2030 Commonwealth Games: স্বাধীনতার পর একাধিকবার এশিয়ান গেমস আয়োজন করেছে ভারত। ২০১০ সালে এদেশে কমনওয়েলথ গেমসও হয়েছে। ফের কমনওয়েলথ গেমস আয়োজন করতে চাইছে ভারত।
2030 Commonwealth Games: বিশ্বমানের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজনের লক্ষ্যে একট গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের অংশ হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে আমেদাবাদে ২০৩০ সালে কমনওয়েলথ গেমস (2030 Commonwealth Games) ইন্ডিয়ান অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (The Indian Olympic Association)। কমনওয়েলথ গেমস আয়োজনের জন্য বিড জমা দিয়েছে ইন্ডিয়ান অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন। ক্রীড়া মন্ত্রকের একজন উচ্চপদস্থ আধিকারিক বৃহস্পতিবার সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে নিশ্চিত করেছেন, ইন্ডিয়ান অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (IOA) এবং গুজরাট রাজ্য ৩১ মার্চের সময়সীমার আগেই তাদের আগ্রহপত্র পাঠিয়েছে। আমেদাবাদকে ২০৩০ সালের কমনওয়েলথ গেমসের জন্য পছন্দের স্থান হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়েছে। যদি ভারতের বিড সফল হয়, তবে ২০৩৬ সালের অলিম্পিক গেমস আয়োজনের লক্ষ্যে বড় দাবিদার হয়ে উঠবে ভারত। এই পদক্ষেপটি বিশ্বের বৃহত্তম ক্রীড়া ইভেন্টগুলিকে দেশে আনার জন্য ভারতের বৃহত্তর লক্ষ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ, যা আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে দেশের ক্রমবর্ধমান অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে। পিটিআই-এর এক প্রতিবেদনে ক্রীড়ামন্ত্রকের সূত্রকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ‘হ্যাঁ, এটা সত্যি, ভারতের বিড আইওএ এবং গুজরাট রাজ্য জমা দিয়েছে।’
২ দশক পর ভারতে ফের কমনওয়েলথ গেমস?
কমনওয়েলথ গেমস ফেডারেশন (Commonwealth Games Federation), যা বর্তমানে কমনওয়েলথ স্পোর্টস নামে পরিচিত, ২০৩০ সালের গেমস আয়োজনের জন্য ভারতের আবেদন খতিয়ে দেখবে। কমনওয়েলথ স্পোর্টসের সাধারণ সভার বৈঠকে আয়োজক দেশের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ক্রীড়ামন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্যের সাম্প্রতিক মন্তব্যের পরেই এই বিডটি করা হয়েছে। যেখানে তিনি এই ইভেন্ট আয়োজনের জন্য দেশের আগ্রহের কথা জানিয়েছিলেন। ভারত এর আগে ২০১০ সালে দিল্লিতে কমনওয়েলথ গেমস আয়োজন করেছিল। সেই গেমসে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। অব্যবস্থার অভিযোগও উঠেছিল। ভারতের বিড সফল সফল হলে ২০৩০ সালের কমনওয়েলথ গেমস ভারতের ক্রীড়া ইতিহাসে আরেকটি মাইলফলক তৈরি করবে। যা ১৯৮২ সালের এশিয়ান গেমসের মতো দেশের আয়োজিত সীমিত কিন্তু মর্যাদাপূর্ণ মাল্টি-স্পোর্ট ইভেন্টের তালিকায় যুক্ত হবে।
ক্রীড়াক্ষেত্রে উন্নতির লক্ষ্যে ভারত
২০৩০ সালে কমনওয়েলথ গেমস ছাড়াও ভারত ২০৩৬ সালের অলিম্পিক গেমস আয়োজনের লক্ষ্যে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০২৩ সালে মুম্বইয়ে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (IOC) অধিবেশনে এই আকাঙ্খার কথা প্রথমবার জানান। ভারত অলিম্পিক আয়োজক নির্বাচন প্রক্রিয়ার 'ইনফরমাল ডায়ালগ' পর্ব থেকে 'কন্টিনিউয়াস ডায়ালগ' পর্যায়ে চলে গিয়েছে। এই পর্যায়ে আইওসি-র পক্ষ থেকে ভারতের এই গেমস আয়োজনের সম্ভানা নিয়ে সমীক্ষা চালানো হয়। ভারতের বিষয়েও সমীক্ষা চালানো হবে। ২০৩০ সালের কমনওয়েলথ গেমসের জন্য ভারতের বিড গেমসের ২০২৬ সালের সংস্করণ থেকে বাদ দেওয়া ডিসিপ্লিনগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবের সঙ্গে এসেছে। যার লক্ষ্য দেশের পদক সম্ভাবনা বজায় রাখা। তবে, এই প্রস্তাবটি সিজিএফ প্রত্যাখ্যান করেছে। তা সত্ত্বেও, সিজিএফ-এর সিইও কেটি স্যাডলেইর এর আগে ভারতের সম্ভাব্য বিডের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেছিলেন যে এটি ২০৩৬ সালের অলিম্পিক আয়োজনের লক্ষ্যে দেশের জন্য একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হবে।
আরব দেশগুলির সঙ্গে লড়াইয়ে ভারত
২০৩০ সালের কমনওয়েলথ গেমস আয়োজনের জন্য ভারতকে কঠিন প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হতে হবে। সৌদি আরব, কাতার এবং তুরস্ক-সহ আরও কয়েকটি দেশও এই ইভেন্ট আয়োজনে আগ্রহ দেখিয়েছে। একইভাবে, ২০৩৬ সালের অলিম্পিক্সের আয়োজক দেশ হওয়ার দৌড়েও একাধিক দেশ আছে। ২০২৬ সালের মধ্যে আয়োজক দেশ সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা রয়েছে। গ্রিসে অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক আইওসি অধিবেশনের পর নির্বাচনের গতি বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। যেখানে প্রাক্তন অলিম্পিকেস চ্যাম্পিয়ন Kirsty Coventry সংস্থার প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। ২০৩০ সালের কমনওয়েলথ গেমসের জন্য ভারতের বিডের সফল বাস্তবায়ন ৬ বছর পর অলিম্পিক্সের জন্য সম্ভাবনাকে শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। ভারতের ক্রীড়া পরিকাঠামো অভূতপূর্ব গতিতে বিকাশ লাভ করছে এবং কেন্দ্রীয় সরকার আন্তর্জাতিক ক্রীড়া ইভেন্টগুলি আয়োজন করতে চাইছে। তাই কমনওয়েলথ গেমস এবং অলিম্পিক্স, দুই প্রতিযোগিতাই আয়োজনের দেশের আকাঙ্খা আগের চেয়ে আরও বেশি বাস্তবসম্মত মনে হচ্ছে।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।


