সংক্ষিপ্ত

বহুদিন ধরেই বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্বতারোহীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হিমালয়ের দুর্গম অঞ্চলে পৌঁছে যাচ্ছেন। পর্বতারোহণে দেশের অন্যতম সেরা বাংলা।

শেরপাদের সাহায্য ছাড়া হিমালয়ের যে কোনও পর্বতশৃঙ্গ জয় করা কঠিন। কিন্তু এই কাজটাই সহজে করে দেখালন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাউন্টেনিয়ারিং অ্যান্ড হাইকিং ক্লাবের সদস্যরা। তাঁরা শেরপাদের সাহায্য না নিয়েই হিমাচল প্রদেশ ও তিব্বত সীমান্তে অবস্থিত রিও পারজিল শৃঙ্গ জয় করলেন। এই শৃঙ্গের উচ্চতা ৬,৭৯২ মিটার। শেরপাদের সাহায্য নিয়েও এই শৃঙ্গ জয় করা অত্যন্ত কঠিন। সেখানে শেরপাদের সাহায্য না নিলে পর্বতারোহণ আরও কঠিন হয়ে যায়। কিন্তু মানসিক কাঠিন্য ও প্রচণ্ড শারীরিক সক্ষমতার পরিচয় দিয়ে সব বাধা অতিক্রম করে শৃঙ্গ জয় করল গৌতম দত্তর নেতৃত্বাধীন দল। এই অভিযান সারা দেশের পর্বতারোহীদের মধ্যে সাড়া ফেলে দিয়েছে। সবাই বাহবা দিচ্ছেন।

সরকারিভাবে রিও পারজিলে প্রথম সফল অভিযান হয় ১৯৭১ সালে। ইন্দো তিবেটান বর্ডার পুলিশের (আইটিবিপি) জওয়ানরা এই শৃঙ্গ জয় করেন। দ্বিতীয় সফল অভিযান হয় ২০ বছর পর। ১৯৯১ সালে ই থিওফিলাসের নেতৃত্বাধীন পর্বতারোহীদের দল রিও পারজিল জয় করে। এরপর ২০১৮ সালে বাংলার একটি দল এই শৃঙ্গ জয় করে। সেই দলের নেতৃত্বে ছিলেন রাজশেখর মাইতি। ২০২২ সালে করোনা অতিমারীর আবহেই আইটিবিপি ডেপুটি কম্যানড্যান্ট কুলদীপ সিং ও ডেপুটি কম্যানড্যান্ট ধর্মেন্দ্রর নেতৃত্বে ১২ জন জওয়ান এই শৃঙ্গ জয় করেন। এবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্বতারোহীরাও রিও পারজিল জয় করলেন। 

পশ্চিম হিমালয়ের জনস্কর রেঞ্জের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত রিও পারজিল। এই শৃঙ্গ লিও পারজিল বা লিও পারজিয়াল নামেও পরিচিত। এটাই হিমাচল প্রদেশের উচ্চতম শৃঙ্গ। কিন্নৌর অঞ্চলে অবস্থিত এই শৃঙ্গ যেমন দুর্গম, তেমনই প্রাকৃতিক পরিবেশ অসামান্য। সেই কারণেই পর্বতারোহীদের হাতছানি দেয় রিও পারজিল। এই শৃঙ্গ থেকে তিব্বতের পশ্চিম উপত্যকা দেখা যায়। পর্বতারোহীদের পক্ষে এই আকর্ষণ এড়িয়ে যাওয়া কঠিন। সেই কারণেই সব বাধা অতিক্রম করে তাঁরা রিও পারজিলের শৃঙ্গে পৌঁছে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

১৯৭৮ সাল থেকে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন শৃঙ্গ জয় করে আসছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাউন্টেনিয়ারিং অ্যান্ড হাইকিং ক্লাবের সদস্যরা। ফের তাঁরা সাহস, কঠিন পরিস্থিতি নিজেদের আয়ত্তে আনার ক্ষমতা ও মানসিক জোরের পরিচয় দিলেন। হিমালয়ের দুর্গম প্রান্তে সবসময়ই ঝুঁকি থাকে। কিন্তু এই ঝুঁকিই আবার পর্বতারোহীদের আকর্ষণ করে। অ্যাডভেঞ্চারের নেশায় হিমালয়ে ছুটে যান পর্বতারোহীরা। পাহাড়ের আকর্ষণ এরকমই। একবার পাহাড়কে ভালোবেসে ফেললে আর হাতছানি এড়ানো যায় না।

আরও পড়ুন-

মাউন্ট এভারেস্টের 'ডেথ জোন' থেকে মালয়েশিয়ার পর্বতারোহীকে উদ্ধার শেরপার

Piyali Basak Exclusive: দেনা মেটাতে দেখা করতে চান মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে, জানালেন পিয়ালি

বিশ্বের পঞ্চম উচ্চতম শৃঙ্গ মাকালু জয়, নতুন নজির চন্দনগরের পিয়ালি বসাকের