বৃহস্পতিবার ফের রাজ্য়ে রেকর্ড ভাঙা করোনা সংক্রমণতারমধ্যে কি একদফায় করা হবে বাকি তিনদফার নির্বাচনসম্ভাবনা নেই বলেই জানালো নির্বাচন কমিশনএদিকে প্রচারে কাটছাঁট একেবারেই মানবেন না বলে জানিয়েছেন মমতা
বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল), ফের একববার পশ্চিমবঙ্গ সাক্ষী থেকেছে রেকর্ড ভাঙা দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের। এদিন রাজ্যে নতুন করে ৬,৭৬৯ জন করোনা রোগীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। এরপরও, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের বাকি থাকা তিন দফার নির্বাচন একসঙ্গে একদিনে করার এখন পর্যন্ত কোনও পরিকল্পনা নেই বলেই জানিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। পিটিআই সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে।
ভারতে বর্তমানে আছড়ে পড়েছে কোভিড-১৯ মহামারির দ্বিতীয় তরঙ্গ। প্রথমবারের থেকেও ভয়াল হয়ে দেখা দিচ্ছে সে। আর তারমধ্যেই আট দফায় চলছে বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। চার দফা হয়ে গিয়েছে। পঞ্চম দফা হতে চলেছে আগামী শনিবার, ১৭ এপ্রিল। বাকি তিন দফার ভোটগ্রহণের নির্ধারিত তারিখ যথাক্রমে - ২২, ২৭ ও ২৯ এপ্রিল। কিন্তু, করোনা সংকটের মধ্যে এই তিন দফা নির্বাচন একদিনে করে নেওয়ার দাবি তুলছিল বেশ কয়েকটি দল। শুক্রবার আবার সর্বদল বৈঠকও ডেকেছে কমিশন। সব মিলিয়ে শোনা যাচ্ছিল হয়তো বৈঠকে এই প্রস্তাব দিতে পারে কমিশন।
কমিশনের এক কর্মকর্তা অবশ্য জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচনের বাকি পর্যায়গুলি একত্রে করার কোনও পরিকল্পনা তাদের নেই। কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে, মূল সমস্যাটা নিরাপত্তা জনিত। নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই আট দফায় ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, তিন দফার ভোটগ্রহণ একসঙ্গে করতে গেলে অন্তত দেড় হাজার কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজন। হাতে যে সময় আছে, তার মধ্য়ে এই বিপুল আয়োজন সম্ভব নয়। এই মুহূর্তে রাজ্যে মোট ১ হাজার কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পঞ্চম দফার ভোটের জন্য নির্ধারিত করা হয়েছে ৮৫৩ কোম্পানি বাহিনীকে। এইভাবে ষষ্ঠ দফার জন্য ৯৫৪, সপ্তম দফার জন্য ৭৯১ ও শেষ দফায় ৭৪৬ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার পরিকল্পনা রয়েছে কমিশনের।
রাজনৈতিক দলগুলির পক্ষ থেকেও কোভিড পরিস্থিতি মাথায় রেখে প্রচার কৌশলে বদল আনতে দেখা গিয়েছে। বামেরা তথা সংযুক্ত মোর্চা জানিয়েছে তারা আর কোনও বড় জনসভা, বড় কোনও কর্মসূচি করবে না। বিজেপিও বেশি করে পথসভা, পাড়ায় পাড়ায় সভার দিকে ঝুঁকছে। তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য প্রচারে কোনও খামতি দিতে নারাজ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ জানিয়েছেন, আগামী দফাগুলিতে তাঁদের জেতার সম্ভাবনা বেশি। তাই প্রচারে কোনও রকম কমতি তিনি মেনে নেবেন না। অবশ্য একলপ্তে ভোটগ্রহণ হয়ে যাক, চাইছেন তিনি। তিনি জানিয়েছেন, প্রথম দিন থেকেই একদফায় ভোট করার পক্ষপাতি ছিল তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু, কমিশন তা চাইছে না।
তাহলে কী আলোচনা হবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাবের ডাকা শুক্রবারের বৈঠকে? জানা গিয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলিকে কমিশনের জারি করা কোভিড-১৯ নির্দেশিকা কঠোরভাবে মেনে চলার বিষয়ে সতর্ক করা হবে। বৈঠকে নির্বাচনের বাকি পর্যায়ে কীভাবে প্রচার চলবে সেই সম্পর্কিত বিষয়েও আলোচনা হবে। সামাজিক দূরত্বের মানদণ্ড এবং কোভিড -১৯ প্রোটোকল নিয়ে আলোচনা হবে।
