সংক্ষিপ্ত
সাইকি ১৬ গ্রহাণুতে যা সম্পদ আছে, তাতে কোটিপতি হয়ে যেতে পারে পৃথিবীর সকলে। ১৮৫২ সালে আবিষ্কৃত গ্রহাণুটিতে অভিযানে যাচ্ছে নাসা।
পৃথিবী থেকে ২০ কোটি মাইল দূরে অবস্থিত গ্রহাণু 'সাইকি ১৬', যাকে বলা হয় গোল্ড মাইন অ্য়াস্ট্রয়েড বা স্বর্ণখনি গ্রহাণু। যারা মহাকাশ চর্চা করেন, তাঁদের সকলের কাছে এই গ্রহাণু এক বিস্ময়। কারণ, এই গ্রহাণুর যেন গুপ্তধনের ভান্ডার। যা পৃথিবীতে আনতে পারলে, এই গ্রহের প্রত্য়েক মানুষ কোটিপতি হয়ে যেতে পারেন। এবার এই রত্নগর্ভা গ্রহাণুকে অধ্যয়নের জন্য অভিযানে নামছে মার্কিন মহাকাশ চর্চা কেন্দ্র নাসা। ২০২৬ সালেই সাইকি ১৬-তে পৌঁছে যাবে নাসার মহাকাশযান।
২১ মাস ধরে নাসার মহাকাশযানটি 'সাইকি ১৬' গ্রহাণুর কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করবে। আকাশ থেকেই মাল্টিস্পেক্ট্রাল ইমেজার, গামা-রে এবং নিউট্রন স্পেকট্রোমিটার, ম্যাগনেটোমিটার এবং মাধ্যাকর্ষণ পরিমাপের জন্য রেডিও যন্ত্র অত্যাদি যন্ত্রাদি ব্যবহার করে সাইকি ১৬-র বৈশিষ্ট্যগুলি অধ্যয়ন করবে তারা। নাসা এই গ্রহাণুর কোনও ধনসম্পদ পৃথিবীতে না আনতে পারলেও, রসিকতা করে বলা হচ্ছে যদি গোটা গ্রহাণুটা সঙ্গে করে ফিরতে পারে তারা, তাহলে পৃথিবীর অর্থনীতি স্থিতিশীলতা হারাবে। কেন এমনটা বলা হচ্ছে? অন্য়ান্য গ্রহাণু থেকে কোথায় আলাদা সাইকি ১৬?
বৃহস্পতি এবং মঙ্গল গ্রহের মধ্যবর্তী গ্রহাণু বেল্টে অবস্থিত সাইকি ১৬। ১২৪ মাইল বিস্তৃত এলাকা নিয়ে গঠিত স্থানটিতে প্রায় ১০,০০০ কোয়াড্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমমূল্যের ধাতু রয়েছে। ১ কোয়াড্রিলিয়ন মানে ১,০০,০০,০০০ কোটি। ফলে আন্দাজ করা যাচ্ছে ঠিক কতটা মূল্যবান সম্পদ লুকিয়ে রয়েছে এটিতে। অন্যান্য গ্রহাণু যেখানে মূলত পাথুর এবং বরফ দিয়ে গঠিত, সেখানে সাইকি ১৬ গ্রহাণুটির বেশিরভাগটাই গঠিত লোহা এবং নিকেল দিয়ে, এমনটাই মনে করেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের অনুমান, সাইকি ১৬ আসলে কোনও প্রোটোপ্ল্যানেট বা সম্ভাব্য গ্রহের কোর বা মূল অংশ। সৌরজগতের গঠনের সময় কোনও অন্য মহাজাগতিক বস্তুর সঙ্গে সঙ্গে সংঘর্ষের সেই গ্রহটি গঠিত হতে পারেনি, এবং তার কোর অংশটি সাইকি ১৬ গ্রহাণু রূপে রয়ে গিয়েছে। নাসার অভিযানে এই ধারণাটির সত্যতা জানা যাবে।
আরও পড়ুন - OBC Reservation Bill - সংসদে পাস হল ঐতিহাসিক বিল, সমর্থন জানাল আরএসএস
নাসার এই অভিযানের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন এক ভারতীয় বিজ্ঞানীও, কল্যাণী সুখতমে। নাসা জানিয়েছে, তিনি এই অভিযানের পেলোড ম্যানেজার। নাসার ওয়েবপেজ অনুসারে, দুইন গণিতের অধ্যাপকের কন্যা তিনি কল্যাণী সুখতমে বড় হয়েছেন মুম্বইয়ে। ১৯৯৩ সালে মুম্বাইয়ের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং ফিজিক্সে ব্যাচেলর অব টেকনোলজি ডিগ্রি লাভ করেছিলেন তিনি। তারপর উচ্চতর শিক্ষার জন্য পাড়ি দিয়েছিলেন আমেরিকায়। বর্তমানে নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরিতে কাজ করেন তিনি।
১৮৫২ সালে প্রথম সাইকি ১৬ গ্রহাণুটি চোখে পড়েছিল মানুষের। আবিষ্কার করেছিলেন ইতালীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী অ্যানিবেল ডি গ্যাসপারিস। গ্রীক দেবী সাইকি-র নামে গ্রহাণুটির নামকরণ করেছিলেন তিনি। এতদিন পর্যন্ত এই গ্রহাণুকে নিয়ে মানুষ শুধু জল্পনা-কল্পনাই করেছে, এবার প্রথমবারের মতো তার কাছাকাছি পৌঁছতে চলেছে মানুষ।