সংক্ষিপ্ত
- ভোটের আগে ছত্রধরকে তলব এনআইএ-র
- কলকাতার অফিসে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছে
- তদন্তে সাহায্য না করলেই গ্রেফতারের সম্ভাবনা
- ইস্যু- সিপিএম নেতা খুন- জ্ঞানেশ্বরীতে নাশকতা
রাজ্যে প্রথম দফা বিধানসভা ভোটের আগে ছত্রধরকে তলব এনআইএ-র। শনিবার জঙ্গলমহলে ভোট-এদিকে ঠিক তার আগেই ছত্রধর মাহাতোকে খুনের মামলায় কলকাতার অফিসে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছে এনআইএ। তদন্তকারী সূত্রের খবর, তদন্তে সাহায্য না করলেই যে কোনও মুহূর্তে গ্রেফতার করা হতে পারে ছত্রধরকে।
প্রসঙ্গত, প্রায় দশ বছর আগে জঙ্গলমহলে সিপিএম নেতা প্রবীর মাহাতো খুন এবং জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসে নাশকতার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত তৎকালীন জনসাধারণ কমিটিন নেতা ছত্রধর মাহাতো। তদন্তভার এনআইএ-র হাতে যেতেই সম্প্রতি তা আরও শক্তিশালী হয়েছে। এনআইএ ঘটনার তদন্তভার পাওয়ার পর সম্প্রতি তা নিয়ে অতি সক্রিয় হয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকবার ছত্রধরকে ডেকে জেরা করেছেন এনআইএ আধিকারিকরা। এদিকে ইতিমধ্য়েই দশ বছর জেলে কাটিয়ে পর কেন এনআইএ এই কেসের তদন্তে নামল, এতদিন কী ঘুমিয়ে ছিল তাহলে, তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বিজেপির কেন্দ্রীয় সরকারকে কাঠগোড়য় দাঁড় করিয়েছেন ছত্রধর।
আরও পড়ুন, 'বাংলায় আর রবীন্দ্র সঙ্গীত শোনা যায় না-আজ শুধুই বোমার শব্দ'-আক্ষেপ রাজনাথের
সম্প্রতি একটি সাক্ষাতকারে ছত্রধর মাহাতো জানিয়েছিলেন, 'আমার বাড়ি থেকে ২০ কিমি দূরে, বহরমপুরে প্রবীর মাহাতো নামের এক ব্যক্তি খুন হয়েছিলেন। সেই খুনের মামলায় আমাকে ৫ নম্বর আসামী হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এফআইআর ছাড়াই কাউকে গ্রেফতার করে, তার বলা নামের ভিত্তিতে আমাকে গ্রেফতার করা হয়। এই মামলায় যারা সাক্ষী দিচ্ছেন তাঁদের কাউকেই আমি চিনি না। যিনি খুন হয়েছেন তাঁকে এবং তাঁর বাড়িও আমি চিনি না। পশ্চিমবঙ্গের সকলেই আমাকে চেনে, কিন্তু আমি তো সকলে চিনি না। এটা পুরোটাই ওদের সাজানো কেস। এবং সেখানে আমাকে জড়ানো হয়েছে। দশটা বছর আমি বিচারাধীন অবস্থায় আমি জীবন কাটিয়েছি। '
আরও পড়ুন, আসামী ধরে ফেরার পথে দুর্ঘটনার কবলে পুলিশের গাড়ি, ৩ সিভিকের মৃত্যু কালিয়াচকে
তবে যে যুক্তি পেশ করুকটা কেন রাজ্যে প্রথম দফা ভোটের আগে ছত্রধর ইস্যুতে উত্তাপ ছড়াল বাংলার রাজ্য-রাজনীতিতে। উল্লেখ্য, প্রবীর মাহাতো খুনে ৫ মার্চ হাইকোর্টে শুনানি ছিল অভিযুক্ত ছত্রধর মাহাতোর। কিন্তু ছত্রধরকে হেফাজতে চেয়ে এনআইএ যে আবেদন করেছিল তা খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানিতে ছত্রধরের আইনজীবী দেবাশীস রায় আদালতে মামলার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, সিপিএম নেতা প্রবীর মাহাতো খুন হওয়ার পর তাঁদের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালে খুন এবঁ দেশদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়। যার সর্বোচ্চ সাজা আমৃত্যু কারাবাস। ১৩ বছর বাদে ছত্রধর মাহাতো সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে ইউপিএ ধারা যোগ করার যৌক্তিকতা কোথায়, প্রশ্ন তোলেন আইনজীবি দেবাশিস রায়। তবে এদিন বেলা তিনটের মধ্য়ে ছত্রধরকে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছে এনআইএ। হাজিরা না দিলে বা তদন্তে সহযোগিতা না করলে যে কোনও মুহূর্তে গ্রেফতার করা হতে পারে ছত্রধরকে। রাজ্য়ে প্রথম দফা ভোটের আগে ঠিক কী অপেক্ষা করছে, ধোঁয়াশা বাড়ছে জঙ্গলমহলে।