- Home
- Sports
- Cricket
- প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের ৪ দশক পূর্তি, ফিরে দেখা কপিল দেব-মহিন্দর অমরনাথদের অবিস্মরণীয় কীর্তি
প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের ৪ দশক পূর্তি, ফিরে দেখা কপিল দেব-মহিন্দর অমরনাথদের অবিস্মরণীয় কীর্তি
ভারতীয় ক্রিকেটে ২৫ জুন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তারিখ। ভারতীয় দল প্রথম টেস্ট ম্যাচ খেলতে নেমেছিল ১৯৩২ সালের ২৫ জুন। ১৯৮৩ সালের ২৫ জুন কপিল দেবের নেতৃত্বে লর্ডসে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে প্রথমবার বিশ্বকাপ জেতে ভারত। সেই জয়ের ৪০ পূর্তি রবিবার।
- FB
- TW
- Linkdin
কপিল দেবের হাতে বিশ্বকাপ, একলহমায় বদলে গিয়েছিল ভারতীয় ক্রীড়ার চিত্র
বর্তমান প্রজন্ম ছবিটা দেখে বড় হয়েছে। লর্ডসের ব্যালকনিতে বিশ্বকাপ হাতে ভারতীয় ক্রিকেট দলের তৎকালীন অধিনায়ক কপিল দেব নিখাঞ্জ। এই মুহূর্তটা ভারতীয় ক্রিকেটে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দেশে ক্রিকেটকে ধর্মের সমান করে তোলার ক্ষেত্রে কপিলদের এই জয়ের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি।
প্রত্যাশা ছাড়াই বিশ্বকাপে খেলতে গিয়ে অভাবনীয়ভাবে চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত
১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আগে ভারতের তৎকালীন অধিনায়ক কপিল দেব নিখাঞ্জ ছাড়া আর কারও আশাই ছিল না যে ভারতীয় দল চ্যাম্পিয়ন হবে। ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ভারতীয় দল প্রথমে ব্যাটিং করে সামান্য রান করে। তখনও সবাই ধরে নিয়েছিলেন, ক্যারিবিয়ানরা টানা তৃতীয়বার বিশ্বকাপ জিতবে। কিন্তু সবাইকে অবাক করে চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত।
ক্লাইভ লয়েড, ভিভ রিচার্ডসের বিরুদ্ধে ১৮৩ রান করেও বিশ্বকাপ জেতে ভারত
১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে মাত্র ১৮৩ রান করে ভারতীয় দল। সর্বাধিক ৩৮ রান করেন ওপেনার কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত। জবাবে ১৪০ রানে অলআউট হয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ভিভ রিচার্ডস করেন ৩৩ রান। ভারতের হয়ে ৩ উইকেট করে নেন মদন লাল ও মহিন্দর অমরনাথ।
১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপ সেমি-ফাইনাল ও ফাইনালে ম্যাচের সেরা হন মহিন্দর অমরনাথ
১৯৮৩ সালে ভারতের বিশ্বকাপ জয়ে অন্যতম অবদান ছিল অলরাউন্ডার মহিন্দর অমরনাথের। তিনি সেমি-ফাইনাল ও ফাইনালে ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হন। ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ২৬ রান করার পাশাপাশি ১২ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন অমরনাথ।
১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত ভিভ রিচার্ডসের উইকেট
১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ৩ নম্বরে ব্যাটিং করতে নেমে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে খেলছিলেন ভিভ রিচার্ডস। ২৮ বলে ৩৩ রান করেন এই কিংবদন্তি। তিনি ৭টি বাউন্ডারি মারেন। মদন লালের বলে অনেকটা ছুটে গিয়ে ভিভের ক্যাচ নেন কপিল দেব। এই উইকেটই ভারতের জয়ের পথ প্রশস্ত করে দেয়।
জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে কপিল দেবের অতিমানবীয় ইনিংসই ভারতীয় দলের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়
১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে ১৭ রানে ৫ উইকেট খুইয়ে বসে ভারতীয় দল। সেই পরিস্থিতিতে ১৩৮ বলে ১৭৫ রান করে অপরাজিত থাকেন কপিল দেব। এটাই ওডিআই ফর্ম্যাটে কোনও ভারতীয় ব্যাটারের প্রথম শতরান। কপিলের এই ইনিংসই ভারতীয় দলকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে।
১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপের সময় মধুচন্দ্রিমার পরিকল্পনা বাতিল করতে হয় কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্তকে
১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপের আগে ভারতীয় দলের বেশিরভাগ ক্রিকেটারের ধারণা ছিল, দল গ্রুপ পর্যায় থেকেই বিদায় নেবে। সেই কারণে অনেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে বেড়ানোর ফাঁকে কয়েকটি ম্যাচ খেলার পরিকল্পনা করেছিলেন। সদ্য বিবাহিত ওপেনার কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত আবার মধুচন্দ্রিমার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু সব পরিকল্পনাই বাতিল করতে হয়।
১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আগে কপিল দেবের ব্যাগে ছিল শ্যাম্পেনের বোতল
১৯৮৩ সালে বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় দলের অন্যতম সদস্য কীর্তি আজাদ জানিয়েছেন, বিশ্বকাপ খেলার জন্য ইংল্যান্ডে যাওয়ার সময় থেকে কপিল দেবের ব্যাগে একটি শ্যাম্পেনের বোতল ছিল। সতীর্থরা চাইলেও সেই বোতল কাউকে দেননি কপিল। ভারতীয় দল বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর লর্ডসের ব্যালকনিতে প্রথমে সেই শ্যাম্পেনের বোতলটিই খোলেন কপিল।
অধিনায়ক কপিল দেব নিখাঞ্জের লড়াই ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ মানসিকতার জন্যই বিশ্বকাপ জেতে ভারত
১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপে ভারতের অধিনায়ক কপিল দেবের লড়াই ক্রিকেটের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে রয়েছে। কপিলের আত্মপ্রত্যয়ের জন্যই চ্যাম্পিয়ন হতে পেরেছিল ভারতীয় দল।
নিজের লেখা গিলতে হয়েছিল উইজডেন ক্রিকেট মান্থলির এডিটর ডেভিড ফ্রিথকে
১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আগে উইজডেন ক্রিকেট মান্থলির এডিটর ডেভিড ফ্রিথ লিখেছিলেন, ভারতীয় দল গ্রুপ টপকাতে পারবে না। ভারতীয় দল যদি গ্রুপ টপকাতে পারে, তাহলে তিনি নিজের কথা গিলে খাবেন। সেই কথা রেখে ভারত বিশ্বকাপ জেতার পর নিজের লেখা পাতা ক্যামেরার সামনে গিলে খান ফ্রিথ।