সংক্ষিপ্ত

প্রয়াগরাজ কুম্ভ মেলার পরেও সঙ্গমে দেখা যাচ্ছে বিদেশি পাখিদের ভিড়। বিজ্ঞানীদের মতে, এটা জল ও বাতাসের শুদ্ধতার লক্ষণ। গঙ্গায় ডলফিনের সংখ্যা বৃদ্ধিও জলের গুণাগুণ প্রমাণ করে।

প্রয়াগরাজ, ১৫ মার্চ। প্রয়াগরাজ মহাকুম্ভ শেষ হওয়ার ১৫ দিন পরেও সঙ্গম এবং তার আশেপাশে জলজ জীবন ও বাতাসের গুণগত মান দেখে জীববিজ্ঞানীরাও অবাক। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে সঙ্গম থেকে বিদায় নেওয়া বিদেশি পাখিরা ১৩ মার্চ পর্যন্ত রয়েছে, যা পরিবেশ বিজ্ঞানীদের স্বস্তি দিয়েছে। প্রতি বছর ডিসেম্বরে প্রয়াগরাজের সঙ্গম তীরে আসা বিদেশি পাখিরা ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত থাকে। কিন্তু এই বার এই বিদেশি অতিথিরা ১৩ মার্চ পর্যন্ত সঙ্গম ত্যাগ করেনি। পক্ষী বিজ্ঞানীদের মতে, এটি সঙ্গম জলের শুদ্ধতার প্রতীক।

বিদেশি পাখিরাও সঙ্গমের দূষণমুক্ত জল ও বাতাসের ওপর মোহর লাগিয়েছে। জলজ জীবন ও পাখিদের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে গবেষণা করা জীববিজ্ঞানী অধ্যাপক সন্দীপ মালহোত্র ​​জানান, লারাস রিডিবান্ডাস প্রজাতির এই বিদেশি পাখিরা প্রতি বছর ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে রাশিয়া, সাইবেরিয়া ও পোল্যান্ডের মতো ঠান্ডা দেশ থেকে সঙ্গমের মাটিতে এসে জমা হয়, যারা ফেব্রুয়ারীর শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত এখানে থাকে। সাত সমুদ্র পার থেকে আসা এই বিদেশি পাখিরা খাবার ও প্রজননের জন্য দূষণের ভালো নির্দেশক হিসেবে বিবেচিত হয়। দূষণমুক্ত জলে বেড়ে ওঠা জীবজন্তু খেয়ে বেঁচে থাকা এই পাখিরা দূষণমুক্ত বাতাসেই শ্বাস নিতে পারে। ফেব্রুয়ারীর শেষ সপ্তাহ থেকে ১৫ দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরেও এদের প্রচুর সংখ্যায় উপস্থিতি প্রমাণ করে যে সঙ্গমের জল ও বাতাস ডিসেম্বার থেকে তাদের অনুকূলে রয়েছে। একই কথা উত্তর প্রদেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের রিপোর্টেও উঠে এসেছে।

গঙ্গায় নদীর ডলফিনের ক্রমবর্ধমান সংখ্যাও পক্ষী বিজ্ঞানীদের কথায় সিলমোহর দিয়েছে। গঙ্গা নদীতে ডলফিনের উপস্থিতি এবং তাদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যাকেও গঙ্গা নদীর জলের দূষণের সঙ্গে যুক্ত করে দেখা হয়। ৩ মার্চ, ২০২৫ বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস উপলক্ষ্যে পরিবেশ মন্ত্রকের তরফে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, গঙ্গা নদীতে ৬,৩২৪টি এবং সিন্ধু নদে তিনটি ডলফিন রয়েছে। এর আগে ২০২১ সালের আগে গঙ্গার মূল স্রোতে গড়ে ৩,২৭৫টি ডলফিন ছিল। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ডলফিন পাওয়া গিয়েছিল উত্তর প্রদেশে। ফতেপুর, প্রয়াগরাজ থেকে পাটনা পর্যন্ত গঙ্গা নদীতে গাঙ্গেয় ডলফিনের ক্রমবর্ধমান সংখ্যাও গঙ্গার জলের গুণগত মানের স্পষ্ট ইঙ্গিত। এতে পক্ষী বিজ্ঞানীদের রিপোর্টে সিলমোহর পড়ছে।