সংক্ষিপ্ত

আমরা ইতিহাসকে ফিরে দেখতে ভালোবাসি। 

এই যেমন ২৮/৩, খানপুর রোড নাকতলা। বাংলার ফুটবলপ্রেমী জনতার কাছে এই ঠিকানাটা ভীষণ চেনা। কারণ, সেকালের ময়দান কাঁপানো এক কোঁকড়া চুলের ফুটবলার, নাম তাঁর কৃশানু দে। এই বাড়ি ছিল তাঁর, যাকে আমাদের মারাদোনা বলা হত।

এমনিতেই বাড়িটি অনেকটা জমির উপর দাঁড়িয়ে ছিল। অনেকটা জমি নিয়ে থাকা এই বাড়িটি ভেঙে এখন তৈরি হচ্ছে ফ্ল্যাট। ফ্ল্যাটের যে ভিতগুলি হবে, সেগুলির কাজও শুরু হয়ে গেছে।

গত ২০০৩ সালের অভিশপ্ত ২০ মার্চ! যেদিন গোটা ময়দানকে কাঁদিয়ে এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যান কৃশানু দে। মাত্র ৪১ বছর বয়সে প্রয়াত হন তিনি। আর আজ ২০২৪ সালে দাঁড়িয়ে, সেই স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটিও এখন মাটিতে মিশে গেল। বলা চলে, নাকতলার এই বাড়িটিকে ঘিরে বঙ্গ ফুটবলের একাধিক ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে।

সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল যে, দলবদলের বাজারে যখন রীতিমতো ফুটবলারদের নিয়ে টানাটানি চলছে, সেইসময় রেষারেষি থেকে বাঁচতে পুলিশ ঘিরে রাখে এই বাড়িটি।

কৃশানু দে-র ছেলে এবং স্ত্রী বর্তমানে ব্রহ্মপুরে থাকেন। বাড়ি ভেঙে ফ্ল্যাট তৈরি হওয়ার পর আবার এখানেই ফিরে আসবেন। এমনিতেই বহু পুরস্কার এবং স্মারক আপাতত বাক্সবন্দি। ফ্ল্যাট তৈরি হওয়ার পর আবার সেগুলি যথাস্থানে ফিরে আসবে। মূলত, এতবড় বাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ করতে খুবই অসুবিধা হচ্ছিল। এমনকি, অনেক জায়গায় রংও চটে যায়। সেইসঙ্গে, দেখা গেছিল ফাটলও।

স্বাভাবিকভাবেই বাড়িটি সংস্কার করতে অনেকটাই খরচ হত। তাই ফ্ল্যাট করা ছাড়া পরিবারের কাছে সেইভাবে আর কোনও উপায়ও ছিল না। তবে ছেলে সোহমের অনেক কথাই মনে আছে। ছোটবেলায় বাড়ির বিশাল ছাদে বাবার সঙ্গে ক্যাম্বিস বলে ক্রিকেট খেলার স্মৃতি আজও তাড়া করে তাঁকে। তাছাড়া আড্ডা, মজা এবং পিকনিক তো ছিলই।

তবে আজ সে বাড়ি পুরোটাই ধ্বংসস্তূপ। এই বাড়িতেই থাকতেন ময়দান কাঁপানো সেই কৃশানু দে। ফ্ল্যাট হবে সেই বাড়ি, কিন্তু স্মৃতি তো থেকেই যাবে।

আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।