সংক্ষিপ্ত

শান্তিপুর এলাকার বেলগড়িয়া গ্রামের দুই নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের নরসিংহনগর এলাকার বাসিন্দা পাপিয়া পাল। ১০ নম্বরের পরীক্ষার উত্তর দিয়ে গিয়ে অন্যের খাতা থেকে নকল। শিক্ষিকার দেওয়া শাস্তিতে অপমান বোধ। বাড়ি ফিরে অ্যাসিড খেয়ে আত্মঘাতী। 
 


একজন স্কুল পড়ুয়ার জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে মাধ্যমিক পরীক্ষাকে (10th Class Exam)। এই পরীক্ষার হাত ধরেই জীবনের উন্নতি পথে এগিয়ে যায় ছাত্র-ছাত্রীরা। কিন্তু শান্তিপুরের পাপিয়া পালের জীবনটা হঠাৎ করেই থমকে গেল সেই দশম শ্রেনীর মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষর আগেই। বছর ১৫-র স্কুল ছাত্রী পাপিয়া পালের(Papia paul) সঙ্গে ঠিক এমন ঘটেছে যার জেরে শান্তিপুরের বেলগড়িয়া দুই নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের নরসিংহনগর এলাকার এই শিক্ষার্থীর জীবনের আলো ফোটার আগেই তা অন্ধাকারে তলিয়ে গেল। প্রসঙ্গত, সঞ্জিত পালের মেয়ে পাপিয়া পালের বয়স মাত্র ১৫ বছর হলেও তার আত্নসম্মানবোধটা অনেক বেশী। শুক্রবার দশম শ্রেনীর পরীক্ষা চলাকালীন পাপিয়ার বিরুদ্ধে নকল করার অভিযোগ তোলা হয়। আর তার শাস্তিস্বরূপ সকলের সামনে ওঠবস করানো হয় এই টেস্ট পরীক্ষার্থীকে(Test Exam)। এই অপমান মানতে না পেরেই বাড়ি ফিরে বাথরুম পরিষ্কার করার অ্যাসিড খেয়ে আত্মঘাতী(Committed Suicide) হয় ১৫ বছরের পাপিয়া পাল। মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনাটাকে ঘিরে  চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শান্তিপুরের নদীয়া এলাকায়। তবে এই বিষয়ে মুখে কুলুপ এটে রয়েছে   শরৎকুমারী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সংবাদমাধ্যম এই বিষয় প্রশ্ন করলে কোনও রকম মন্তব্য করেনি স্কুল কতৃপক্ষ। 

শান্তিপুর এলাকার বেলগড়িয়া গ্রামের দুই নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের নরসিংহনগর এলাকায় থাকত পাপিয়া পাল। সঞ্জিত পালের মেয়ে পাপিয়া পালের বয়ম ১৫ বছর। দশম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল পাপিয়া। তার পরিবার সুত্রে জানা গিয়েছে, টেস্ট পরীক্ষা চলাকালীন কোনওভাবে নকল বা টুলি করতে গিয়ে ধরা পড়ে যায়। তারপর তাকে শাস্তি দিলে সেই অপমান সহ্য না করতে পেরে বাড়ি এসে আত্মঘাতী হয়। পাপিয়ার দিদি অনিমা পাল বলেন, শুক্রবার টেস্ট পরীক্ষা দিতেই তাঁর বোন স্কুলে গিয়েছিল। সব প্রশ্নের উত্তরও লেখা হয়ে গিয়েছিল। তবে ১০ নম্বরের একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে একটু সমস্যায় পড়েছিল। সেই সময় হয়তো বান্ধবীর খাতা দেখে লিখতে গিয়েই ঘটে যায় বিপত্তি। শিক্ষিকা তাকে অপমানজনক কথা বলে ও শাস্তি দেয়। সেই দেখে সমস্থ সহপাঠীরাও হাসাহাসি করে। এই গোটা বিষয়টিতে খুবই অপমান বোধ করে তার বোন পাপিয়া। তাই সে অ্যাসিড খেয়ে আত্মহত্যার করার পথ বেছে নিয়েছে। পাপিয়াকে বাঁচাতে  যখন হাসপাতালের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তখনই পুরো বিষয়টা তার দিদিকে সে জানায় বলে দাবি করেছে অনিমা পাল। 

আরও পড়ুন-Kalna: প্রেমিকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি দেখালেন নিজের স্বামীকেই, লজ্জায় আত্মঘাতী যুবক

আরও পড়ুন-Suicide case: দেওয়া হল না মাধ্যমিক, মোবাইল না দেওয়ায় আত্মঘাতী দশম শ্রেণীর ছাত্রী

আরও পড়ুন-Suicide : ডেঙ্গু ধরা পড়তেই রাজ্যের হাসপাতালে আত্মঘাতী রোগী, মানতে নারাজ পরিবার, তদন্তে পুলিশ

পাপিয়াকে গুরুতর অবস্থায় প্রথমে শান্তিপুর থেকে কল্যাণীতে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে অবস্থার কোনও পরিবর্তন না হওয়ায় কলকাতায় নিয়ে আসা হয় পাপিয়াকে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। কলকাতা আসার পথেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে দশম শ্রেনীর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সঞ্জিত পালের মেয়ে পাপিয়া পাল। তারপরই গোটা এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া।