সংক্ষিপ্ত

বিমল গুরুং-এর বিরুদ্ধে ৭০টিরও বেশি মামলা প্রত্যাহার করল রাজ্য সরকার

২০১৭ সালে পাহাড়ে অশান্তির জন্য শতাধিক মামলা ছিল তাঁর বিরুদ্ধে

তবে ইউএপিএ ও হত্যার মামলাগুলি এখনও রয়েছে

ভোটের আগে পাল্টে যাচ্ছে পাহাড়ের রাজনৈতিক সমীকরণ

ভোটের আগে ফের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) কাছে আসতেই গুডবয় হয়ে গেলেন বিমল গুরুং (Bimal Gurung)। শনিবার, পাহাড়ের এক সময়ের একচ্ছত্র নেতার বিরুদ্ধে করা ৭০টিরও বেশি মামলা প্রত্যাহার করার কাজ শুরু করল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) সরকার। জানা গিয়েছে, এদিনই রাজ্য সরকারের আইন দফতর থেকে জেলা পুলিশ-কে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দার্জিলিং, কার্শিয়াং ও কালিম্পং-এর বিভিন্ন ঘটনায় এই মামলাগুলি করা হয়েছিল।

ফৌজদারি আইনের ৩২১ ধারা (CrPC 321) অনুযায়ী, আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে সরকারের তরফে কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে হওয়া মামলা প্রত্যাহার করে নিতে পারে রাজ্য সরকার। সেই ধারা অনুসারেই, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার (GJM) অন্যতম প্রতিষ্ঠাতার বিরুদ্ধে করা প্রায় ৭০টিরও বেশি মামলা প্রত্যাহার করে নিতে চলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার, এমনটাই জানা গিয়েছে। শুধুমাত্র, ইউএপিএ (UAPA) ধারায় হওয়া মামলা এবং খুনের মামলা এখনও থাকছে বিমল গুরুং-এর বিরুদ্ধে।

প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে বাংলায় বাম সরকারের পতনের পর মমতা সরকারের সঙ্গেই ছিলেন বিমল গুরুং এবং তাঁর দল। জিটিএ (GTA) গঠন হয়েছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, পাহাড় হাসছে। কিন্তু, ২০১৭ সালে ফের নতুন গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে অশান্ত হয়ে ওঠে দার্জিলিং, তৈরি হয় মমতা-গুরুং দূরত্ব। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে গজমুমো নেতার বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা করা হয়েছিল। হিংসা সংঘটিত করা, ভাঙচুর, সরকারি সম্পত্তি নষ্টের মতো অভিযোগে মামলা করা হয়েছিল। মমতার সঙ্গ ছেড়ে এনডিএ (NDA) শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন গুরুং। তারপর থেকে গত কয়েক বছরে পাহাড়ে আর দেখা যায়নি তাঁকে। পুলিশের খাতায় ছিলেন পলাতক হিসাবে।

তবে, ২০২০ সালের অক্টোবর মাসেই অবস্থা বদলাতে শুরু করেছিল। এনডিএ-র মোহভঙ্গ হয় বিমল গুরুং-এর। কলকাতায় এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে তিনি আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে ফের ঘাসফুলের হাত ধরেছেন। পাহাড়েও ফিরেছেন তিনি। প্রকাশ্যে সভা সমিতি করছেন, ভোটের প্রচার করছেন। পুলিশ দেখেও দেখছিল না। আর এদিন তাঁকে অধিকাংশ মামলার কবলমুক্ত করা শুরু করল রাজ্য সরকার।

এই বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না, বলে এড়িয়ে গিয়েছেন আরেক গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতা রোশন গিরি ()। তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী গৌতম দেব জানিয়েছেন, এটা একটা আইনি প্রক্রিয়া, তাই সময় সাপেক্ষ। আইন মন্ত্রক এই বিষয়ে কাজ করছে। অন্যদিকে রাজ্য বিজেপির বক্তব্য, গুরুং-কে মামলা মুক্ত করে পাহাড়ে টিকে থাকতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। পাহাড়ের ৩টি আসন জয়ের জন্যই বিমল গুরুং-এর সঙ্গে এই মামলামুক্তির চুক্তি করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সব মিলিয়ে ভোটের আগে পাহাড়ে ফের বদলে যাচ্ছে রাজনৈচিক সমীকরণ।