IFA Shield 2025: নির্ধারিত সময় পর্যন্ত, ম্যাচের ফলাফল ১-১ থাকায় খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। তবে এরপরেও আর কোনও গোল না হওয়ায়, ম্যাচ যায় টাইব্রেকারে।
IFA Shield 2025: টাইব্রেকারে বাজিমাত। ১২৫ তম আইএফএ শিল্ড জিতল মোহনবাগান (kolkata derby 2025)। আইএফএ শিল্ড ফাইনালে শনিবার, কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে মুখোমুখি হয় মোহনবাগান বনাম ইস্টবেঙ্গল (mohun bagan vs east bengal ifa shield)।
সেই ম্যাচেই, টানটান উত্তেজনার টাইব্রেকারে ৫-৪ ব্যবধানে জয় পেল সবুজ মেরুন ব্রিগেড।
আক্রমণ এবং প্রতি-আক্রমণে শুরু থেকেই জমে ওঠে ফাইনাল ম্যাচ। নিঃসন্দেহে মেগা কলকাতা ডার্বি বলে কথা। আর সেই সুবাদেই খেলার ৮ মিনিটে, মোহনবাগানের জেমি ম্যাকলারেনের শট সেভ করেন ইস্টবেঙ্গল গোলকিপার প্রভসুখান সিং গিল।
অন্যদিকে, পাল্টা আক্রমণ তুলে আনে লাল হলুদ ব্রিগেডও। এক্ষেত্রে ত্রাতা হয়ে ওঠেন মোহনবাগান গোলকিপার ভিশাল কেইথ। তবে সেখানেই শেষ নয়। ম্যাচের ১৯ মিনিটে, আবারও সেভ সেই ভিশালের।
![]()
তারপরেও দুই দলের তরফে আক্রমণের ধারা বজায় ছিল। কিন্তু গোল কিছুতেই আসছিল না। এরপর ফাউল করার অপরাধে পেনাল্টি পায় মোহনবাগান। তবে খেলার ৩২ মিনিটে, সেই পেনাল্টি মিস করেন জেসন কামিংস।
আর তারপরেই সেই মুহূর্ত। ম্যাচের ৩৬ মিনিটে, বাঁদিক থেকে আক্রমণ তুলে আনেন লাল হলুদের হামিদ আহাদাদ। তাঁর বাঁ-পায়ের জোরালো শটের সুবাদেই গোল পেয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। খেলার ফলাফল তখন ১-০।
সেই গোল হতেই ইস্টবেঙ্গল গ্যালারির চেনা গর্জন চোখে পড়ল। সেইসঙ্গে, ফাটতে শুরু করল বাজি। তবে সেখানেই শেষ নয়। কয়েক মিনিট বাদেই ফের একবার হামিদের শট। তবে বারপোস্টে লেগে তা প্রতিহত হয়।

কিন্তু তারপরেই লড়াইতে ফিরে আসে বাগান শিবির। প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে, আপুইয়ার গোলে সমতা ফেরায় সবুজ মেরুন ব্রিগেড। এই গোলটির ক্ষেত্রে অবশ্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান লিস্টনের। তাঁর ফাইনাল পাস থেকেই বল পান অপুইয়া।
শেষপর্যন্ত, প্রথমার্ধ শেষ হয় ১-১ ফলাফল নিয়ে। দ্বিতীয়ার্ধেও বেশ উত্তেজনাপূর্ণ ফুটবল লক্ষ্য করা গেল। লড়াই এবং পাল্টা লড়াই চোখে পড়ল। তবে দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে আসেন লাল হলুদের নতুন বিদেশি হিরোশি। নেমেই সুযোগ তৈরি করেন। তবে সতর্ক ছিলেন মোহনবাগানের ভিশাল।
খেলার ৭৭ মিনিটে, রশিদের দূরপাল্লার শট একটুর জন্য বাইরে না গেলে, এগিয়ে যেতে পারত ইস্টবেঙ্গল। তবে সময় যত এগোচ্ছিল, ততই যেন চাপ বাড়াচ্ছিল লাল হলুদ ব্রিগেড। কিন্তু খেলার একদম শেষদিকে, দীপক টাংরির হেড ইস্টবেঙ্গল গোলকিপার হাত ছুঁইয়ে না বাঁচালে মোহনবাগান হয়ত জয়সূচক গোলটি পেয়ে যেতে পারত। তবে এরপর আর কোনও গোল হয়নি।
তাই নির্ধারিত সময় পর্যন্ত, ম্যাচের ফলাফল ১-১ থাকায় খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেও কোনও গোল না হওয়ায়, ম্যাচ চলে যায় সোজা টাইব্রেকারে। আর সেই জায়গাতেই একটি পরিবর্তন আনেন ইস্টবেঙ্গল কোঁচ অস্কার ব্রুজো। গোটা ম্যাচে গোলকিপিং করা প্রভসুখান সিং গিলকে তুলে নামান দেবজিৎ মজুমদারকে। কিন্তু টাইব্রেকারে একটি সেভও তিনি করতে পারেননি।
টাইব্রেকারে কী হল?
ইস্টবেঙ্গলঃ প্রথম শটে মিগুয়েল গোল করেন।
মোহনবাগানঃ প্রথম শটে রবসন গোল করেন।
ইস্টবেঙ্গলঃ দ্বিতীয় শটে গোল করেন কেভিন।
মোহনবাগানঃ দ্বিতীয় শটে গোল করেন মনবীর।
ইস্টবেঙ্গলঃ তৃতীয় শটে গোল করেন নাওরেম মহেশ সিং।
মোহনবাগানঃ তৃতীয় শটে গোল করেন লিস্টন কোলাসো।
ইস্টবেঙ্গলঃ চতুর্থ শটটি নেন জয় গুপ্তা। তাঁর শট সেভ করেন মোহনবাগান গোলকিপার ভিশাল কেইথ।
মোহনবাগানঃ চতুর্থ শটে সবুজ মেরুনের হয়ে গোল করেন দিমিত্রি পেত্রাতোস।
ইস্টবেঙ্গলঃ পঞ্চম শটে গোল করেন নতুন বিদেশি হিরোশি।
মোহনবাগানঃ পঞ্চম শটে গোল করে সবুজ মেরুন ব্রিগেডকে জয় এনে দিলেন মেহতাব সিং।
শেষপর্যন্ত, টানটান উত্তেজনার টাইব্রেকারে ইস্টবেঙ্গলকে ৫-৪ ব্যবধানে হারিয়ে রুদ্ধশ্বাস ফাইনাল জিতে নিল মোহনবাগান। ১২৫ তম আইএফএ শিল্ড সবুজ মেরুনের দখলে। স্টেডিয়ামে বেজে উঠল ‘আমাদের সূর্য মেরুন, নাড়ির যোগ সবুজ ঘাসে'। গোটা গ্যালারি তখন উত্তাল, সবুজ মেরুন জনতা আনন্দে উদ্বেলিত।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।
