবলির আনন্দে মেতে উঠেছে নদীয়ার শান্তিপুরও। এখানের আগমেশ্বরী মা — ৪০০ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যের দক্ষিণা কালী। নদীয়ার শান্তিপুরে আজও একই আচার, একই ভক্তি আর ঐতিহ্যের ছোঁয়ায় পালিত হচ্ছে আগমেশ্বরী মায়ের পুজো, যা বাংলার প্রাচীনতম দক্ষিণা কালী পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম। প্রায় চার শতাব্দীর প্রথা মেনে আজও দীপান্বিতা অমাবস্যার রাত্রিতে অনুষ্ঠিত হয় এই পুজো।

দক্ষিণা কালীপুজোর ইতিহাস:- 

শান্তিপুর, শাক্ত ও বৈষ্ণব ভাবধারার মিলনক্ষেত্র— এখানেই মিলেছে তন্ত্র, ভক্তি ও সংস্কৃতির স্রোত। নবদ্বীপ থেকে আগত রত্নগর্ভ সার্বভৌম আগমবাগীশ, অর্থাৎ তন্ত্রশাস্ত্রজ্ঞ কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশের প্রপৌত্র, ছিলেন এই মন্দির প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর শ্বশুর, বৈষ্ণব চূড়ামণি মথুরেশ গোস্বামী, ছিলেন শ্রীমৎ অদ্বৈতাচার্যের নাতি। তাঁদের সাহচর্যে সার্বভৌম আগমবাগীশ শান্তিপুরে প্রতিষ্ঠা করেন তাঁর আরাধ্যা দেবী মহাকালীকে, যিনি পরে পরিচিত হন “আগমেশ্বরী মা” নামে।

ইতিহাস বলে, এই দেবীই বাংলার আদি দক্ষিণা কালী, যাঁর প্রতিরূপেই পরবর্তীকালে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে শ্যামাপূজার প্রচলন। প্রায় ২০ ফুট উচ্চতার আগমেশ্বরী মাতার প্রতিমা আজও ভক্তদের মুগ্ধ করে। স্থানীয়দের বিশ্বাস, মা আগমেশ্বরী তাঁদের অভয় ও কল্যাণের প্রতীক।

প্রতি বছর দীপান্বিতা অমাবস্যার রাতে মাতার পূজায় ভক্তদের ঢল নামে। শুধু শান্তিপুর নয়, রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে হাজারো মানুষ মন্দির প্রাঙ্গণে উপস্থিত হন মাতার দর্শনে। ভক্তদের দান ও সমাজের সহায়তায় এখনো নির্বিঘ্নে চলে পুজোর সমস্ত ব্যয়।

অমাবস্যা ছাড়াও প্রতি মাসের অমাবস্যা তিথিতে অনুষ্ঠিত হয় চরণপীঠ পূজা, যেখানে ভক্তরা গভীর শ্রদ্ধায় কপাল ঠেকান মা আগমেশ্বরীর থানায়— যা স্থানীয়দের কাছে এক পীঠস্থানসম পবিত্র স্থান। শান্তিপুরের এই প্রাচীন আগমেশ্বরী মন্দির আজও বহন করছে ভক্তি, ঐতিহ্য ও মিলনের প্রতীক, যেখানে শ্যাম ও শ্যামার অনন্ত শক্তি মিশে আছে এক চিরন্তন সংস্কৃতির ধারায়।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।