সংক্ষিপ্ত

ট্রেভর জেমস মর্গ্যানের পর কার্লেস কুয়াদ্রাতই প্রথম বিদেশি কোচ যিনি ইস্টবেঙ্গলকে সর্বভারতীয় ট্রফি জেতাতে সক্ষম হলেন। ১২ বছর পর সর্বভারতীয় ট্রফি জিতল ইস্টবেঙ্গল।

ইস্টবেঙ্গলের ম্যাচ থাকলেই গ্যালারিতে একটা পোস্টার দেখা যায়। মুষ্ঠিবদ্ধ হাত ছুড়ে দিচ্ছেন প্রধান কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত। এই ছবির তলায় লেখা থাকে, 'আমাদেরই একজন।' বার্সেলোনাও মাঝেমধ্যে লাল-হলুদ জার্সি পরে খেলে। স্পেনের জাতীয় পতাকার রং লাল-হলুদ। সেই কারণেই কি ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে এত সহজে মানিয়ে নিতে পেরেছেন কুয়াদ্রাত? গত এক দশকে ট্রেভর জেমস মর্গ্যান, অলেজান্দ্রো ছাড়া অন্য কোনও কোচ লাল-হলুদ জনতার কাছ থেকে এতটা সম্মান পায়নি। কলিঙ্গ সুপার কাপ ফাইনালে ইস্টবেঙ্গল হেরে গেলেও সমর্থকরা কোচকে গালমন্দ করতেন না। কারণ, এই কোচের উপর ভরসা আছে। মরসুমের প্রথম নক-আউট টুর্নামেন্ট ডুরান্ড কাপ ফাইনালে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের কাছে হারের পর সমর্থকদের বলেছিলেন, 'এই মাঠেই বদলা নেব।' কলিঙ্গ সুপার কাপে সবুজ-মেরুনকে হারিয়েই সেমি-ফাইনালে পৌঁছয় ইস্টবেঙ্গল। এবার ক্লাবকে ট্রফিও এনে দিলেন কুয়াদ্রাত। এবার তাঁর উপর প্রত্যাশার চাপ বাড়ছে। আইএসএল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা।

কোচের মগজাস্ত্রের জোরে চ্যাম্পিয়ন ইস্টবেঙ্গল

কলিঙ্গ সুপার কাপ ফাইনালে প্রথম একাদশে একটাই পরিবর্তন করেন কুয়াদ্রাত। নিশু কুমারের পরিবর্তে তিনি মন্দার রাও দেশাইকে সুযোগ দেন। মন্দার প্রথমার্ধে ভালো পারফরম্যান্স দেখাতে পারেননি। তাঁর পরিবর্তে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই লালচুংনুঙ্গা এবং হেভিয়ের সিভেরিও টোরোর পরিবর্তে নাওরেম মহেশ সিংকে নামান লাল-হলুদের প্রধান কোচ। এই জোড়া পরিবর্তনে ম্যাচে ফেরে দল। এরপর অবশ্য ভুল করে বসেন কুয়াদ্রাত। নন্দকুমার শেখরের পরিবর্তে তিনি মাঠে নামান পিভি বিষ্ণুকে। এই তরুণের গতি, ড্রিবলিং আছে। কিন্তু তিনি গোল করতে দক্ষ নন। তাঁর মধ্যে স্বার্থপরতাও আছে। সহজ গোলের সুযোগ নষ্ট করার পরেই বিষ্ণুকে তুলে সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়কে মাঠে নামান কুয়াদ্রাত। এই পরিবর্তন ভুল ছিল না। যত ম্যাচ গড়াচ্ছে পরিণত হচ্ছেন সায়ন। তাঁর মধ্যে বড় ফুটবলার হওয়ার সবরকম গুণ দেখা যাচ্ছে। ভবিষ্যতে লাল-হলুদের সম্পদ হয়ে উঠতে পারেন এই বাঙালি ফুটবলার।

কুয়াদ্রাতের সবচেয়ে বড় অস্ত্র সৌভিক চক্রবর্তী

কুয়াদ্রাতের কোচিংয়ে সৌভিক চক্রবর্তীর খেলা অন্য উচ্চতায় পৌঁছে গিয়েছে। মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের বিরুদ্ধে হুগো বুমোসকে অকেজো করে দেওয়ার জন্য সৌভিককে ব্যবহার করেন কুয়াদ্রাত। ওড়িশা এফসি-র অন্যতম অস্ত্র আহমেদ জাহুকেও বোতলবন্দি করে রাখেন সৌভিক। তিনি যতক্ষণ মাঠে ছিলেন মাঝমাঠের দখল ইস্টবেঙ্গলেরই ছিল। নতুন ফুটবলারদের তুলে আনা, দলের পুরনো সদস্যদের আত্মবিশ্বাস বাড়ানো, সর্বোপরি ক্লাবের পুরনো গৌরব ফিরিয়ে আনা, একসঙ্গে অনেককিছু করছেন কুয়াদ্রাত। সেই কারণেই তিনি সমর্থকদের মন জয় করে নিয়েছেন।

আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।

আরও পড়ুন-

East Bengal: ব্যর্থতার যুগাবসান, ভারতীয় ফুটবলের সিংহাসনে ইস্টবেঙ্গলের প্রত্যাবর্তন

Kolkata Derby: কয়েকদিন পরেই আবার কলকাতা ডার্বি, কীভাবে টিকিট পাবেন?

East Bengal: 'ক্লাবের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ট্রফি জয়,' বার্তা ইস্টবেঙ্গল কোচের